মনিরুল হক, কোচবিহার: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিরোধীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের হুমকি, কোথাও বা বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের মারধরের ঘটনা ঘটেই চলেছে। তারপর মনোনয়ন নিয়ে শাসক বিরোধী চর্চা। এই পরিস্থিতিতে এবার প্রকাশ্যে ব্লক সভাপতিকে বিরোধী শূন্য করার বার্তা দিতে দেখা গেল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহকে। যা নিয়ে জেলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা। এই ধরনের মন্তব্যের বিরোধিতা করা হয়েছে বিজেপি।
এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ তার ফেসবুক ওয়ালে তিনি দিনহাটা ব্লক সভাপতি দীপক ভট্টাচার্য উদ্দেশ্য করে লেখেন “দীপক ভট্টাচার্য সহ ১২ অঞ্চল সভাপতি, অন্যান্য নেতাদের কাছে আমার দাবি,বিরোধী শূন্য ব্লক চাই।” তার এই পোস্টটি ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তিনি এই পোস্টের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে অশান্তি করার জন্য তাদের দলের কর্মীদের উজ্জীবিত করছেন। এই মন্তব্যকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।
এই মন্তব্য নিয়ে মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, “আশ্চর্য! আমি আমাদের ব্লক সভাপতি, কর্মীদের টার্গেট বেঁধে দেব। উজ্জীবিত করব। এতে অস্বাভাবিক কী আছে? আমার নাতি পরীক্ষা দিতে চায়, আমি চাইব না সে পরীক্ষায় ১০০ শতাংশ নম্বর পাক।” টার্গেট বেঁধে দিলে সেটা হবেই এরকম কোনও বিষয় নেই, তবে কর্মীরা যাতে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক লড়াই করতে পারে সে কারণেই এই মন্তব্য বলে দাবি করেন তিনি।
মন্ত্রী উদয়ন গুহের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, “দিনহাটায় উদয়ন গুহ সন্ত্রাস করে ইতিমধ্যে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। আর সন্ত্রাস করে তিনি বিরোধী দলকে শূন্য করার লক্ষ্যে এ ধরণের পোস্ট করছেন। তাতে কোন ভাবে বিজেপি কর্মী বা নেতারা বিচলিত নয়। তবে একজন মন্ত্রী এধরনের কথা তার ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করে বিরোধীদের উপর আক্রমণ করার জন্য দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন। তাতে মনে হয় কিছু লাভ হব3 না।”
যদিও উদয়ন গুহের পালটা দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে উন্নয়ন করেছেম সেটা দেখেই মানুষ ভোট দেবে। তাই কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছি বিরোধী শূন্য করতে হবে। এতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে জেলায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমনিতেই দিনহাটা সহ গোটা জেলার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। জুন মাসের শুরুতেই এক বিজেপি নেতার বাড়ি ঢুকে গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। এমত অবস্থায় ভোট যত এগিয়ে আসবে, পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলে।