কালের নিয়মে সাবেকিয়ানা অনকেটা ফিকে হলেও ওপার বাংলায় পূর্বপুরুষদের দুর্গা পুজোর নিয়ম নিষ্ঠায় এতটুকু ভাঁটা পড়েনি এপার বাংলাতেও।

0
509

নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ারঃ শরতের নীল আকাশ যেন মিলেছে সবুজ ধান খেতের দিগন্তে।দু’পাশের কচি ধানের খেত পেরিয়ে ওই দেখা যায় জমিদার বাড়ি।কালের নিয়মে সাবেকিয়ানা অনকেটা ফিকে হলেও ওপার বাংলায় পূর্বপুরুষদের দুর্গা পুজোর নিয়ম নিষ্ঠায় এতটুকু ভাঁটা পড়েনি এপার বাংলাতেও।দেশভাগের কারনে প্রায় আশি বছর আগে ছিন্নমূল হতে হয়েছিল ওই সিকদার পরিবারকে।তার পর থেকেই স্থায়ী ঠিকানা আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা থানার নবনগর। প্রায় দু’শো বছরের পুরোনো রীতি মেনেই এখনও দুর্গা পুজো হয় ও সিকদার বাড়ির ঠাকুর দালানে।পুজোর কয়েকটি দিন সিকদার বাড়ির সদস্যদের সঙ্গে মিশে যান প্রতিবেশীরাও। ওই পুজোয় কোন জাঁকজমক আলো-আঁধারি খেলা না থাকলেও এলাকার এতো মানুষ ভিড় জমান যে,সিকদার বাড়ির ওই পুজো যেনো সর্বজনীতা লাভ করে আপন খেয়ালে।পরিবারের সদস্য দের কাছের থেকে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে সিকদার বাড়িতে প্ৰথম ওই পুজো শুরু হয়েছিল সেই কবে । তার পর থেকে প্রাচীন রীতি মেনে পুজোর রেওয়াজ ধরে রেখেছেন রঞ্জিত, অজিত, দিলীপ, ভবেশ সিকদাররা।এখনও পুজো করে আসছেন শিকদার পরিবারের সদস্যরা। প্ৰথম দিকে ওই পারিবারিক পুজোয় মহিষ বলি দেওয়া হ’ত।কিন্তু পরবর্তীতে উত্তরসূরিরা পুজোয় বলি পছন্দ না করায় বন্ধ হয়ে যায় সেই রীতি। পরিবারের রঞ্জিত সিকদার জানান, “পুরোনো নিয়ম ও নিষ্ঠা সহকারে পুজো করা হয় । আমাদের বাড়ির প্রতিমা প্রায় ৪/৫ কিলোমিটার দূর থেকে কাঁধে করে নিয়ে আসা হয় ,কাঁধে করেই দশমীতে বিসর্জনও দেওয়া হয় ।এলাকার প্রায় এক দেড়শো লোক জন ওই প্রতিমা আনার দিন সামিল হন। রীতি মেনে অষ্টমীর গভীর রাতে রক্ষা কালীর পুজো করা হয়।” ওই পুজো যে বহু প্রাচীন তার নিদর্শন হিসাবে পুরোনো পিতলের ঢাল ও তরোয়াল পুজো মন্ডপে নিয়ম করে শোভিত হয় ইতিহাসকে সাক্ষী রাখতে।