জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গৃহবধূ সাবিত্রী রায় খুনের ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করল স্বামী বচন টুডুকে।

0
219

মালদা, নিজস্ব সংবাদদাতা , ২৪ সেপ্টেম্বর : জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গৃহবধূ সাবিত্রী রায় খুনের ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করল স্বামী বচন টুডুকে। যদিও ঘটনার দিনই তাকে আটক করেছিল। শনিবার বচন টুডুকে পুলিশ পেশ করে জেলা আদালতে। আদালত বচন টুডুর জামিনের আবেদন খারিজ করে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় শনিবার।
প্রসঙ্গত ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল বচনের স্ত্রীকে। শুক্রবার ভোরে পুলিশ মৃত গৃহবধূর ধর ও মুন্ডু উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেদিনই হবিবপুর পুলিশ আটক করেছিল সাবিত্রীদেবীর স্বামী বচন টুডুকে। প্রথম থেকেই খুনের ঘটনায় সন্দেহ ছিল মৃত গৃহবধূর স্বামীর দিকেই। খুনের ঘটনাটি ঘটেছিল হবিবপুরের মঙ্গলপুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিরইল গ্রামে।
অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্তে শুরু করে হবিবপুর থানার পুলিশ। থানাতেই জিজ্ঞাসাবাদ চলে আটক বচন টুডুকে। জেরার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয় হবিবপুর থানার পক্ষ থেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিরইল গ্রামের বসবাস করতেন সাবিত্রী রায়। অনেক বছর আগেই তাঁর বাবা ও মা মারা গিয়েছেন। দাদা বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি এলাকাতেই থাকেন। বিয়ের পর দুই বোন শ্বশুরবাড়ি থাকেন । সংসার চালাতে হিমশিম অবস্থা ছিল সাবিত্রীদেবীর। বছর দুয়েক আগে তাই তিনি উপার্জনের জন্য চলে যান ভিনরাজ্যে। সেখানে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে আলাপ পরিচয় হয় অন্য এক শ্রমিক বচন টুডুর সঙ্গে। বচন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার করদহ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। কাজের সূত্রে সাবিত্রী রায়ের সঙ্গে প্রথমে আলাপ, পরে আলাপ থেকে বচন টুডু বিয়ে করেন সাবিত্রীদেবীকে। এরপর দুজনে ভিনরাজ্য থেকে ফিরে বচনের নিজের বাড়িতেই সংসার শুরু করেন দুজন। মাস দুয়েক দুয়েক আগে সাবিত্রীদেবী স্বামী বচনের আচরণে অসংলগ্ন আচরণ দেখতে পান। এরপরই সাবিত্রীদেবী নিজের বাবার বাড়ির গ্রাম নিরইল চলে আসেন। দিন দশেক আগে হঠাৎই বচন টুডু স্ত্রী সাবিত্রীদেবীর বাড়িতে চলে আসেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গিয়েছে, হঠাৎই শুক্রবার ভোররাতে স্বামী বচন টুডুর চিৎকার শুনে এলাকার মানুষজন ছুটে আসেন। দেখতে পান স্ত্রী সাবিত্রীদেবীর রক্তাক্ত ধর ও মুন্ডু আলাদা ভাবে পড়ে রয়েছে। সেখানেই চিৎকার করছিল স্বামী বচন টুডু। এরপরই এলাকার মানুষজন বচন টুডুকে আটকে রাখেন। খবর দেন হবিবপুর থানায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় হবিবপুর থানার পুলিশ।খুনের ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ স্বামী বচন টুডুকে আটক করে নিয়ে যায়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ বচন টুডুকে গ্রেফতার করে এদিন আদালতে তোলে। সাবিত্রীদেবীর পরিজনরা চান খুনের যেন বচনের আইনানুগ কঠিন শাস্তি হয়।