তমলুক শহরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালন।

0
476

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:-

১৯৩৭ সালের কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর সুভাষচন্দ্র বসু, কংগ্রেসের ভাবধারা গান্ধীজীর আদর্শ জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে জেলায় জেলায় শুরু করে ছিলেন জনসভা। ১৯৩৮ সালে ১১ এপ্রিল অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার তমলুক শহরে এসেছিলেন। তমলুকে জনসভা করার পাশাপাশি তমলুকের বর্গভীমা মন্দির, তাম্রলিপ্ত পৌরসভা, রামকৃষ্ণ মিশন পরিদর্শন করেন এর পাশাপাশি তিনি তমলুকের কংগ্রেসি নেতা সতীশ চক্রবর্তীর বাড়িতে রাত্রি বাস করে ছিলেন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ট্রেনে করে পাঁশকুড়া স্টেশনে নামেন। তারপর সড়ক পথে তমলুক শহরে এসে পৌঁছান ফোর্ড গাড়িতে। তমলুক শহরে নেতাজি সুভাষচন্দ্রের জনসভা প্রথম পর্যায়ে স্থির হয় রাখাল গাউন্ডে। কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশের বিরোধিতায় ওই জায়গায় জনসভা হয়নি। এমনকি ব্রিটিশ বাহিনী সচেষ্ট হয়েছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের জনসভা যাতে অনুষ্ঠিত না হয়। তমলুক মহাকুমার কংগ্রেসী নেতারা জনসভা সফল করার মরিয়া প্রচেষ্টা চালান। সেই সময় এগিয়ে আসেন তাম্রলিপ্ত নগরীর রাজা সুরেন্দ্রনারায়ন রায়। তিনি রাজবাড়ীর অন্দরমহলের খোসরঙের আমবাগান পরিষ্কার করে জনসভার জায়গা করে দেন। সন্ধ্যের অন্ধকারে হ্যাজাকের আলোয় সেই জনসভা হয়।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আসার পর তাম্রলিপ্ত পৌরসভা বর্গভীমা মন্দির রামকৃষ্ণ মিশন সহ একাধিক জায়গা পরিদর্শন করেন। দেবী বর্গভীমায় মায়ের পায়ে পুজো দেন দেশের মুক্তি কামনায়। পুজোর দক্ষিণা স্বরূপ সেবাইতের ৫ টাকা দিয়েছিলেন তিনি। রামকৃষ্ণ মিশনে এসে তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। যা আজও রামকৃষ্ণ মিশনের রেজিস্টারে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্বাক্ষর রয়েছে। তমলুক পৌরসভায় নেতাজির বসার চেয়ার আজও যত্ন করে রাখা হয়েছে। নেতাজির জন্ম জয়ন্তী সেই চেয়ার পৌরসভার পক্ষ থেকে সুসজ্জিত করা হয় প্রতিবছর। জনসভার পাশাপাশি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তৎকালীন তমলুক মহকুমার কংগ্রেসের সম্পাদক চন্দ্র দাসের বাড়িতে রাত্রি বাস করেন। পরের দিন তিনি কাঁথি ও এগরার দিকে জনসভার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

বর্তমানে তাম্রলিপ্ত পৌরসভা ও নেতাজি প্রেমীদের উদ্যোগে তমলুকের যেসব জায়গাগুলি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু পরিদর্শন করেছিলেন সেই জায়গায় নেতাজির মূর্তি উন্মোচিত হয়েছে কোথাও আবার স্মৃতিফলক বসেছে। প্রতিবছর নেতাজীর জন্মদিনে তাম্রলিপ্ত পৌরসভার উদ্যোগে যথাযথভাবে মাল্যদান ও ছোট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হয়।