নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের কৃষি প্রশিক্ষণে সর্ষের উৎপাদন বাড়িয়ে লাভবান হলেন শান্তিপুর নিবাসী কৃষক সৌরভ সৌরভ সরকার (২৭), নদীয়া জেলার আরবান্ধি-১ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শান্তিপুর ব্লকের বল্লভপুর গ্রামের সর্ষে চাষের সাথে যুক্ত রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন এর ডিজিটাল ফার্ম স্কুল এর একজন সক্রিয় সদস্য। চার সদস্য বিশিষ্ট পরিবারটির মূল জীবিকা ধান, সবজি এবং সর্ষে চাষ। সৌরভ বাবুর পরিবারের মোট কৃষি জমির পরিমান দুই বিঘা। এর মধ্যে দুই বিঘা বাণিজ্যিকভাবে সর্ষে এবং বাকি জমিতে সবজি চাষ হয়। মেধাবী সৌরভ কলা বিভাগে স্নাতক হওয়ার পর মূলতঃ পরিবারকে সাহায্য করার জন্য কৃষি কাজের সাথে যুক্ত হয়।
সৌরভ বাবু রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের এর সাথে পরিচিত হন ২০১৯ সালের জুন মাসে ফাউন্ডেশনের কর্মী সুজয় ব্যানার্জির মাধ্যমে এবং বিভিন্ন জীবিকা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও নিঃশুল্ক হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০ ৪১৯ ৮৮০০ এর সাথেও অবগত হন। পরবর্তী কালে হেল্পলাইনের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞের সাথে কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন আধুনিক তথ্যের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যান কৃষিকাজ। মে ২০২২ সালে নদীয়া জেলার রানাঘাট-১ ও শান্তিপুর ব্লকের মোট চারটি গ্রামের ১৭২ জন কৃষক কে নিয়ে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন ধান, সবজি ও সর্ষে চাষের সাথে যুক্ত কৃষক দের নিয়ে একটি “ডিজিটাল ফার্ম স্কুল” শীর্ষক অভিনব প্রকল্প চালু করে। মূলতঃ মাটির চরিত্র অনুসারে আধুনিক কৃষি পদ্ধতির সাথে কৃষককে দক্ষ করে তুলে তাঁর রোজগার বাড়ানোই মূল লক্ষ্য। বিশেষজ্ঞ হিসেবে যুক্ত আছেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন, ও হরিণঘাটা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞানীবৃন্দ।
বিগত মরশুমে প্রকল্প চালু হওয়ার পর সৌরভ বাবু এই ফার্ম স্কুল থেকে ধারাবাহিক ভার্চুয়াল প্রশিক্ষণ- এর মাধ্যমে সর্ষে চাষের উদ্ভাবনী বিষয়গুলি রপ্ত করেন, বিশেষ করে সেচ দেওয়া, মাইক্রোনিউট্রেন্ট (বোরন), সারের ব্যবহার, কীটনাশক ঔষধের ব্যবহার ইত্যাদি বিষয়গুলি এবং সেইমতো প্রায় দেড় বিঘা জমিতে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে সরষে চাষ করেন। ভার্চুয়াল ট্রেনিং এর পাশাপাশি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের মাধ্যমে হাতেকলমে ফিল্ড প্রশিক্ষণ-এরও আয়োজন করে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন। ফলস্বরূপ, বিগত ২০২২ রবি মরশুমে সৌরভের দেড় বিঘা জমিতে সর্ষে উৎপাদন হয় প্রায় ৩.৯০ কুইন্টাল। মোট বিনিয়োগের পরিমান ছিল ৭০০০/- টাকা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নদিয়ার এই অঞ্চলটির মাটি অতীব উর্বর এবং চাষের উপযোগী।
২০২১ সালে যেখানে সর্ষে উৎপাদনের পরিমান ছিল ১.৮০ কুইন্টাল, সেখানে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন-এর প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর ২০২২ সালে উৎপাদনের পরিমান হয়েছে দ্বিগুনের বেশি। পরিবারের জন্য কিছুটা রেখে বাকি সরষে স্থানীয় বাজারে ৪৯/- টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি করেছেন সৌরভ। নীট লাভের পরিমান প্রায় ১২,১০০/- টাকা।
সৌরভ বাবু আজ রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের “ডিজিটাল ফার্ম স্কুল” এর ফলে উপকৃত তো বটেই, গর্বিতও বটে !! তাঁর কথায় “ ডিজিটাল ফার্ম স্কুল থেকে ভার্চুয়ালি আমরা চাষের বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ফিল্ড প্রশিক্ষণ হওয়ার ফলে সরাসরি আমরা আধুনিক কৃষির খুঁটিনাটি বিষয়গুলি রপ্ত করতে পারছি, ফলে বেড়েছে উৎপাদন, বেড়েছে আত্মবিশ্বাস। “