করমন্ডল এক্সপ্রেসে রেল দুর্ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ শান্তিপুরের সুজয়।

0
334

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা :-দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে মাটির ঘরে বাস করেও মেলেনি, সরকারি গৃহ আবাস যোজনার আর্থিক সহযোগিতা। নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের গয়েশপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সিংহ রায়ের ছোটো ছেলে মাধ্যমিক পাস করার পরেই, পরবর্তী পড়াশোনা না করে ব্যাঙ্গালোরে হোটেলের কাজে যায় আজ থেকে দেড় বছর আগে। দুই বোন এক ভাই মা-বাবার অভাবের সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে, তার যাওয়ার উদ্দেশ্য একটাই ছিলো, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বা প্রধান কেউ কখনো সরকারি ঘর অনুমোদন করেনি, ৫০ বছর ধরে ধরে এভাবেই মাটির বাড়িতে বাস করতে হয়। ঝড় জলের দিনে পরিবারের সদস্যদের আশ্রয় নিতে হয় প্রতিবেশী অথবা আত্মীয়র বাড়িতে। আর তার থেকেই পরিত্রান পেতে , সুজয়ের ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়া।
গতকাল সকালেও সুজয়ের মায়ের সাথে কথা হয়েছিলো, বাড়ি ফিরছি বলে। সেই অনুযায়ী ছেলের পছন্দসই রান্না করে রাখলেও, রাত রাত ৯ টা নাগাদ অন্যের মোবাইল থেকে ফোন আসে, জানতে পারে সুজয় পড়ে রয়েছে রেলের চাকার তলায়। নিজেকে কিছুতেই বের করতে পারছে না, পরিস্থিতি এতটাই শোচনীয় ছিল যে জন্মদাত্রী মা সুজাতা দেবী কে একপ্রকার না ফেরার কথাই জানাতে বাধ্য হয়েছিল ওই অপরিচিত ফোন করা ব্যক্তি।
বোন রুপসা, বারংবার চেষ্টা করলেও হয়তো ব্যস্ত থাকার কারণেই উদ্ধারকারীর নাম্বারে বারংবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি আর ফোন তুলতে পারেননি হয়তো। সারারাত দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়ে, কেটেছে গোটা পরিবারের। ভোররাতে একটি হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ছেলের গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসারত একটি স্টিল ছবি পেয়ে খানিকটা দুশ্চিন্তা মুক্ত হয় পরিবার।
সকালে শান্তিপুর থানার প্রশাসন বাড়িতে পৌঁছানোর পর, সরকারি বিভিন্ন হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন করে জানতে পারে ছেলের শারীরিক পরিস্থিতি ভালো নয়। এক নিকট আত্মীয় এবং এক প্রতিবেশী আজ সকালে রওনা দেয়, সুজয়ের চিকিৎসারত হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।
বাবা সারদা সিংহ রায়ের কাতর প্রার্থনা, ছেলে ছেলে বাড়ি ফিরুক সুস্থ হয়ে , তিনি আর কিছু চান না।
পাশাপাশি ব্যাঙ্গালোরে কাজে গিয়েছিলেন নদীয়ার নাকাশিপাড়ার বান্দাখোলা গ্রামের বাসিন্দা রহিম শেখ। বাড়ি ফিরছিলেন করমন্ডল এক্সপ্রেসে।বাড়ি ফেরার পথে রেল উড়িষ্যার বালেশ্বরে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন। পরিবার দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।