নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা:- পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে পুরোনো জমি বিবাদের জেরে তৃণমূল কর্মীকে মারধর এবং শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ। অভিযোগ সিপিআইএম-কংগ্রেস জোট কর্মীদের বিরুদ্ধে। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই তৃণমূল কর্মী। ১৩ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের থানায়। প্রকাশ্যে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ। ভোটের প্রাক্কালে সিপিআইএম কংগ্রেস জোট বেঁধে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। কটাক্ষ তৃণমূলের। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব পাল্টা সিপিআইএম। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত পায়খানা মোড় পেট্রোল পাম্পের সামনে ঘটনাটি ঘটে। তেলজান্না ঘাটের বাসিন্দা মহিরুল ইসলাম। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সাথে যুক্ত। তার সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রায় এক বছর ধরে বিবাদ চলছিল এলাকারই কয়েকজন সিপিআইএম এবং কংগ্রেস কর্মী সমর্থকের। আক্রান্ত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের দাবি রাজনৈতিক কারণে অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলার চেষ্টা করত। বিবাদ থেকেই আক্রোশের জেরে পায়খানা মোড় পেট্রোল পাম্পের সামনে তৃণমূল কর্মী মহিরুল ইসলাম কে আক্রমণের অভিযোগ ওঠে সিপিআইএম কংগ্রেস জোট কর্মীদের বিরুদ্ধে।প্রায় ১০-১৩ জন তাকে মাটিতে ফেলে মারে। এমনকি অভিযোগ তারপর শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করা হয়। আশেপাশে উপস্থিত লোকজন সেই সময় ছুটে এসে তাকে বাঁচায়। পরবর্তীতে তার স্ত্রী ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে ভালুকা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বর্তমানে নিয়ে আসা হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। পেট্রোল পাম্পের সামনে থাকা সিসিটিভি থেকে সামনে আসছে সমগ্র ঘটনা। ভিডিওতে দেখা গেছে তাকে মারধর করা হচ্ছে। সমগ্র ঘটনায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় ১৩ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। সমগ্র ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর। তৃণমূলের অভিযোগ পঞ্চায়েত ভোটের আগে অশান্তির সৃষ্টির চেষ্টা করছে কংগ্রেস এবং সিপিআইএম। যদিও সিপিআইএমের পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।পাল্টা তাদের দাবি এই সব তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। মিথ্যা অভিযোগ করে দুর্নীতি ইস্যু থেকে নজর ঘোরাতে চাইছে।
স্ত্রী ফাতেমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী আমাকে রাখতে গেছিল পায়খানা মোড়ে। আমি চলে যাওয়ার পর দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিল সেই সময় ওরা আক্রমণ করে। এর আগে ওরা জমি দখল করার চেষ্টা করেছে বাড়ির সামনে এসে হুমকি দিয়েছে। যারা মারধর করেছে কেউ কেউ সিপিআইএম করে কেউ কংগ্রেস করে। আমরা তৃণমূল করি।
হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সামাউন বলেন, যিনি আক্রান্ত হয়েছেন তিনি তৃণমূল করেন। দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ ছিল। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সিপিআইএম এবং কংগ্রেস জোটবদ্ধ হয়ে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। সিসিটিভি ফুটেজেও সমস্ত ঘটনা দেখা গেছে।
সিপিআইএমের জেলা কমিটির সদস্য শেখ খলিল বলেন, জমি নিয়ে বিবাদ তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সিপিআইএম এইসবের মধ্যে নেই। মিথ্যা অভিযোগ করছে। দুর্নীতির ফলে চারিদিকে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে আছে। তাই নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই উত্তপ্ত হচ্ছে এলাকার রাজনীতি। বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে বারবার বিবাদে জড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক দলের কর্মী সমর্থকদের। কখনো আক্রমণের অভিযোগ উঠছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। আবার কখনো কাঠগড়ায় বিরোধীরা। ভোট যত এগিয়ে আসছে রাজনীতির পারদ তত উর্ধ্বমুখি।