সদাইপুর, সেখ ওলি মহম্মদঃ- কীভাবে এসে বেয়াই প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুন করল এবং স্বামীর মৃতদেহ বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে একটি মাঠে ফেলে চম্পট দেয় অভিযুক্ত বেয়াই তা বীরভূম জেলার সদাইপুর থানার পারুলিয়া গ্রামে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল সদাইপুর থানার পুলিশ। এদিন সিউড়ি সদর সিআই কিশোর সিনহা চৌধুরী ও সদাইপুর থানার ওসি মিকাইল মিয়ার উপস্থিতিতে স্বামী খুনে দুই অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে পুনর্নির্মাণ করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মার্চ রাত্রে বাড়িতে কেউ না থাকার সুবাদে সদাইপুর থানার পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা নবীন অঙ্কুরকে খুন করে তাঁর স্ত্রী মায়া অঙ্কুর ও বেয়াই সঞ্জিত ডোম। পরদিন সকালে গ্রামের মানুষজন দেখতে পান একটি মাঠে নবীন অঙ্কুরের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। খবর দেওয়া হয় সদাইপুর থানার পুলিশকে। সদাইপুর থানার পুলিশ এসে মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য সিউড়ি সদর হাসপাতালে পাঠায়। কিন্তু মৃতের পুত্র ও কন্যা দাবী করে তাঁর বাবাকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে মৃতের স্ত্রী মায়া অঙ্কুরকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসে। কিন্তু তাঁর অসংলগ্ন কথাবার্তায় পুলিশ ধরে ফেলে। এই খুনে কে কে সামিল ছিল তা মায়া অঙ্কুর সমস্ত কথা পুলিশকে জানায়। তারপর সদাইপুর থানার পুলিশ পাঁড়ুই থানার নিতুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জিত ডোমকে গ্রেপ্তার করে। সম্পর্কে তিনি মৃতের বেয়াই।দুজনকে সিউড়ি আদালতে তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের পুলিশী হেফাজত চাওয়া হলে বিচারক ৬ দিনের পুলিশী হেফাজতের নির্দেশ দেন। তারপর এই খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল সদাইপুর থানার পুলিশ। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত দুজনে স্বীকার করেছে গত পাঁচ বছর ধরে মৃত নবীন অঙ্কুরের স্ত্রী মায়া অঙ্কুরের সাথে বেয়াই সঞ্জিত ডোমের প্রেম ছিল। কিন্তু বেয়ান প্রেমিকার সঙ্গে স্বাভাবিক মিলনের ক্ষেত্রে কাঁটা ছিল তাঁর স্বামী। তাই খুন করার পরিকল্পনা করে অভিযুক্ত বেয়াই সঞ্জিত ডোম। খুন করার দিনে অভিযুক্ত বেয়াই সঞ্জিত ডোম পাঁড়ুই থেকে বাসে করে পারুলিয়া বাসস্ট্যাণ্ডে নামে। সেখান থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার মেঠো পথ ধরে পায়ে হেঁটে পারুলিয়া গ্রামে আসে নবীন অঙ্কুর ও মায়া অঙ্কুরের বাড়িতে। তখন নবীন অঙ্কুর বাড়িতে ছিলেন না। সেই সময় তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা করে মৃতের স্ত্রী মায়া অঙ্কুর ও বেয়াই সঞ্জিত ডোম। তারপর তাঁদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গ্রামেরই একটি পুকুর পাড়ে বসেছিল বেয়াই সঞ্জিত ডোম। আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফেরেন নবীন অঙ্কুর। খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে যান তিনি। তারপর বেয়াই সঞ্জিত ডোমকে ডেকে নেন প্রেমিকা অর্থাৎ মৃতের স্ত্রী মায়া অঙ্কুর। দুজনে মিলে গলায় দড়ির ফাঁস লাগিয়ে নবীন অঙ্কুরকে খুন করে। ঐদিন রাত্রি আড়াইটে নাগাদ বেয়াই সঞ্জিত ডোম ও মায়া অঙ্কুর বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে একটি মাঠে নবীন অঙ্কুরের মৃতদেহ ফেলে দেয়। তারপর ঐ দড়ি পাশের একটি পুকুরে ফেলে চম্পট দেয় বেয়াই সঞ্জিত ডোম।