গভীর রাতে ধাবার সামনে চলছে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল গালাগালি, ধস্তাধস্তি এবং মারপিট। 

0
141

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা:—- গভীর রাতে ধাবার সামনে চলছে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল গালাগালি, ধস্তাধস্তি এবং মারপিট।  অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন মালদার এক তৃণমূল নেতা। অপরদিকে একজন মহিলা মোবাইলে সেই গোলমালের ঘটনার ছবি ক্যামেরাবন্দি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দিয়েছে। আর তাতেই তুমুল শোড়গোল পড়ে গিয়েছে মালদায়।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, গভীর রাতে পুরাতন মালদা থানার নারায়ণপুর সংলগ্ন জাতীয় সড়কের ধারে ওই ধাবা সারারাত খোলার অনুমতি পুলিশ প্রশাসন দেয় কিনা। যদিও দূরপাল্লার বিভিন্ন যানবাহন চালক , খালাসী এবং যাত্রীদের জন্যই গভীর রাত পর্যন্ত ধাবা খুলে রাখার কথা। একথা একবাক্যে স্বীকার করেছে পুরাতন মালদা থানার এক পুলিশ কর্তা । কিন্তু নারায়ণপুর এলাকার নামকরা ওই ধাবার খাবারের মূল্য এতোটাই যে সেখানে সাধারণ গাড়ির চালক বা যাত্রীদের পক্ষে কিনে খাওয়াটা সম্ভব নয়।  ফলে রাত বাড়তেই ওই ধাবাতে বাইরে থেকে মদ্যপান করে এসে উল্লাস বিনোদনে করছে একশ্রেণীর মানুষ বলে অভিযোগ। সারারাত ধাবা খুলে রাখার অনুমতি কিভাবে পাওয়া যায়। সে সম্পর্কে জানাতে পারে নি পুলিশ এবং প্রশাসনের একাংশ কর্তারা। 

এদিকে সোমবার গভীর রাতের গোলমালের ঘটনার পর ওই ধাবার মালিক রাধে সরকার অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ২৫ বছরের পুরনো ধাবা। আমার এখানে পানশালা নেই । কাজেই কোনো রকম বাজে কাজ হয় না। সারারাত ধাবা খোলা থাকে। এটা প্রথম থেকে হয়ে আসছে। সারারাত ধাবা খোলার ক্ষেত্রে কোনো অনুমতি নিতে হয় কিনা সেটাও জানা নেই। কিন্তু রাতের বেলায় অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে কিনা তার উত্তর কে দিবে। সেই বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে, ওই ধাবার মালিক। 

পুরাতন মালদা থানা আইসি হীরক বিশ্বাস বলেন, সারারাত ধাবা খোলা থাকবে কিনা সেটা সরাই লাইসেন্সে উল্লেখ থাকবে।  কিন্তু কোথাও কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশ যথেষ্ট নজরদারি চালাচ্ছে। এখন কোথায় কি ধরনের গোলমাল হচ্ছে সেটা বলতে পারব না। একটা ঘটনার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে পুলিশের নজরদারি সর্বত্রই রয়েছে। আর সারারাত ধাবা খেলার ব্যাপারে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বলতে পারবেন।

উল্লেখ্য , সোমবার গভীর রাতে বাইরের জেলার বাইক রাইডার দুই ফ্যামিলিদের সঙ্গে মালদার এক তৃণমূল নেতার তুমুল বচসা শুরু হয় নারায়ণপুর এলাকার একটি নামকরা ধাবার সামনে। আর সেই গোলমালটি দেখা যায় কখনো ধাবার ভিতরে চলছে। আবার কখনো ধাবার সামনে চলছে। আর এই গোলমালের ঘটনার পুরো বিষয়টি একজন মহিলা তিনি তার মোবাইলে ক্যামেরা বন্দী করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দিয়েছেন।

 সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে মালদার জনৈক তৃণমূল নেতা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছেন, এমনকি দুই পক্ষের হাতাহাতি চলে। 

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যম থেকে জানা গিয়েছে , গোলমালের সূত্রপাত ওই তৃণমূল নেতার চার চাকা একটি গাড়ি অপরদিকে স্ট্যান্ড করে থাকা কয়েকটি মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। যে মোটরবাইক নিয়ে দুইজন ফ্যামিলি, বাইরে থেকে এসেছিলেন। তারা বাইক রাইডার দম্পতি বলে জানিয়েছেন। 

পিউ রায় দাস নামক একজন মহিলা সমস্ত ঘটনার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ভাইরাল করেছেন । সেখানে দেখা যাচ্ছে রীতিমতো মাটিতে লুটোপুটি করছে ওই তৃণমূল নেতা এবং জনৈকও আরেক ব্যক্তি। তাদেরকে ছড়ানোর জন্য দুই পক্ষের অনুগামীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অবাক প্রান্তে ওই ধাবার কর্মীরা দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে। মালদার নারায়ণপুর এলাকার গভীর রাতের এমন ঘটনার বিষয়টি নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ওই ধাবায় পানশালা নেই। কিন্ত অভিযোগ, আশেপাশের পানশালা থেকে মদ্যপান করেই ওই ধাবাতে গভীর রাতে ভিড় বাড়ছে। আর হামেশাই গোলমাল এর ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় কিছু মানুষ সারারাত ওই ধাবা খুলে রাখার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন।

মালদার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, গোলমালের বিষয়ে কিছু জানা নেই। তবে সারারাত ভাবা খোলার ব্যাপারেও সরকারি গাইডলাইন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

ছবি ———–  পুরাতন মালদার নারায়ণপুর এলাকায় ধাবার সামনে গোলমালের মুহূর্ত।

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংগৃহীত ছবি।