সরকারি নির্দেশিকা ছাড়াই গ্রামের একমাত্র উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ক্লাবে নিয়ে চলে যাওয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ।

0
270

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- —-সরকারি নির্দেশিকা ছাড়াই গ্রামের একমাত্র উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ক্লাবে নিয়ে চলে যাওয়ার অভিযোগে তিন উপস্বাস্থ্য কর্মীকে গৃহবন্দী করে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ স্থানীয়দের।ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেন্দ্রপুর গ্রামে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ,সরকারি নির্দেশিকা ছাড়াই গ্রামের কাউকে না জানিয়ে ওই কেন্দ্রের উপস্বাস্থ্য কর্মীরা গ্রামের অনত্র ক্লাবে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন।বিষয়টি গ্রামবাসীদের নজরে আসতেই তেতে উঠেন।ক্ষুব্ধ হয়ে তিন উপস্বাস্থ্য কর্মীকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মহেন্দ্রপুর পূর্ব পাড়ায় ওই উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে প্রসূতি মা,শিশু ও গর্ভবতী মহিলারা পরিসেবা‌ পেয়ে আসছেন।২০১৭ সালের বন্যায় উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বেহাল হয়ে পড়ে।দেওয়ালে ফাটল দেখা দেয়।পরগাছা ও লতাপাতা গজিয়ে ওঠে দেওয়াল ও ঘরে।ঘরের মেঝে বসে গিয়ে পোকা মাকড়ের উপদ্রব শুরু হয়।সেই আশঙ্কায় উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরা পাশের অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে স্বাস্থ্য পরিসেবা দেওয়া শুরু করেন।দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে সেখানেই চলছিল উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি।সিডিপিও সেই অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারটি ছাড়তে বললে সেখান থেকে গ্রামের অনত্র ক্লাবে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন কর্মীরা বলে অভিযোগ।

গ্রামবাসীদের আরো অভিযোগ ২০১৭ সালের বন্যার পর থেকে ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে।তারপর সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার অভিযোগ জানানো সত্বেও কোন কাজ হয়নি।সেই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে মা ও শিশু দের পরিসেবা দেওয়া যাচ্ছিল না তাই পার্শ্ববর্তী একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকেই স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে টেবিল,চেয়ার,ঔষধ ও খাতাপত্র সমস্ত কিছু নিয়ে বেশ কিছু দূরে পশ্চিম পাড়ায় একটি ক্লাব ঘর থেকে স্বাস্থ্য পরিসেবা দেওয়া হবে বলে ভ্যানে বোঝাই করতে থাকেন।আর তা দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীরা স্বাস্থ্য কর্মীদের বাধা দেয় এবং তাদের একটি ঘরে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মুজাহিদ আলম জানান যেখানে একটি ক্লাবে যুবক ছেলেদের আড্ডার জায়গা সেই ক্লাব ঘরে কি করে এলাকার গর্ভবতী মহিলা ও শিশুদের স্বাস্থ্য পরিসেবা দেওয়া সম্ভব।তাছাড়া ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ইসলামপুর,আলিপুর ও রামপুর তিনটি গ্রামের শিশু ও মহিলারা স্বাস্থ্য পরিসেবা নেওয়ার জন্য ছুটে আসেন।তাই এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেলে ওই তিনটি গ্রামের লোককে নাজেহাল হতে হবে।তাই স্থানীয়দের দাবি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিজস্ব কক্ষ গুলি সংস্কার করে সেখানেই পরিসেবা দেওয়া চালু হোক।প্রধান স্বাস্থ্যকর্মী গীতা রায় জানায় আমাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বন্যার সময় নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেখান থেকে পরিসেবা দেওয়া যাচ্ছে না,তাই পার্শ্ববর্তী একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে প্রায় পাঁচ বছর ধরে পরিসেবা দিয়ে আসছিলাম।কিন্তু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে চাপ আশায় বাধ্য হয়ে বইএমওএইচ কে মৌখিকভাবে জানিয়ে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিসেবা সাময়িক পার্শ্ববর্তী একটি ক্লাব ঘর থেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।কিন্তু গ্রামবাসীদের অভিযোগ থাকায় বর্তমানে এখান থেকেই পরিসেবা দেওয়া হবে যতদিন না পর্যন্ত উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র মেরামত করা হচ্ছে।