নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- রাস্তা ভেঙে উল্টে গেল ট্রাক্টর। আগুন ধরে গেল ট্রাক্টরে। এলাকাবাসী এবং দমকলের তৎপরতায় নিয়ন্ত্রণে আগুন। রাস্তা নির্মাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। রাস্তা পুনঃনির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। দুর্নীতি নিয়ে শাসকদলকে কটাক্ষ কংগ্রেসের। পাল্টা তোপ তৃণমূলের। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মহেন্দ্রপুর ঈদগাহের পাশে শুক্রবার রাস্তা ভেঙে একটি ট্রাক্টর উল্টে যায়। ট্রাক্টরটি উল্টে পড়ে যায় রাস্তার পাশে খালে। স্থানীয় সূত্রের খবর সেই সময় আগুন ধরে যায় ট্রাক্টরে। দমকল এসে আগুন নেভায়। দুই বছর আগে এই রাস্তাটি ঈদগাহ থেকে মহেন্দ্রপুর ক্লাব পযন্ত প্রায় ৭০০ মিটার ঢালাই করা হয়েছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ সেই সময় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি হয়েছিল রাস্তা নির্মাণ। লাল বালির জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছিল সাদা বালি। এমনকি রাস্তার মাঝে মাত্র এক ইঞ্চির ঢালাই করা হয়েছিল। দুই বছরের মাথায় ২-৩ বার ভেঙে যায় রাস্তা। পরবর্তীতে রিপেয়ারিং করার ব্যবস্থা করা হয়। সেটাও আবার নিম্ন মানের সামগ্রিক ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। ফলে বিভিন্ন জায়গায় ধসে গেছে রাস্তা। ফলে উল্টে যায় ট্রাক্টরটি। এলাকাবাসীর আশঙ্কা দ্রুত রাস্তা পুনর্নির্মাণ না করলে আরো বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারে। কারণ এটি ব্যস্ততম রাস্তা। রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে অ্যাম্বুলেন্স এবং প্রশাসনিক কর্তাদের গাড়ি। তৃণমূলের দখলে রয়েছে এই মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। রাস্তা নির্মাণে দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলের দিকেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাদের দাবি কাটমানি খেয়ে তৈরি হয়েছিল এই রাস্তা। তাই এই দুরাবস্থা।
তৃণমূলের পাল্টা দাবি রাস্তা নির্মাণ হয়েছিল কংগ্রেস এবং সিপিআইএমের আমলে। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতর।
স্থানীয় বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, রাস্তার কাজ ভালো করে হয়নি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরী হয়েছিল। অনেক জায়গাতেই ভেঙে গেছে। রাস্তা নতুন করে তৈরী করা হোক।
স্থানীয় বাসিন্দা মংলু বলেন, রাস্তা পাইলিং করে তৈরি হয়েছিল না। সামনে দিয়ে একটি টোটো আসছিল ট্রাক্টর পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে করতে গিয়ে রাস্তা ধসে যায়। আগুন লেগে গেছিল আমি গিয়ে গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করি। না তো ইঞ্জিন বাস্ট হয়ে যেত। রাস্তা আবার নতুন করে তৈরি করা হোক।
কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি আবদুস শোভান বলেন,এরকম হওয়াটাই স্বাভাবিক। সব জায়গাতে তো শুধু কাটমানি আর দুর্নীতি। মানুষ এদেরকে জবাব দেবে। বড় বড় নেতারা জেলে যাচ্ছে এরপর ছোটরাও যাবে।
হরিশ্চন্দ্রপুর তৃনমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন,কংগ্রেস সিপিএম আমলে এই রাস্তা তৈরি হয়েছিল। কোন জিনিস দীর্ঘদিন আগে তৈরি হলে সেটা খারাপ হতে পারে। বিরোধীদের অভিযোগ মিথ্যা। রাস্তায় যা সমস্যা হয়েছে সেটা ঠিক করা হবে।
প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার সিংহভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত এই মুহূর্তে শাসকদলের দখলে। তবে এই প্রথম নয় এর আগেও বিভিন্ন পঞ্চায়েতের কাজ নিয়ে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। বিরোধীরা বার বার দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ করেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর কয়েক মাস পরেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে এই ধরনের ঘটনা নিয়ে আবার শুরু হয়েছে তরজা।