নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- রানাঘাটে আয়োজিত হলো প্রাচীন ময়ূরপঙ্খী শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রার মূল উদ্যোক্তা ঘোষ সম্প্রদায়ের মানুষেরা হলেও আজ এই শোভাযাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ত রানাঘাটের অগণিত মানুষ। দাবি করা হয় অন্তত ৫০০ বছরের প্রাচীন এই ময়ূরপঙ্খী। রানাঘাট পৌরসভার পৌরপতি কোশলদেব বন্দ্যোাধ্যায় বলেন এই শোভাযাত্রা ঘিরে রানাঘাটের মানুষের আবেগ আছে। এবারও ছিল চোখে পড়ার মতো। রানাঘাট দক্ষিণ পাড়া থেকে শুরু হয় এই ময়ূরপঙ্খী শোভাযাত্রা। এরপর রানাঘাটের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে এই শোভাযাত্রাটি। একসময় এই শোভাযাত্রার সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা করতেন পাল চৌধুরীবাড়ির জমিদাররা। সেই সময় এই ঘোষ সম্প্রদায়ের একটা বিরাট অংশ নিযুক্ত ছিলেন পাল চৌধুরী জমিদার বাড়ির লাঠিয়াল হিসেবে। জনশ্রুতি এদের সর্দারদের বা সর্দারকে পাল চৌধুরী জমিদার বাড়ি থেকে এই শোভাযাত্রার দিনে বিশেষ উপহার দেওয়া হত।
কেউ কেউ আবার বলেন পাল চৌধুরীদের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়ার আগেও এই সম্প্রদায়ের মানুষরা নৌকা সাজিয়ে বের হতেন। সেই নৌকা সাজানো হতো ময়ূরপঙ্খীর মতো। পরবর্তীতে নৌকা যাত্রা বিলুপ্ত হয়। স্থান নেয় গো যানে যাত্রা। আজকের ময়ূরপঙ্খী সেই প্রথারই প্রচলিত রূপ। রানাঘাটের বাসিন্দা শুভদ্বীপ বন্দ্যোাধ্যায় বলেন
এর সাথে পাল চৌধুরী বাড়ির যে সম্পর্ক তা সরাসরি সংযুক্ত ইতিহাসের সঙ্গে। কিন্তু এর নেপথ্যে যেমন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বসন্ত শেষে ময়ূরপঙ্খীতে যাত্রার জনশ্রুতি জড়িয়ে আছে, তেমনি এর সাথে জড়িয়ে আছে দেহতত্ত্ব। কারণ দেহ সাধনাতে গো, নৌকা এবং ময়ূর বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। আজকের এই রানাঘাট ও তার সন্নিহিত অঞ্চলে একসময় যে দেহ সাধনার প্রভূত প্রচলন ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।