আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ গণদেবতা উপন্যাসে প্রখ্যাত সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায় এক ছত্রে লিখে রেখে গেছেন কার্তিক সংক্রান্তির দিনে কল্যাণ করিয়া আড়াই মুঠা ধান কাটিয়া আনিয়া লক্ষীপুজো হইয়া গিয়াছে উদ্ধৃতিটি। সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় গ্ৰামবাংলার এক প্রচলিত উজ্জ্বল ঐতিহ্যবাহী রীতির সংলাপ তুলে ধরেছেন।অঘ্রায়ণ মাসের প্রথমদিনে গ্ৰামের কৃষকেরা সকালে উঠে স্নান করে গঙ্গাজল,সিন্দুর,তুলো নিয়ে ধানক্ষেতে যায়।ক্ষেতের ঈশাণ কোণের আড়াই ঝাড় ধান গাছের উপর গঙ্গাজল ছিটিয়ে সিঁদুর দিয়ে ওই আড়াই ঝাড় কেটে ক্ষেতের কাটা ধান গাছের গোড়ায় সিঁদুর মাখা মাখা তুলো রেখে, কাটা আড়াই মুঠা ধানগাছ গিয়ে নিজের নিজের ক্ষেত থেকে আড়াই মুঠা করে ধান কেটে ,কলাবৌ এর মতো করে চেলি কাপড়ে মুড়ে মাথায় তুলে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় নিঃশব্দে। নিজের নিজের দরজায় এসে দাঁড়াতেই বাড়ির গৃহবধূরা জল দিয়ে কৃষকের পা ধুঁইয়ে কাপড়ের আঁচল দিয়ে মুছে দেয় কৃষকের পা। তারপর সেই আড়াই মুঠা ধানের সমষ্টিকে বাড়ির প্রবিত্র স্থানে রেখে পুজো করে।কালের স্রোতে হয়তো ক্ষয়ে যাচ্ছে এই প্রথার রেওয়াজ, একদিন হয়তো সম্পূর্ণ হারিয়ে যাবে। আগামীএই ছবি দেখা গেল বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের সিমুলিয়া, দশরথবাটি,ঠাকুরাণী পুষ্করীণী গ্ৰামে প্রজন্মের সন্তানরা হয়তো এই রীতি জানবেই না।