নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- নিজেদের ভালবাসাকে অগ্নিসাক্ষী করে যে চারহাত এক হয়েছিলো আট বছর আগে, স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে প্রেমিকের সেই দুহাত স্বয়ং স্বামী মিলিয়ে দিলো স্ত্রীর দুহাত।
ঘটনাটি নদীয়ার শান্তিপুর এবং ফুলিয়ার। ফুলিয়ার বসাক করার বাসিন্দা রাজেশ বসাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল পাশের রায়পাড়ার সোনালী রায়।
রাজেশ যান্ত্রিক তাঁত শ্রমিক, উপার্জন কম না হলেও পরিবারে একটু কম দিতে পারেন। হয়তো এটাই তার দোষ। স্ত্রীর অন্ধ ভালবাসায় মোহিত হয়ে, বাবা মায়ের দায়িত্ব সামলালেও, স্ত্রী এবং একমাত্র কন্যাকে নিয়ে আলাদা ভাড়া থাকতেন তিনি। অভিভাবক বিহীন ভাবে, থাকা এবং পরবর্তীতে স্ত্রকে মোবাইল কিনে দেওয়াই কাল হয়েছিল তার।
শান্তিপুর মাতাল গড় বাজার এলাকায় বাড়ি রাহুল দত্তের সাথে, এই মোবাইলের মাধ্যমে বন্ধুত্বর শুরু , রাজেশের কথায় তা গড়িয়েছিলো হোটেলের বিছানাতেও।
তবে ছয় মাস আগে প্রথম যখন সম্পর্কের কথা রাজেশ জানতে পারে, তখন স্ত্রীর প্রেমিক রাহুলের বাড়িতে ফোন করে জানায় বিষয়টি । সেখান থেকে নিজের ছেলের দোষ স্বীকার করে বলা হয় ও শুধু তোমার শ্রী নয় অনেকের সাথে জড়িত তাই তুমি, নিজের স্ত্রী পরিবার নিয়ে ভালো থাকো। ওকে আমরা শাসন করছি। এরপর শাসন তো দূরে থাক, সম্পর্কের গভীরতা আরো বাড়তে থাকে। আত্মহত্যা ভয় দেখিয়ে রাজি করায় নিজের পরিবারকেও । যেহেতু স্ত্রী সোনালীর মা মারা যাওয়ার পর , বাবা দ্বিতীয় বিবাহ করে এবং সেই কারণেই কোন যোগাযোগ নেই তাদের সাথে, কিন্তু অভিযোগ জানানোর জায়গা নেই, দেশের আইন কানুন সবই মহিলাদের পক্ষে। যে কোন মিথ্যা মামলায় যখন তখন রাজেশের বাবা-মা অথবা সে নিজেও ফেঁসে যেতে পারে, আত্মহত্যা করতে পারে তার স্ত্রী সোনালী অথবা প্রেমিক রাহুল।
তাই স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত পরকীয়ার জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে, এবং দুটি প্রাণ বাঁচাতে ভালোবাসা আহুতি দেয় সে।
গতকাল সন্ধ্যায়, স্ত্রীকে শেষবারের মতন ইচ্ছার কথা জানতে চায়, গর্ভধারিনী মা বলে একমাত্র মেয়ের দায়িত্ব নিতে পারবে না সে, নিঃশর্ত ডিভোর্স দিতে হবে , এবং বিবাহের সামান্য কিছু উপহার যা সে পেয়েছিলো বিবাহে তা ফেরত দিতে হবে সবই। রাজেশ রাজী হয়, তার বাবা-মায়ের সম্মতিক্রমে। স্ত্রী কন্যাকে বাড়ি থেকে নিয়ে এসে, স্ত্রীকে প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে, আইনের মাধ্যমে ডিভোর্স করিয়ে, একমাত্র সন্তানকে নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফেরে সে। প্রায় সাথে সাথেই, ডিভোর্সের পর নতুন জীবনে পদার্পণের জন্য আইনের কাছে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সোনালী এবং রাহুল আবেদন জানায়।
যদিও এ বিষয়ে, কোন মতামত দিতে রাজি হয়নি সোনালী বা রাহুল কেউই। এমনকি রাহুলের পরিবার থেকে বলা হয় তাদের একটা পারিবারিক সম্মান আছে, সেক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশ হোক তা তারা চায় না। কিন্তু রাজেশ সংবাদ প্রকাশ করতে আগ্রহী হয়, এ সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য। তার দাবি, মহিলাদের জন্য আইন এক সময় দরকার ছিল ঠিকই তবে আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে বর্তমানে লাঞ্ছিত হচ্ছে পুরুষ। তাই এই খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পর হয়তো শিশুদের ভবিষ্যৎ এবং পুরুষদের জন্যও সংশোধিত হতে পারে আইন।
Home রাজ্য দক্ষিণ বাংলা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরে, একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব মাথায় নিয়ে, নির্ঝঞ্ঝাট...