একটি ছোট প্রযুক্তির হস্তক্ষেপ পার্থর জীবন বদলে দিয়েছে।

0
9115

দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নিজস্ব সংবাদদাতা:- দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং -১ ব্লকের অন্তর্গত হিঞ্চখালী গ্রামের বাসিন্দা পার্থ সারথি পাইক (৩১) আজ শুধু সফল কৃষকই নন, একজন কৃষি সম্পদ কর্মীও বটে। মাতলা নদীর তীরে অবস্থিত হিঞ্চখালী গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে তরমুজ চাষ গত বছরেও ছিল স্বপ্ন। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ এবং এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ATMA) -এর কৃষি উপকরণ এর সাহায্যে এক একর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পার্থ। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর পারিবারিক কারণে আর পড়শোনা করতে পারেন নি পার্থ – পিতার সাথে যুক্ত হন পারিবারিক কৃষি কাজে – স্বপ্ন কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার।
২০২১ সালের জুন মাসে পশুপালকদের একটি হোয়াটস্যাপ গ্রূপ থেকে পার্থ জানতে পারেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের জীবিকা বিকাশ কার্যক্রম সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং তথ্য পরিষেবার কথা। এরপর গ্রামের একজন কৃষকবন্ধুর কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য জানার পর পরিচয় ঘটে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের কর্মী অনিন্দ্য মন্ডলের সাথে। এরপর অনিন্দ্যর উদ্যোগে পার্থ ১৪-২০ মার্চ ২০২২ তারিখে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন আয়োজিত জৈব পদ্ধতিতে সবজি ও উদ্যানপালন এর উপর অনলাইন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন এবং শস্য শ্যামলা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র, নরেন্দ্রপুরের কৃষি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে মাটির স্বাস্থ্য, নার্সারি ব্যবস্থাপনা, সার্টিফাইড বীজ, জৈব কৃষি সহ বিভিন্ন কৃষি সম্পর্কিত সরকারি প্রকল্পের সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করেন।
পরবর্তীকালে গত মরশুমে ATMA থেকে কৃষি উপকরণ এর সাহায্যে মাতলা নদীর তীরে পারিবারিক এক একর জমিতে পলি মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করেন। ফলের বর্তমান অবস্থা এবং গুণমান থেকে পার্থর আশা এক একরকমপক্ষে ১৫ টন তরমুজ পাওয়া যাবে। পাইকারি বিক্রয়মূল্য প্রতি কেজি ১৬ টাকা ধরলে মোট আয় হবে প্রায় ২.৫০ লক্ষ টাকা। খরচ ৫০,০০০/- টাকা বাদ দিলে নীট লাভের পরিমান ২.০০ লক্ষ টাকা। যে জমিতে তরমুজ চাষ ছিল কৃষকদের কাছে স্বপ্ন, সেই জমিই আজ শস্য শ্যামলা।
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পার্থর ব্যক্তব্য ” আধুনিক কৃষি আজও গ্রাম বাংলার কৃষকদের কাছে অজানা। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে আমরা ধারাবাহিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আধুনিক কৃষির বিষয় রপ্ত করতে পারছি, শক্তিশালী হচ্ছে গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি। আমি নিজে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পাশাপাশি গ্রামের অন্যান্য কৃষকদেরও রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ এর সাথে যুক্ত করছি। আজ আমার স্বপ্ন কৃষক উৎপাদক সংস্থা (FPO) গঠন করার”।