নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা :- শান্তিপুর বাইপাসংলগ্ন এলাকায় একটি বার হতে চলেছে ডান্স বার। অর্থাৎ মোদ্দা কথায় কথায় মহিলাদের নৃত্যর সাথে মদ্যপানের ব্যবস্থা। এমনই এক গুঞ্জন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে ঝড়, বাবলা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তিন শতাধিক মানুষের প্রতিবাদ লিপি জমা পড়েছে বিধায়কের কাছে। বিধায়ক তাতে সিলমোহর লাগিয়ে পাঠিয়েছেন জেলা প্রশাসনের কাছে। যদিও এ বিষয়ে ওই বেসরকারি হোটেলের মালিক ভিডিও আকারে বক্তব্য দিতে রাজি না হলেও জানিয়েছেন সেখানে কোন ডান্স বার হচ্ছে না। তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গেছে, পুজোর আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে, আর এখন শুধুমাত্র জেলা প্রশাসনের সীলমোহরের প্রতীক্ষায়।
ধর্ম, শিল্প ও সংস্কৃতির তীর্থস্থান নদীয়ার শান্তিপুর বহু প্রাচীন শহর। এখানকার পৌরসভা রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয়। অদ্বৈত আচার্য্য, কবি করুণা নিধান বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃত্তিবাস , কবি যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, পন্ডিত লক্ষীকান্ত মৈত্রের নানা কর্মকাণ্ড সমৃদ্ধ এই শহরের তাঁত শাড়ি , ভাঙা রাস জগৎবিখ্যাত।শতাব্দী প্রাচীন বিভিন্ন মন্দির মসজিদ আজও কৃষ্টি সংস্কৃতি বহন করে চলেছে।
সেই ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থানে ডান্স বার মেনে নিতে পারছেন না সুশীল সমাজ। যদিও কেউ কেউ মনে করছেন, বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় মদ্যপান এবং বিকৃত অঙ্গ সঞ্চালনার নৃত্যর বিষয়ে প্রতিবাদ না হয়ে শহরের এক প্রান্তে বদ্ধ ঘরে এ ধরনের আয়োজনে আপত্তি কেনো । আবার কেউ কেউ বলছেন গেলো গেলো রব না তুলে, কলকাতা থেকে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসার পথে রাস্তার দুপাশে এ ধরনের অজস্র হোটেলে ইতিমধ্যেই যুব সমাজের আনগনা শুরু হয়েছে শান্তিপুর থেকে, পাড়ায় পাড়ায় ঢালাও মদের দোকান , সেক্ষেত্রে নতুন করে আর সামাজিক অবক্ষয়ের প্রশ্ন ওঠেনা।
সচেতন সুশীল নাগরিকদের মতে, ডান্স করে বিভিন্ন রকম অসামাজিক কাজকর্ম হয়ে থাকে যা বছরে দু চার দিন আনন্দ উৎসবে শামিল হওয়া সামান্য একটি অংশের মদ্যপানের তুলনায় অনেক কম।
আর এই নিয়ে, বিজেপি সিপিএম কংগ্রেস কটাক্ষ করতে ছাড়েনি, রাজ্য সরকারের ঢালাও মদের দোকান এবং ধরনের ডান্স বারের অনুমতি দিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্ধেক সরকারি কোষাগার সমৃদ্ধ করার বিষয়ে। তবে তারাও একই যোগে ডান্স বার বন্ধের পক্ষে গলা মিলিয়েছেন সাধারণ মানুষের সাথে।
, আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার বাবলা অঞ্চলের প্রধান উন্নতি সর্দার জানান, বিধায়কের কাছে এবং বাবলা পঞ্চায়েতে ইতিমধ্যেই এলাকাগতভাবে ৩ শতাধিক মানুষের আবেদন জমা পড়েছে ডান্স বারের বিরুদ্ধে। আর সেই এলাকাবাসীর সদইচ্ছা কে মানতা দিয়ে বাবলা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একটি অনুরোধপত্র পাঠানো হবে জেলা প্রশাসনকে।
অন্যদিকে বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী জানান, ওই অঞ্চলের মানুষের দাবি যাতে যথাযোগ্য সম্মানের সাথে গুরুত্ব দেওয়া হয় সে বিষয়ে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রশাসনের কাছে তিনিও পাঠিয়েছেন।
সাধারণ মানুষের গন স্বাক্ষরে আদৌ কি পরিবর্তিত হবে সিদ্ধান্ত এই প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়। শান্তিপুরের ঐতিহ্য আগলে রাখা সুশীল সমাজ এখন সেই দিকেই তাকিয়ে ।
Home রাজ্য দক্ষিণ বাংলা নদীয়ার শান্তিপুরে ডান্স বার আটকাতে স্থানীয় বাসিন্দারা আবেদনপত্র জমা দিলো বিধায়কের কাছে।