নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা;১৪ডিসেম্বর: সন্ধ্যে বেলা দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে হাজির জেলাশাসক। মানুষের সুবিধার্থে রাত পর্যন্ত চলল ক্যাম্প। উপস্থিত মন্ত্রী এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। চাটাইয়ে বসে স্থানীয় আদিবাসীদের অভাব অভিযোগের কথা শুনলেন জেলাশাসক। ধমক দিয়ে সমস্যা সমাধানের সময় সীমা বেঁধে দিলেন ভূমি সংস্কারক আধিকারিক কে। জেলাশাসককে এই ভাবে কাছে পেয়ে খুশি এলাকাবাসী। পুষ্পবৃষ্টি করে স্বাগত জানালেন স্থানীয় আদিবাসীরা। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে প্রশাসনিক বৈঠকে এসেছিলেন মালদা জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া। সেখান থেকেই বৈঠক শেষ করে সোজা চলে যান গড়গড়ি এলাকার গড়গড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ওই বিদ্যালয়ে চলছে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প। স্থানীয় আদিবাসীরা কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাদের সুবিধার্থে ক্যাম্প চলছে সন্ধ্যা বেলা। জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়ার সাথে ছিলেন এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন, এছাড়া ব্লকের অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তা এবং জন-প্রতিনিধিরা। বিদ্যালয়ে পৌঁছে মাটির মধ্যেই চাটাইয়ের উপর বসে যান জেলাশাসক। মন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেন। মন দিয়ে শোনেন সকলের অভাব অভিযোগ। আদিবাসীরা বেশির ভাগই জমি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ জানায় জেলাশাসককে। জমি মাফিয়াদের দৌড়াত্বে তাদের খেলার মাঠ দখল হয়ে যাচ্ছে সেই অভিযোগ ও জানায় তারা। সকলের সামনে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক ভূমি সংস্কারক অধিকারক কে রীতি মতো ধমক দেন জেলা শাসক। তিন মাসের মধ্যে জমি সংক্রান্ত সমস্যা মিটিয়ে দেওয়া নির্দেশ দেন। এছাড়াও যাদের এখনো স্বাস্থ্য সাথী, লক্ষীর ভান্ডার সহ বিভিন্ন প্রকল্পে নাম ওঠেনি তাদের জন্য শুক্রবার আরেকদিন ক্যাম্পের ব্যবস্থা করেন। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী যাদের জমি নেই পাট্টা জমির জন্য সাদা কাগজে আবেদন করলে তারা পেয়ে যাবেন বলে জানিয়ে দেন জেলা শাসক। আদিবাসীদের প্রত্যেকটি অভিযোগ মন দিয়ে শোনেন তিনি। প্রত্যেককেই স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন কাজ মিটিয়ে নেওয়ার জন্য। তারপরেই মন্ত্রীর সাথে রাতে ওই বিদ্যালয়ের মিড ডে মিলের রান্না খান তিনি। এছাড়াও একটি বিরসা মুন্ডার মূর্তি স্থাপন এবং কমিউনিটি হলের দাবী জানিয়েছেন আদিবাসীরা। সেই দাবি ও বিবেচনা করতে বলেছেন জেলা শাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া।জেলাশাসককে এই ভাবে নিজেদের মধ্যে পেয়ে আপ্লুত এলাকাবাসী।
মালদা জেলা জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া বলেন, এখানে আজকে গড়গড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে ছিলাম। দুয়ারে সরকার ক্যাম্প চলছে। স্থানীয় আদিবাসীদের অভাব অভিযোগ শুনলাম। যে সব সমস্যা রয়েছে তিন মাসের মধ্যে সমাধানের নির্দেশ দিয়েছি।
হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, জেলা শাসক আজ এসেছিলেন। সঙ্গে সবাই ছিল। জমি সংক্রান্ত বিষয়ে এখানে মানুষের বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যা সমাধানের জন্য ভূমি সংস্কারক আধিকারিককে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা শাসক।
প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার গড়গড়ি মাঠ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে সমস্যা। আদিবাসীদের অভিযোগ জমি মাফিয়ারা ১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে করে সরকারি এই খেলার মাঠ বিক্রি করে দিচ্ছে। কিন্তু নীরব প্রশাসন। এর আগেও ভূমি সংস্কারক আধিকারিকের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। জেলাশাসককে কাছে পেয়ে সেই সমস্যা জানিয়েছেন আদিবাসীরা। এবার ভূমি সংস্কার দপ্তর কি পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার বিষয়।