দামাল মেয়ে কুহেলি (ধারাবাহিক উপন্যাস, একাদশ পর্ব) : দিলীপ রায় ( ৯৪৩৩৪৬২৮৫৪)।

0
564
      কুহেলির ভীতি তখনও কাটেনি । সারা শরীরে আতঙ্কের ছাপ ।  গত রাত্রের ঘটনা কুহেলিকে ভাবিয়ে তুলেছে । দৈনন্দিন জীবনে সাধারণত তার একটাই সমস্যা, এলাকার উটকো ও উঠতি ছেলেপুলে নিয়ে । কেননা যুবতী কুহেলির শারীরিক সৌন্দর্য  সকলের নজরকাড়া । গাঁয়ে গঞ্জের ছেলেপুলে ছাড়াও তার দোকানের খরিদ্দারদের মধ্যেও অনেকের কুহেলির  প্রতি অতিরিক্ত টান । সেটা সামলাতে কুহেলিকে হিমসিম অবস্থা । তার উপর জুটলো নারী পাচারকারীদের কুৎসিত চক্রান্ত ।  কানাঘুঁষায় কুহেলি যতোটুকু বুঝেছে, তাকে বিদেশে চালান করে দিতে পারলে অনেক টাকার লেনদেন  ! যার জন্য নারী পাচারকারীদের  কুহেলি এখন টার্গেট ।  পুলিশের সক্রিয় সহযোগিতায় এযাত্রায়  নিস্তার পেলো বটে, কিন্তু ভবিষ্যতে এ্যালার্ট না থাকলে যে কোনো সময়ে বিপদ অনিবার্য ।   
       “চিনি ছাড়া দুটো চা । সঙ্গে প্যাটিস বিস্কুট ?”  কাঞ্চন নগরের সতীশ কাকা কুহেলিকে বললেন । সতীশ কাকার সঙ্গে কাকীমা রয়েছেন  ।
        “এত সকালে কোথায় চললেন সতীশ কাকা ?” কুহেলি কৌতুহলবশত জিজ্ঞাসা করলো ?   
       “আর বলো না । তোমার কাকীমার তিনদিন যাবৎ জ্বর । কিছুতেই কমছে না । গত রাত্রে তীব্র আকার ধারন করেছিল । জলপট্টি দিয়ে কোনোরকমে সামাল দিয়েছি ।  এখন চললাম ভরতপুরের কল্যাণ ডাক্তারবাবুর কাছে । বাস আসতে দেরী, সুতরাং তোমার দোকানে বসে চা খাওয়া যাক ।“ কুহেলির দিকে তাকিয়ে আবার সতীশ কাকা জিজ্ঞাসা করলেন, “শুনলাম, তোমাকে নাকি নারী পাচারকারীরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো ? এটা কী সত্যি ?” 
        “পাচারকারীরা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো”  এই খবরটা আপনাকে কে জানালো কাকা ? 
