নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- রেশন নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগ।পুজোর আগে রেশনের দ্রব্য কম এবং সঠিক সময়ে দেওয়া হচ্ছে না।বিপাকে শতাধিক এলাকাবাসী।রেশনের দাবিতে বিক্ষোভ ব্লক চত্বরে।শাসকদলের মদতে হচ্ছে রেশন দুর্নীতি আক্রমণ বিরোধীদের।বিরোধীদের চক্রান্ত পাল্টা তৃণমূল।যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে এর পেছনে পাল্টা রাজনীতিকেই দায়ী করেছেন রেশন ডিলার। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দারা রেশন পাচ্ছে না সঠিক ভাবে। অভিযোগ তাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে স্লিপ দিয়ে দিলেও রেশন সামগ্রী দেয়নি ডিলার। রেশন দেওয়া হলেও পরিমাণে কম দেওয়া হচ্ছে।এমনকি অভিযোগ রাতের অন্ধকারে সেই রেশন সামগ্রী বিক্রি করে দিচ্ছে ডিলার।সঠিক ভাবে রেশন সামগ্রী না পাওয়াই পূজোর মুখে সমস্যায় শতাধিক এলাকাবাসী।দুই বেলা কি ভাবে জুটবে তাদের খাওয়ার এই নিয়েই চিন্তায় পড়ে গেছে অনেকে।বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিষ্ণুপুর গ্রামের ডিলার শ্যামানন্দ সিংহের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদেই বৃহস্পতিবার প্রায় কয়েকশো এলাকাবাসী হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।এই মর্মে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের আধিকারিকের কাছে গণস্বাক্ষর নিয়ে মাস্ট পিটিশন দেয় এলাকাবাসী।খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর কৌশেন্দু দাস কে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসী। বিষ্ণুপুরের গ্রামবাসীর সঙ্গে এই বিক্ষোভে সামিল ছিল এলাকার বাম নেতৃত্ব। তারা এই রেশন দুর্নীতির জন্য শাসকদলের দিকেই আঙুল তুলেছে।
বিক্ষোভকারী গ্রামবাসী মংলু শর্মা বলেন, সঠিক ভাবে রেশনের সামগ্রী পাচ্ছিনা। ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে স্লিপ দিয়ে দিলেও রেশন দিচ্ছে না। তাই জন্য ব্লকে এসেছি। রেশন না পেলে আমরা কী খাব? অনেকদিন ধরেই এই সমস্যা হচ্ছে।
বিক্ষোভকারী গ্রামবাসী সিতাংশু দাস বলেন, প্রায় দুই মাস ধরে আমরা রেশনের সামগ্রী পায়নি। বলতে গেলে উল্টো আমাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে গালিগালাজ করা হচ্ছে। আমাদেরকে ঠিক ভাবে রেশন না দিয়ে রেশন এর সেই সামগ্রী রাতের অন্ধকারে বিক্রি করে দিচ্ছে ডিলার।
বিক্ষোভকারী গ্রামবাসী কৌশল্যা ঠোকদার বলেন, সরকার আমাদের যতটা দিচ্ছে আমরা ততটা পাচ্ছিনা রেশন। ৩ তারিখ স্লিপ দিয়ে দিয়েছে এখনো পর্যন্ত রেশন দেয়নি। সামনে আমাদের পুজো। বারবার বললেও আমাদেরকে ঠিক করে দিচ্ছে না। উল্টো বলছে তাদেরকে নাকি কিনে দিতে হচ্ছে। আমরা যাতে ন্যায্য রেশন পাই তাই আজ বিক্ষোভ দেখাচ্ছি।
রেশন ডিলার শ্যামানন্দ সিনহার ভাই রাজকুমার সিনহা বলেন, প্রত্যেক কে পরিমান মতো রেশন সামগ্রী দেওয়া হয়। এই ধরনের অভিযোগ ঠিক না। দুয়ারে রেশন প্রকল্প অনুযায়ী আমরা পাড়ায় পাড়ায় পৌঁছে দি। ভোট আসছে তাই রাজনৈতিক নেতারা নিজের স্বার্থে আমাদের হেনস্থা করছে।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক সিপিআইএমের ক্ষেত মজদুর ইউনিয়নের সভাপতি মিরাজুল ফিরদৌস বলেন, আমরা কিছুদিন আগে বিষ্ণুপুর বুথে গিয়ে দেখতে পাই সেখানে এলাকাবাসী রেশন পাচ্ছে না ঠিক ভাবে। বহুদিন আগে স্লিপ দিয়ে দিয়েছে কিন্তু রেশন সামগ্রী দিচ্ছে না। শাসকদলের নেতাদের মদতে এসব হচ্ছে। না তো একজন ডিলারের এত সাহস হবে না।
পাল্টা হরিশ্চন্দ্রপুর ১ (বি) ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মানিক দাস বলেন, এগুলো সিপিআইএমের ষড়যন্ত্র ভোট আসছে তাই আমাদের কালীমালিপ্ত করার জন্য চক্রান্ত করছে। যে অভিযোগ উঠেছে তা আমরা খতিয়ে দেখব।
প্রসঙ্গত উৎসবের মরশুম উপলক্ষে গতকালই তিন মাস রেশন সামগ্রী বিনামূল্যে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প কে অবৈধ ঘোষণা করেছে কোলকাতা হাইকোর্ট। তার মাঝেই রাজ্যের একটি গ্রামে রেশন না পেয়ে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের।
Leave a Reply