অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসাবে চাকরি দেওয়ার নামে বেশ বড় রকমের প্রতারণার অভিযোগ উঠে এল এবার মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে।

0
275

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ——টেট,গ্রুপ ডি ও এসএসসির পর এবার দুর্নীতির ছায়া আইসিডিএসে।অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসাবে চাকরি দেওয়ার নামে বেশ বড় রকমের প্রতারণার অভিযোগ উঠে এল এবার মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে।চার লক্ষ টাকার বিনিময়ে আইসিডিএস প্রকল্পে চাকরি দেওয়া হবে এই টোপ দেওয়া হয়েছিল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা তথা কৃষক জাহেদুল ইসলামকে।ওই কৃষক মেয়ের চাকরির জন্য স্ত্রীর গয়না বন্ধ রেখে ও জমি বিক্রি করে নগদ চার লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিল হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা তথা আইসিডিএস হেল্পার মোসলেমা বেওয়া এবং তার মেয়ে পুতুল নেশার হাতে।টাকা নেওয়ার সময় তারা জানিয়েছিল সিডিপিও ও জেলার ঊর্ধ্বতন তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে তাদের ভালো পরিচয় রয়েছে।১৫ দিনের মধ্যেই চাকরি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।কিন্তু চাকরি তো দূরঅস্ত,দুই বছর কেটে গেলেও টাকা ফেরত পাননি।এদিকে সামনে ওই কৃষকের মেয়ের বিয়ে।সেই জন্য ওই আইসিডিএস হেলপারের কাছে রবিবার টাকা ফেরত চাইতে গেলে টাকা ফেরতের বদলে জুটলো ঘার ধাক্কা।এই ঘটনাকে ঘিরে এদিন চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা জুড়ে।এ বিষয়ে ওই কৃষক হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মা ও মেয়ের বিরুদ্ধে।অভিযোগের ভিত্তিতে সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ বলে জানান।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মহেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম তার মেয়ে নুরজাহান খাতুনের আই সি ডি এস এ চাকরির জন্য হরিশ্চন্দ্রপুরের সংগঠন পাড়ার বাসিন্দা পুতুল নেশা পারভীন এবং তার মা আইসিডিএস হেল্পার মুসলিমা বেওয়ার হাতে নগদ চার লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিলেন।দু’বছর কেটে গেলেও সেই চাকরি হয়নি।বারবার টাকা ফেরত চাইতে গেলেও সেই টাকা ফেরত পাওয়া যায়নি।রবিবার জাহিদুল তার মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা ফেরত চাইতে গেলে টাকা ফেরত দেওয়া তো দূরের কথা উল্টে অভিযুক্ত মা ও মেয়ে জাহিদুল এবং তার পরিবারকে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ।শারীরিক নিগ্রহ পর্যন্ত করা হয়।এরপরই জাহিদুল ওই আইসিডিএস হেল্পার এবং তার মেয়ের বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ প্রসঙ্গে অভিযোগকারী জাহিদুল ইসলাম জানান ‘আমি দরিদ্র কৃষক।ওই আইসিডিএস হেল্পার মোসলেমা এবং তার মেয়ে পুতুল নেশা আমার মেয়েকে আইসিডিএস প্রকল্পে চাকরি পাইয়ে দেবে বলে আমার কাছ থেকে ধাপে ধাপে চার লক্ষ টাকা নিয়েছিল।আমি জমি-জামা বিক্রি করে স্ত্রীর গয়নাগাটি বন্ধ রেখে ওই টাকা জোগাড় করেছিলাম।কিন্তু মেয়ের চাকরি তো দূরের কথা দুই বছর কেটে গেলেও সেই টাকা ফেরত দেয়নি।চলতি মাসের ১৫ তারিখে আমার মেয়ের বিয়ে আছে।টাকার অভাবে বিয়ের প্রস্তুতি নিতে পারিনি।তারা আজকে টাকা দেওয়ার জন্য বাড়িতে ঠেকেছিল।আমরা বাড়িতে পৌঁছালে তারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিল।তাদেরকে রাস্তায় আটকালে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে শারীরিক নিগ্রহ করে।

যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত হেল্পার মোসলিমা বেওয়ার মেয়ে পুতুল নেশা পারভিন।পুতুলের দাবি ওরা ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলছে।চাকরি দেওয়ার নাম করে আমি কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেইনি। আমার কাছে ওরা মেয়ের বিয়ের জন্য ধার চাইতে এসেছিল।এর আগেও ওদের টাকা ধার দিয়েছি।আজ টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমার বিরুদ্ধে এইসব মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।

এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে ঘটনার অভিযোগ জমা পড়েছে সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।