          “গাঁয়ে এটা নিয়ে যত্রতত্র আলোচনা চলছে । সেখান থেকে শোনা । আমি অবশ্য কথাটা বিশ্বাস করিনি । তোমার কাছে আসল ঘটনা শোনার জন্য উদগ্রীব !” সতীশ কাকা  উত্তর শোনার জন্য কুহেলির দিকে তাকিয়ে রইলেন ।  
         “নারী পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়েছিলাম, এটা ঠিক । কিন্তু পুলিশের সক্রিয় তৎপরতার জন্য বেঁচে গেছি । নারীপাচারকারীরা অবশেষে তুলে নিয়ে পালাতে পারেনি ।“ 
          “বাস এসে গেছে । আমরা চললাম ।“  বলেই সতীশ কাকা ও কাকীমা বাসে উঠে পড়লেন । 
        কুহেলি বুঝতে পারলো, তাকে নিয়ে গাঁয়ের মানুষের মধ্যে ভুল খবর রটেছে যেটা কাম্য নয় । তা ছাড়া কিছু মানুষ তিলকে তাল করছেন । তাই কুহেলি ঠিক করলো সন্ধ্যাবেলা  কানাই কাকাকে বলবে সঠিক খবরটা গাঁয়ের মানুষদের বলতে । যাতে মানুষ আর ভুল খবর রটাতে না পারেন   ! সেই মতো কানাই কাকা  গাঁয়ের মানুষদের ঘটনাটা বোঝালো এবং গাঁয়ের মানুষ ব্যাপারটা বুঝতে পেরে সকলেই  কুহেলির পাশে দাঁড়ালেন । কুহেলিকে অভয় দিয়ে গ্রামবাসীরা জানিয়ে দিলেন, “যেকোনো সমস্যায়  গ্রামবাসীরা তার পাশে আছে  ।“
       গ্রামবাসীদের স্বতস্ফূর্ত  সাড়া পেয়ে কুহেলির চোখে জল এসে গেলো । দুর্দিনে  গ্রামবাসীরা তার পাশে আছেন এটা জেনে আবেগে কুহেলির চোখে জল । হাত জোড় করা  অবস্থায় কুহেলি গ্রামবাসীদের সামনে দাঁড়িয়ে রইলো । মুখ ফুটে কিছু বলতে পারলো না । শুধুমাত্র চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো মাটিতে । 
      তারপর বেশ কিছুদিন কেটে গেলো । 
      কুহেলি দোকান নিয়ে ব্যস্ত । 
       এদিকে সরকারি তৎপরতায় কাঞ্চন নগরের মোড়ের রাস্তা প্রশস্ত করার কাজ শুরু হলো  । একই সাথে ভরতপুর যাওয়ার রাস্তা বাড়ানোর কাজ শুরু হলো যাতে রাস্তা দিয়ে অন্তত তিনটি গাড়ি একসঙ্গে চলতে পারে  অর্থাৎ আপে দুটি ও ডাউনে একটি কিংবা আপে একটি ও ডাউনে দুটি বাস বা গাড়ি অনায়াসে যাতায়াত করতে পারে । বলা চলে একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ  ! 
     কাঞ্চন নগরের মোড়ের রাস্তা বড় হলেও, সমস্ত দোকানদারদের দোকান ঘর যার যার জায়গায় রইলো ।  যদিও তাদের দোকান সরাতে হলো । দোকান সরাতে গিয়ে লাভ হলো কুহেলির । এই সুযোগে রাস্তার পাশে তার দোকান ঘর আরও বাড়াতে  পারলো । ফলে অনেকটা জায়গা জুড়ে তার দোকান ঘর । দোকানের মধ্যে একদিকে খরিদ্দারদের বসার জায়গা  ও অন্যদিকে দোকানের সাজ-সরঞ্জাম । সুযোগ পেয়ে কুহেলি পুরো জায়গাটা জুড়ে মুলি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘর বানালো । ভবিষ্যতে আর্থিক  সুযোগ ঘটলে দোকান ঘর পাকা করার চিন্তা তার মাথায় ঘুরপাক খেলো  । আপাতত মুলি বাঁশের বেড়া ও উপরে টিনের চালা । 
   রাস্তা বড় করার জন্য কুহেলির আরও একটা সুবিধা । সেটা হচ্ছে, কুহেলির দোকান ঘরটি ঠিক বাস স্ট্যান্ডের প্যাসেঞ্জারদের বসার ঘরের পাশে । বসার ঘরটি আধুনিকভাবে স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে তৈরী করা । ফলে বাস স্ট্যান্ড দিয়ে যাতায়াত করা সমস্ত প্যাসেঞ্জারের দৃষ্টি  কুহেলির দোকানে পড়বেই । সুতরাং তার দোকানে খরিদ্দার বাড়বে বই কমবে না ।  
    মুলি বাঁশের বেড়া দিয়ে দোকান ঘর বানাতে গিয়ে কিছুটা ধার করতে হলো কুহেলিকে । তবে দোকানের বেচা-কেনা লক্ষ করে তার বিশ্বাস, অচিরেই কুহেলি ধার শোধ করতে পারবে । 
     ক্রমশ কাঞ্চন নগর মোড়ের বাস স্ট্যান্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । লোকজনের যাতায়াত বাড়ছে । অনেক দোকান হওয়ার কারণে স্থানীয় মানুষের আনাগোনা বেড়েছে । সবজির দোকান, মাছ-মাংসের দোকান কাঞ্চন নগরের মোড়  জুড়ে  বসছে । বিশেষ করে সবজিওয়ালা রাস্তার পাশে চার কোনায় চারটি বাঁশ পুঁতে মাথার উপরে পলিথিন টাঙিয়ে সবজি নিয়ে রোজ বসছে । মাছের ব্যবসায়ীরাও  তদ্রূপ,  মাথার উপর শেড দিয়ে মাছ বিক্রি করছে । ফলে কাঞ্চন নগরের মোড় এখন জমজমাট ! 
