সদাইপুর, সেখ ওলি মহম্মদঃ- বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে বরপক্ষ ও কনে পক্ষের মধ্যে একটি সম্পর্ক মজবুত হয়। কিন্তু বিবাহের পরদিনই যদি কোনো অশান্তি হয় তাহলে সেই সম্পর্ক আর টিকে না। তাও আবার প্রীতিভোজের দিনে যদি বরপক্ষ কনে পক্ষের লোকজনদের বেধড়ক পেটায় তাহলে তো আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনই চিত্র ধরা পড়ল বীরভূম জেলার সদাইপুর থানার গুনসিমা গ্রামে। জানা যায়, কনেযাত্রী পাঁচজন বেশি গিয়েছেন। সেটাই যে এত বড় গন্ডগোলের কারণ হয়ে দাঁড়াবে, কেউ ভাবতেই পারেননি। কিন্তু মাত্র ৫ জন অতিরিক্ত অতিথি দেখেই মাথা গরম হয়ে গেল বরপক্ষের। অভিযোগ, কনেপক্ষের তরফে আসা লোকেদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। বেশ কয়েকজনের হাত ভেঙে গিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন স্বয়ং কনেও! আহত অবস্থায় বেশ কয়েকজনকে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্ত্তি করা হয়েছে।কনের ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে বউভাতের দিনে বর-সহ বরপক্ষের চারজনকে গ্রেপ্তার করল সদাইপুর থানার পুলিশ। উল্লেখ্য, শনিবার দুবরাজপুর থানার লোবা পঞ্চায়েতের শিমুলডিহি গ্রামের সুরিয়া খাতুনের সঙ্গে সদাইপুর থানার গুনসিমা গ্রামের শেখ আতিকুলের মুসলিম মতে বিয়ে হয়। রবিবার বউভাত খেতে শিমুলডিহি থেকে ৩০ জন কনেযাত্রী যায় গুনসিমা গ্রামে। কিন্তু ২৫ জন কনেযাত্রী নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। পরিবর্তে ৫ জন বেশি অতিথি নিয়ে যাওয়ায় বচসা শুরু হয়ে যায় দুই পক্ষের। সুরিয়ার ভাই আবুল হোসেনের অভিযোগ, ”বরপক্ষ আমাদের লাঠি-বাঁশ দিয়ে আচমকা মারতে শুরু করে। মাটিতে ফেলে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। আকিলা বিবি, মনিরা বিবি ও শামসুরনিহার বিবির শাড়ি ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। তাদের পরনের কাপড় জড়িয়ে প্রাণে মারার চেষ্টাও হয়।” এসবের জেরে জখম হন কনেও। তাঁকে ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে প্রথমে দুবরাজপুর গ্রামীন হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পরে সিউড়ি সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। অন্যদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সদাইপুর ও দুবরাজপুর থানার পুলিশ গুনসিমা গ্রামে যায়। অভিযোগের ভিত্তিতে বর শেখ আতিকুল, তার বাবা শেখ কালো, দুই ভাই সেখ বাদশা ও সেখ আনিসুরকে গ্রেপ্তার করে সদাইপুর থানার পুলিশ। অভিযুক্ত বাকি পাঁচজন পলাতক বলে পুলিশ সূত্রে খবর। আজ ঐ চারজনকে সিউড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।