সৎ ছেলে হওয়ার কারণে মৃত্যুর পরেও মুখ ঘুরিয়েছে পরিবার, চিকিৎসা থেকে শ্মশান যাত্রা সবটাই পুলিশের সহযোগিতায়, দায়িত্ব পালন বন্ধুবান্ধব এবং প্রতিবেশীদের।

0
315


নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:-সৎ মায়ের কু চক্রান্তে, দিনের পর দিন মানসিক যন্ত্রণায় মৃত্যু এক যুবকের, পরলৌকিক ক্রিয়াকর্মা তো দূরে থাক, ন্যূনতম শ্মশানে যেতেও রাজি নয় পরিবার, শেষমেষ পুলিশের সহযোগিতায় বন্ধুদের সাথেই শেষ যাত্রা। এমনই এক অস্বাভাবিক ঘটনা নদীয়ার শান্তিপুর হাসপাতাল কোয়ার্টার সংলগ্ন এলাকায়।
এলাকা সূত্রে জানা যায়, অমিত কুমার মল্লিক ২৬ বছর বয়সী এক যুবক শান্তিপুর হাসপাতালে মারা যায় আজ বিকাল চারটে নাগাদ।
অমিতের বাবা অশোক কুমার মল্লিক অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মী, অমিতের বয়স যখন দশ বছর তখনই তার মা মারা যায়, এরপর অমিতের বাবা দ্বিতীয়বার বিবাহ করে, এবং বর্তমান পক্ষের একটি কন্যা সন্তান আছে ।
ছোটবেলা থেকেই অমিত, সৎ মায়ের লাঞ্ছনা গঞ্জনার শিকার , মধ্যে স্নাতক হওয়ার পর একটি শপিংমলে কাজ করে সে।
অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এমনকি ঘরের দরজা বন্ধ করে মারধর করা , প্রায়শই সেই ঘটতো বলে জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা।প্রতিবেশীরা এ বিষয়ে নানা ভাবে বলেও কোনদিন সুরাহা মেলেনি।
বন্ধুরা জানাচ্ছে, তাদের কাছেও অমিত অত্যাচারের কথা বলেছে বহুবার। কিন্তু পারিবারিক বিষয় বলে, কেউই কখনো আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
আজ দুপুরে অমিতের বুকের যন্ত্রনা শুরু হলে, তাকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেই দায় সেরেছে বাবা। খবর পেয়ে বন্ধুরা, হাসপাতালে উপস্থিত হয়, প্রচন্ড বুকে যন্ত্রণার জন্য অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করনের কথা বললে, অমিতের বাবাকে ফোন করে বন্ধুরা। তিনি কাজে ব্যস্ত আছেন বলে দায় সারে। এমনকি মৃত্যুর খবর জেনেও মৃতদেহ আনতে যায়নি পরিবারের কেউই, এরপর বন্ধুরা প্রতিবেশীরা মিলে মৃতদেহ বিকাল চারটে নাগাদ তার বাড়িতে আনলে, সৎ মা এবং বাবা পরলৌকিক ক্রিয়াকর্মাদি করার জন্য কোনো আগ্রহ না প্রকাশ করে দরজা দিয়ে দেয় মুখের উপর। একসঙ্গে বড় হওয়া সৎ বোন একবারের জন্য মৃতদেহ দেখতে আসেনি দাদার। অন্যদিকে সৎ মায়ের চোখের জল তো দূরে থাক, বাবাকে পর্যন্ত আসতে দেয়নি বাইরে।
অমিতের মৃতদেহ বাড়ির সামনে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বন্ধুরা এবং প্রতিবেশীরা। এরপর অমিতের মার বিভিন্ন কটুক্তিতে এলাকাবাসীর সঙ্গে শুরু হয়, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকায় চাঞ্চলায় যথেষ্ট। খবর পেয়ে শান্তিপুর থানার পুলিশ এসে পৌঁছায় ঘটনাস্থলে, শান্তিপুর থানার তত্ত্বাবধানে অমিতের বন্ধু দের এবং প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় শ্মশানে নিয়ে যায় পুলিশ। যদিও এক প্রকার জোড় করেই, অমিতের বাবাকে শ্মশানে নিয়ে যায় পুলিশ।মৃতদেহ সম্পূর্ণ দেহ সম্পূর্ণ দাহ হওয়া পর্যন্ত শ্মশানেই প্রতীক্ষা করে শান্তিপুর থানার পুলিশ। প্রতিবেশী এবং বন্ধুদের মত অনুযায়ী , অমিত মেরে ফেলা হয়েছে, কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে ময়না তদন্ত না করার কারণে, কোনো প্রমাণই আর অবশিষ্ট থাকলো না।