নদিয়া কুম্ভমেলা, ৭০৪ বছর পর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।

0
503

নদিয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা: পুন‍্যতীর্থ ত্রিবেনীর পবিত্র মাটিতে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে ।ত্রিবেণী এবং মাঝেরচর গ্রামে কুম্ভ মেলার আসরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই লোকে লোকারণ্য। কথিত আছে, মহাভারতে পুলস্ত মুনি সর্বপ্রথম এই কুম্ভ মেলার কথা উল্লেখ করেছেন। তবে আধুনিক ভারতে ৭০৩ বছর আগে ত্রিবেণীতে কুম্ভ মেলা বসত‌। কালের নিয়মে এক সময় সেই কুম্ভ মেলা বন্ধ হয়ে যায়। ২০২২ সালে ফের এই মেলা চালু করা হয়। তবে এ বছর মেলাকে কেন্দ্র করে এখনই সাজ সাজ রব । মাঝের চরে কুম্ভ মেলা শুরু হচ্ছে ১০ই ফেব্রুয়ারি অপরদিকে ত্রিবেনীতে ১২ই ফেব্রুয়ারি। কুম্ভ মেলা উপলক্ষে ত্রিবেণীতে গঙ্গায় পুলিশী নজরদারি থাকছে। ত্রিবেণীতে ৩৪ টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে মেলা উপলক্ষে। থাকবে তিনটি ওয়াচ টাওয়ারও। ১৩ তারিখে এবারের শাহী স্নান ত্রিবেণীর গঙ্গায় হতে চলেছে। ত্রিবেনীর সপ্তর্ষি ঘাটে শুধু সাধু সন্তরা শাহী স্নান করবেন ।অপরদিকে ভক্তবৃন্দ সহ অন্যান্যরা ত্রিবেণী ঘাট এবং রাজা ঘাটে স্নান করবে। ত্রিবেণী শিবপুর স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে নাগা সাধুদের জন্য আখড়া গড়ে তোলা হয়েছে ।ত্রিবেনীর কুম্ভ মেলা পরিচালন সমিতির প্রধান সংগঠক সাধন মুখোপাধ্যায় এবং পরিচালন সমিতির তরফে প্রীতম সরকার জানিয়েছেন পাঁচশোর বেশি স্বেচ্ছাসেবক উপস্থিত থাকবে। বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান আদিত্য নিয়োগী জানিয়েছেন পৌরসভার পক্ষ থেকে সব রকম ব্যবস্থা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে ।অপরদিকে কাঁচরাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন মাঝেরচর গ্রামে শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর ঘাটে শাহী স্নান অনুষ্ঠিত হবে। বঙ্গ কুম্ভমেলা পরিষদের আয়োজিত এই কুম্ভ মেলায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সনাতন সংস্কৃতি সংসদ। পরিষদের দাবি শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর পদদলিতে ধন্য মাঝেরচর ঘাট। নীলাচলে অবস্থানকালে মহাপ্রভু চৈতন্যদেব পানিহাটিতে রাঘব পন্ডিতের কাছে এবং কুমারহট্টে শ্রীবাস পন্ডিতের কাছে ও গুরু ইশ্বর পুরীর বাসস্থানে এবং শান্তিপুরে গিয়েছিলেন। জনশ্রুতি, সেই যাওয়ার পথে তিনি ত্রিবেণী ও মাঝেরচর গ্রামের উপর দিয়েই গিয়েছিলেন এবং বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তাছাড়া নিত্যানন্দ প্রভু সপ্তগ্রামে এসেছিলেন উদ্ধারণ দত্তের কাছে যিনি ছিলেন তার বিবাহের ঘটক এবং পরম ভক্ত । আজও কাল নাই নিত্যানন্দ প্রভুর বিবাহ স্থল বলে একটি স্থান রয়েছে আবার নদীয়ার গাটরা গ্রামেও তার শ্বশুর বাড়ি রয়েছে। এমনকি ত্রিবেনীর পরেই বেহুলা নদীর তীরে নিত্যানন্দ প্রভুর নামে নিত্যানন্দপুর নামে একটি গ্রাম আজও রয়েছে। এই কুম্ভ মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাগা সাধু, দশনামি সাধু, সন্ন্যাসীগণ, বৈষ্ণবগণ, গুরু গোস্বামীসহ হাজার হাজার তীর্থযাত্রীর সমাগম হবে। এই কুম্ভ মেলা উপলক্ষে শাহীস্নানসহ বিশ্ব শান্তি যজ্ঞ, গঙ্গা আরতি, নাগা সন্ন্যাসীদের 108 টি যজ্ঞকুণ্ড, ধর্ম সভা, সাধু ভান্ডারা এবং নাগা সন্ন্যাসীদের দিগম্বর শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে বলে সংগঠকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।