জেলায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জনসভার দিনেই কংগ্রেসে ভাঙ্গন।

0
194

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা;০৬নভেম্বর: জেলায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জনসভার দিনেই কংগ্রেসে ভাঙ্গন।এবার পাল্টা যোগদান কর্মসূচি তৃণমূলের। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিল প্রায় আট শতাধিক কংগ্রেস কর্মী। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই যোগদান। যোগদান কর্মসূচি থেকে বিরোধীদের এক হাত নিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। উন্নয়ন দেখে যোগদান বলে জানালো যোগদানকারীরা। শনিবার সন্ধ্যায় হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের দৌলত নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আমদোল ঘাট সহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বুথ থেকে প্রায় ৮০০ কংগ্রেস কর্মী যোগ দেয় তৃণমূলে। পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মোঃ সামাউনের নেতৃত্বে হয় এই যোগদান।যোগদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন, জেলা পরিষদের শিশু নারী ও ত্রাণ কর্মাধক্ষ্যা মর্জিনা খাতুন, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তবারক হোসেন চৌধুরী, প্রাক্তন সভাপতি হযরত আলী সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।এদিকে শনিবার মালদা জেলা সফরে এসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ঠিক যে সময় রতুয়া বিধানসভার শ্রীপুরে সভা করছিলেন তিনি। সেই সময় হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভায় কংগ্রেসে বড়সড় ভাঙন। স্বাভাবিক ভাবে অস্বস্তিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই যোগদান কর্মসূচি থেকে কংগ্রেসকে খোঁচা দেন প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। পাল্টা কটাক্ষ কংগ্রেসের।এনআরজিএস এর টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে কেন্দ্র সরকারকেও তীব্র আক্রমণ করেন তাজমুল হোসেন। তিনি অভিযোগ করেন রাজ্যের উন্নয়ন বন্ধ করে দিতে কেন্দ্র চক্রান্ত করে টাকা আটকে দিয়েছে। যোগদানকারীরা জানান তৃণমূলের উন্নয়ন দেখে তারা তৃণমূলে এসেছে। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ছাড়া কেউ থাকবে না। প্রসঙ্গত কিছু দিন আগেই হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচ শতাধিক তৃণমূল কর্মী কংগ্রেসে যোগদান করে। সেই কর্মসূচি থেকে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেছিল কংগ্রেস নেতৃত্ব। শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির জেলা সফরের দিনে পাল্টা যোগদান কর্মসূচি করে যেন সেই জবাব ফিরিয়ে দিল তৃণমূল। সাথে কংগ্রেসের যোগদানকে গুরুত্বহীন বলে কটাক্ষ। যে বুথগুলি থেকে যোগদান হলো সেই বুথগুলিতে কংগ্রেস সাফ হয়ে গেল বলে দাবি রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর তাজমুলের। অন্যদিকে তৃণমূলকে পাল্টা যোগদান দেখাতে হবে তাই দেখালো। যারা যোগ দিয়েছে তারা কোন দিন কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলো না। বরং এটা প্রমাণিত তৃণমূলে লোক নেই তাই কংগ্রেস থেকে নিতে হচ্ছে খোঁচা দিয়ে পাল্টা জবাব কংগ্রেস নেতা মোস্তাক আলমের। যা নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক বিতর্ক।

হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, কংগ্রেসের সেদিন ভুয়ো যোগদান ছিল। ওই এলাকায় তাদের ৫০০ ভোট নাই আর বলছে ৫০০ জন যোগ দিয়েছে। মমতা ব্যানার্জির উন্নয়ন দেখে আজ সবাই তৃণমূলে এলো। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল ছাড়া আর কেউ থাকবে না। মানুষ উন্নয়ন দেখে ভোট দেবে।

যোগদানকারী মোহাম্মদ জালালুদ্দিন বলেন, আমরা আমাদের এলাকার বিধায়কের সাথে আছি। কংগ্রেস করতাম তৃণমূলে যোগ দিলাম। মমতা ব্যানার্জির উন্নয়ন দেখে এই যোগদান।

যোগদানকারী মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে কংগ্রেস করতাম। কিন্তু কংগ্রেস কোন উন্নয়নমূলক কাজ করে না। উন্নয়নের জন্য তৃণমূলে যোগ দিলাম। যোগ দিয়ে খুব ভালো লাগছে।

কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, তৃণমূলকে পাল্টা যোগদান দেখাতে হবে তাই দেখালো। যারা যোগ দিয়েছে তারা কোন দিন কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলো না। বরং এটা প্রমাণিত তৃণমূলে লোক নেই তাই কংগ্রেস থেকে নিতে হচ্ছে।

বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। ভোট যতই এগিয়ে আসছে গঙ্গা পাড়ের জেলার রাজনীতি ততই জমজমাট হচ্ছে। কংগ্রেস গড় এখন তৃণমূলের দখলে। বিজেপিও নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে জেলায়। এই অবস্থায় পঞ্চায়েত ভোটে সকলেই চাইছে ভালো ফলাফল করতে। সেই লক্ষ্যে নিজেদের সংগঠনকে ঢেলে সাজাচ্ছে সব রাজনৈতিক দল। সময় যত এগিয়ে আসছে ততই তরজা বাড়ছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।