ডাকাতদের হওয়া পুজো এখনো হয়ে আসছে, বর্তমানে এখন ‘মানিকোড়া কালী’ নামে পরিচিত।

0
335

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা:- ডাকাতদের হওয়া পুজো এখনো হয়ে আসছে, বর্তমানে এখন ‘মানিকোড়া কালী’ নামে পরিচিত। মালদা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটা দুরে ভারত বাংলাদেশ সিমান্ত লাগোয়া মানিকোড়া গ্রামে এই দেবীর পূজা হয়ে আসছে প্রায় তিনশো বছরের বেশি,এই এলাকার মানুষের মুখে শোনা যায় এক সময় ডাকাতদের হাতে পূজিতা হতো মা মানিকোড়া কালীর

স্থানীয় লোকমুখে শোনা যায়, প্রায় ৩০০ বছর আগে পুনর্ভবা নদী পেরিয়ে রাতের অন্ধকারে এক ডাকাত দল মানিকোড়ায় জঙ্গলে এসে এই দেবীর পুজো দিতে আসতেন।রাতের অন্ধকারে পূর্নভবা নদী পেরিয়ে এসে সূর্য ওঠার আগেই পুজো দিয়ে আবার নিজেদের ডেরায় ফিরে যেতেন ডাকাতরা।ব্রিটিশ আমলে স্থানীয় এক জমিদার ভৈরবেন্দ্র নারায়ণ রায় জঙ্গলে ঘেরা এই পরিত্যক্ত পুজোর বেদি খুঁজে পান।ডাকাতদে দমনের পরে এর পর থেকে বংশপরম্পরায় সেই জমিদারদের উদ্যোগেই এই পুজো হত। জমিদারি প্রথা চলে যাওয়ার পরে এই পুজা গ্রামবাসীদের এই দেবীর পুজো চালিয়েছেন।

গ্রামবাসীদের মুখে শোনা যায় এক সময় গ্রামে শাখা বিক্রি করতে এসেছিলেন শাঁখারি। মন্দিরে পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে এক বালিকা তার কাছে শাঁখা পরতে চায়। শাঁখারি তার হাতে শাঁখা পরিয়ে দেন। কিন্তু দাম চাইতেই ওই বালিকা বলে, তার কাছে পয়সা নেই, শাঁখার দাম তার বাবা দেবেন। সেই বালিকা বলে, তার বাবা কালী মন্দিরের সেবায়েত। শাঁখারি কালী মন্দিরে গিয়ে সেবায়েত-এর কাছে শাঁখার দাম চাইতেই অবাক হয়ে যান ওই সেবায়েত। তিনি বলেন, তাঁর কোন মেয়ে নেই। কে শাখা পরেছে? হঠাৎ তাঁর নজর যায় পাশের পুকুরের দিকে। দেখতে পান জলের উপরে একটি মেয়ে দুই হাত দেখতে পান।মুহূর্তে সেবায়েত বুঝে যান, ওই মেয়ে আর কেউ নন, স্বয়ং মা কালী। মুহুর্তের মধ্যেই শাখার দাম মিটিয়ে দেন তিনি।প্রথম পাঁঠা বলির সময় মায়ের মূর্তি সামনের দিকে ঝুঁকে আসতো । মূর্তি যাতে পড়ে না যায়, আগে সেই জন্য আগে মা কালীকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার প্রচলন ছিল। এখন চক্ষু দান ও পাঁঠা বলির সময় দেবীর মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।
এই দেবী শব্দ শুনতে পছন্দ করতেন না তাই এলাকায় কোন ঢেঁকি পার দেওয়া হতো না এমনি অনেক কাহিনি জরিয়ে রয়েছে মা মানিকোড়া কালী পুজো নিয়ে। এই পুজো ঘিরে সাত দিন ধরে মেলা বসে পাঁঠাবলির রেওয়াজ রয়েছে প্রায় ২০০০ হাজার পাঁঠাবলি দেওয়া হয়।মালদা জেলা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে এই মায়ের দর্শন করতে আছেন ভক্তরা এই মায়ের কাছে যে যা চায় তা মনোকামনা পূর্ণ হয় বলে জানা গেছে।