    কুহেলির দোকান আরও সাজালো । এখন তার দোকানে চা ছাড়াও রুটি-ঘুগনি পাওয়া যাচ্ছে । এছাড়া রয়েছে পাকা কলা ও পাউরুটি । অনেক সবজিওয়ালা কিংবা মাছওয়ালা পাউরুটি ও কলা খেতে অভ্যস্ত । তাই সবরকম ব্যবস্থাপনা । কুহেলির দোকানের খাবারের গুণগত মান উন্নত থাকার কারণে খরিদ্দারের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে । বলা চলে খরিদ্দারদের ভিড় চোখে পড়ার মতো । সমস্ত খরিদ্দারদের আবদার হাসমুখে সামলায় কুহেলি । কুহেলির চরিত্রের এটা একটা বড় গুণ, হাসি মুখে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার । ইতিমধ্যে, কুহেলির খরিদ্দারদের দাদা, কাকা, জ্যাঠা, পাতানো হয়ে গেছে । লোহাদহের গুণধর বাড়ুই টোটো চালান । বয়স সত্তরের আশ-পাশ । ছেলে-বৌমা তাঁকে দেখ-ভাল না করার জন্য তিনি নিত্য টোটো চালান । সারাদিনে  যেটুকু আয়, তাতেই তাঁর ডাল-ভাত জুটে যায় । সেই গুণধর টোটোওয়ালা কুহেলিকে নাতনি সম্বোধনে ডাকেন । ভোরবেলায় ঘুম ভাঙলেই  টোটো  নিয়ে সোজা কাঞ্চন নগরের মোড় । কাঞ্চন নগরের মোড়ের মাছের ব্যবসায়ী লোহাদহের সুখকরকে  টোটো থেকে নামিয়ে গামছায় কপালের ঘাম মুছতে মুছতে কুহেলির দোকানে ঢুকে প্রথমেই তাঁর ডাক, “নাতনী, বড্ড খিদে পেয়েছে । আমাকে চা-পাউরুটি দাও !” ঐ ডাক শুনে কুহেলি হন্তদন্ত হয়ে পাউরুটি সেঁকে একটা প্লেটে সাজিয়ে গুণধর দাদুর সামনে ধরে বলবে, “পাউরুটি রেডি । চায়ের সাথে ভিজিয়ে খাও ।“ যদি তরকারি বা ঘুগনি তৈরী হয়ে যায়, সেই ক্ষেত্রে দাদুকে তরকারির সাথে পাউরুটি  পরিবেশন এবং তারপর একগাল হাসি । ঐ হাসি দেখে মাঝে মাঝে দাদুকে বলতে শোনা যায়, “লোকে ঔষধ খাইয়ে লোককে পাগল বানায়, কিন্তু তুই তোর হাসি দিয়ে লোককে পাগল বানাবি !” 
