গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারের অভিনব প্রতারণার খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন গ্রামের সাধারণ নিরীহ মানুষেরা।

0
306

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- —-এক অভিনব প্রতারণা।গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারের অভিনব প্রতারণার খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন গ্রামের সাধারণ নিরীহ মানুষেরা।গ্রামের মানুষদের বোকা বানিয়ে ওষুধের নির্ধারিত মূল্য কয়েক গুণ বাড়িয়ে ক্রমাগত মানুষদের ঠকিয়ে চলেছিলেন এলাকারই এক হাতুড়ে ডাক্তার।চোখের চিকিৎসা করার নামে চোখে ড্রপ দিয়ে চোখ ঝাপসা করে ওষুধের দাম মার্কার পেন দিয়ে বাড়িয়ে রোগীদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা বেশি নিচ্ছিলেন এলাকারই এক হাতুড়ে চিকিৎসক এমনটাই অভিযোগ উঠেছে।এই ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ওই হাতুড়ে ডাক্তারের নামে।অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,
হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার পিপলা গ্রামের বাসিন্দা তথা হাতুড়ে ডাক্তার বাবলু চক্রবর্তী চোখের চিকিৎসা করার নামে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।২৭ টাকা মূল্যের চোখের ড্রপ নেওয়া হচ্ছে ১২৭ টাকা,৮৬ টাকার চোখের ড্রপ নেওয়া হচ্ছে ১৮৬ টাকা ও ৯২ টাকার ওষুধের মূল্য নেওয়া হচ্ছে ১৯২ টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,বাবলু চক্রবর্তী হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় চোখের কোয়ার্ক ডাক্তার বলে পরিচিত।নিজের বাড়িতে চেম্বার খুলে সারাদিন ধরে রোগী দেখেন।চোখের সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন গ্রামের মানুষ হাজির হচ্ছেন বাবলু ডাক্তারের কাছে।আর সেই সুযোগে ওই চিকিৎসক প্রতারণার নয়া ফাঁদ পেতে রোগীর সঙ্গে প্রতারণা করে চলেছেন।যেসব রোগী তার কাছে আসেন তাদের প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চোখের ড্রপ তার কাছেই কিনতে হয়।এক্ষেত্রে ওষুধের নির্ধারিত মূল্য পাল্টে দিচ্ছেন ওই ডাক্তার বাবু।মার্কার পেন দিয়ে বাড়িয়ে দিচ্ছেন মূল্য।এমনই প্রতারণার শিকার হলেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংরুয়া গ্রামের বাসিন্দা তথা দুই ভাই রতন সিং ও সন্তোষ সিং।অভিযোগকারী রতন সিং জানান,তার চোখে কনজাংটিভাইটিস অর্থাৎ জয় বাংলা রোগ ধরা পড়ে কয়েকদিন আগে। তিনি তার চোখের চিকিৎসা করানোর জন্য পিপলা গ্রামের ওই হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে যান।সেখানে তার চোখে একটি ড্রপ দেন ডাক্তার বাবু।সাথে সাথেই তিনি চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করেন। এরপরই ওই চিকিৎসক তাকে চোখের বেশ কয়েকটি ওষুধ দেন তার চেম্বার থেকে।এবং তার দাম বাবদ ৫৬০ টাকা নিয়ে নেন।এরপর রতন সিং বাড়ি ফিরে আসে।সেখানে এসে তিনি ওষুধের দাম মিলিয়ে দেখেন তার কাছ থেকে ৩০০ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে এবং ওষুধের দাম অনেক কম এবং সেই দামের উপর পেন চালিয়ে দাম‌ গুলি বাড়ানো হয়েছে। এরপরে তিনি আবার ওই চিকিৎসকের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি অস্বীকার করেন।খবর পেয়ে ওই চিকিৎসকের বাড়িতে ছুটে যান এলাকার বাসিন্দারা।তারাও অভিযোগ করেন এর আগেও এইভাবে এই হাতুড়ে চিকিৎসক রোগীদের কাছ থেকে ঠকিয়ে বেশি দাম নিয়েছেন বিভিন্ন ওষুধের। এরপরই ওই চিকিৎসকের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কয়েকজন রোগী এবং তাদের আত্মীয়রা।বাধ্য হয়ে ওই চিকিৎসক নিজের ভুল স্বীকার করেন।এরপর রতন সিং ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।

যদিও নির্ধারিত মূল্য থেকে বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন কোয়ার্ক ডাক্তার বাবলু চক্রবর্তী।

হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীন হাসপাতালের বি এম ও এইচ অমল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, সরকারি নির্ধারিত মূল্য থেকে ওষুধের দাম বেশি নেওয়া গুরুতর অপরাধ। এছাড়াও ওই কোয়ার্ক ডাক্তারের কোন নির্দিষ্ট লাইসেন্স রয়েছে কিনা তা আমাদের জানা নেই।আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাচ্ছি।