দক্ষিণ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- ধোকড়া শিল্পের উপর ভিত্তি করেই আজও দক্ষিণ দিনাজপুরে এই গ্রামে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেন এলাকার মহিলারা। ভাবছেন কোন গ্রামের কথা বলছি।বলছি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের করখাঁ গ্রাম আজও মহিলাদের জীবিকার প্রধান মাধ্যম পাটের ধোকড়া তৈরি। বর্তমানে শহরে মানুষজন পাটের ধোকড়ার সাথে খুব বেশি পরিচিত না হলেও,ধোকড়ার ইতিহাস বহু প্রাচীন।জানা যায় এক সময় বাংলার মানুষের অনেকের মধ্যে দু’ফালি বস্ত্র পরার নিয়ম ছিল, সেই নিয়ম এখনও ধরে রেখেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বহু রাজবংশী সম্প্রদায় এর মহিলারা। বহু প্রাচীনকাল থেকে অতিথিদের বসতে দেওয়া এবং রোদে ফসল শুকনো থেকে শুরু করে নানান কাজে পাটের তৈরি ধোকড়ার ব্যবহার হয়ে আসছে। অবিভক্ত বাংলায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষজন পাটের তন্তু দিয়ে বাড়িতেই প্রাচীন পদ্ধতিতে ধোকড়া বুনতেন। সারা বিশ্বের প্রাচীন বয়ন পদ্ধতি গুলির মধ্যে অন্যতম ধোকড়া তৈরি। বাঁশের খুঁটির সাথে বিভিন্ন রং এর ব্যাবহারে প্রাচীন পদ্ধতিতে পাটের সুতোর ব্যবহারে বিশেষ উপায়ে তৈরি হয় এই ধোকড়া। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার করখাঁ গ্রামের রাজবংশী সম্প্রদায়ের মহিলারা ধোকড়া তৈরি করেই বহু বছর ধরে সংসারের হাল ধরে আসছেন। জানা গেছে সময়ের সাথে পাটের ধোকড়া বিক্রির মাধ্যম পাল্টেছে। এক সময় গৃহস্থের প্রয়োজনে ধোকড়া ব্যবহার শুরু হলেও বর্তমানে বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এর।
এই প্রসঙ্গে করখাঁ গ্রামের ধোকড়া শিল্পী জবা সরকার বলেন “বহু বছর ধরে বংশ-পরম্পরায় ধোকড়া তৈরি করে আসছি আমরা। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এই কাজের মধ্য দিয়েই আমরা অনেকাংশেই স্বাবলম্বী হয়েছি।”
জানা গেছে বর্তমানে করখাঁ গ্রামের মহিলাদের তৈরি পাটের ধোকড়া এলাকার বিভিন্ন হাটে বিক্রির পাশাপাশি জেলা ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় রাজ্যের বিভিন্ন বড় বড় বাজার এবং মেলাতে। দিন দিন বিক্রি বাড়ছে এমনটাই দাবি ধোকড়া শিল্পীদের।
আরেক ধোকড়া শিল্পী চৈতালি সরকার জানান “জন্ম থেকেই বাবা-মায়ের কাছ থেকে শেখা এই কাজ। এই কাজের মধ্য দিয়েই আমরা আর্থিকভাবে সফলতার মুখ দেখছি বর্তমানে।”
এভাবেই বহু বছর ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার করখাঁ গ্রামের মহিলারা তাদের নিজস্ব প্রচেষ্টার মাধ্যমেই স্বাবলম্বী হওয়ার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে ধোকড়া শিল্পের দ্বারা।
Home রাজ্য উত্তর বাংলা পাটের ধোকড়া বানিয়েই দক্ষিণ দিনাজপুরের এই গ্রামে জীবিকা নির্বাহ করেন মহিলারা।