জলপাইগুড়ি, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ-গত ১৫ এপ্রিল বাংলার অন্যান্য জেলার সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রাচীন রীতিনীতি মেনে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো চড়ক পূজা, আর এই চড়ক পুজোকে ঘিরেই গ্রামে গ্রামে বসেছিল চড়ক মেলা।
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খড়িয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কোরানি পাড়ার বাসিন্ধা বছর আটচল্লিশের মধু বর্মন চড়ক দলের গুরুর নির্দেশে পিঠে বড়শি গেঁথে চড়ক এর সঙ্গে শূন্যে ঘুরে খেলা দেখানোর জন্য পাড়া প্রতিবেশীদের অগোচরেই গিয়ে ছিলো পার্শ্ববর্তী গ্রাম মন্ডল ঘাটের তেলিপাড়ায়। প্রথম দুবার চরকের সঙ্গে পিঠে বড়শি গেঁথে ঘুরে খেলা দেখালেও তৃতীয় বার পিঠে গাঁথা বড়শির দড়ি ছিড়ে মাটিতে পরে যায় সঙ্গ সাজা মধু বর্মন এবং বুকে পেটে আঘাত পেয়ে বাড়ি ফিরে আসে।
এরপর থেকেই ক্রমশ শারীরিক অবস্থার অবনতি হোতে থাকলেও চড়ক দলের গুরু আশ্বাস দেন কেউ বান মেরেছে যার ফলেই এই ঘটনা এবং শারীরিক অসুস্থতা।
এভাবেই কার্যত বিনা চিকিৎসায় দশ দিন কোরানী পাড়া গ্রামের বাড়ীতেই পরে থাকে দিন মজুরের কাজ করে খাওয়া মধু বর্মন।
সোমবার সমস্ত ঘটনা জানার পরেই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য বিকাশ রায়, এক প্রকার জোর করেই আহত মধু বর্মন কে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য।
তবে দীর্ঘ সময় গুরুর সেই বান মারার গল্প বিশ্বাস করে বসে থাকা মধু বর্মণের শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে যায়, কর্তব্যরত চিকিৎসকদের বহু চেষ্টার পরও মঙ্গলবার মৃত্যু হয় মধু বর্মণের। ঘটনা প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্য বিকাশ রায় জানান।
আমরা মানা করার পরেও মধু গিয়ে ছিলো চড়ক খেলা দেখাতে কিছু টাকা পাবে এই আশায়, মধুর স্ত্রী মানসিক ভাবে দূর্বল, একটি মাত্র ছোট্ট ছেলে রয়েছে মৃত মধু বর্মণের, আমরা পরিবারটির পাশে থাকার চেষ্টা করবো সর্বক্ষণ।