    “তুমি কী আমার হাসিতে পাগল, দাদু ?”  দাদুর দিকে আড়চোখে তাকিয়ে কুহেলি কথাটা জিজ্ঞাসা করলো । 
   বয়স থাকলে অবশ্যই পাগল হতাম ! তারপর দাদুর প্রাঞ্জল হাসি ! সেই হাসির তাৎপর্য  বোঝা খুব কঠিন ! কিন্তু গুণধর দাদুর অকৃত্রিম ভালবাসা কুহেলির চলার পথের  সারাদিনের তাজা অক্সিজেন ! প্রায়দিন গুণধর বাড়ুই কুহেলির দোকানের প্রথম খরিদ্দার । তাই কুহেলিকে খুব ভোরবেলা এসে দোকান খুলতে হয় । প্রথম প্রথম অতো ভেরবেলায় দোকান খুলতে বিরক্ত লাগতো কুহেলির । তা ছাড়া ঘুম থেকে ভোরবেলায় ওঠা কুহেলির এই সেদিন তার বাবা থাকা পর্যন্ত অভ্যাস ছিলো না । কিন্তু এখন, পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়ে ঘুম থেকে ভোরবেলায় ওঠা ।  
   দুপুরবেলায় প্রত্যেকদিন দোকানেই নিজের জন্য ভাত বানিয়ে নেয় । সাধারণ মানের  খাওয়া-দাওয়া । সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে রাত্রিতে ঘরে ঢোকা । ঘরে ঢুকে  স্থান সেরে খাওয়া-দাওয়া এবং তারপর বিছানায় শুতে যাওয়া । ছোটবেলার ছোট্ট কুহেলি এখন চায়ের দোকানদার । ভাবতেই  তার কেমন লাগে । অথচ বেঁচে থাকার  জন্য স্বল্প পুঁজিতে চায়ের দোকান দেওয়া ছাড়া অন্য কোনোভাবে উপার্জনের পথ খোলা ছিলো না ।  তবে এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার ক্রমশ উন্নতি হওয়ার কারণে কুহেলির ইচ্ছা, জায়গাটার উপর আধুনিক মানের রেস্টুরেন্ট খোলা ! যার জন্য রেস্টুরেন্ট খোলার আদব-কায়দা, বিভিন্ন রকমের রান্নার রেসেপি, রান্নার টিপস,  ইত্যাদি নিয়ে ইতিমধ্যে পড়াশুনা শুরু করে দিয়েছে  ।  মানুষের রুচি ও স্বাস্থ্যকর খাবারের  রেস্টুরেন্ট বানানোর প্রতি তার খুব ঝোঁক ! রেস্টুরেন্ট খুলে  উপার্জনের মাধ্যমে  সারাজীবন বেঁচে  থাকতে চায় কুহেলি ! সেইজন্য পরবর্তী ডিগ্রি নিয়ে অতটা উতলা  নয় ।
     পরেরদিন ভোরবেলা । 
     ভোর সাড়ে-পাঁচটায়, গুণধর দাদুর ডাক, “নাতনী, চা দাও ?”
     সবে কুহেলি দোকান খুলেছে  । তাই দাদুর দিকে তাকিয়ে বললো, “দাদু, এক মিনিট জিরিয়ে নাও ! আমি তোমার চা বানিয়ে দিচ্ছি ।“
      তুমি এখনও উনুন জ্বালাওনি  ? উনুন না জ্বললে চা বানাবে কী করে ?
      দাদু, তুমি কিচ্ছু ভেবো না । দরকার হলে আমি স্টোভে চা বানিয়ে দিচ্ছি ।
      ঠিক আছে নাতনী । আমি চাপা কল থেকে হাত-মুখ ধুয়ে আসছি । দাদু বেরিয়ে যেতেই একজন হাল্কা বয়সের যুবক তার দোকানে উদয় হলো । চেহারাটা মিষ্টি  ।  এমনকি পোশাক পরিচ্ছদও  পরিপাটি, কিন্তু মুখটা শুকনো । বলা চলে মুখমণ্ডলে  দুঃখজনক পরিস্থিতির ছাপ । তা ছাড়া কেমন যেনো উদাসী । দোকানে  ঢুকে কুহেলিকে দেখে কিছুটা আড়ষ্ট । সম্ভবত যৌবন বয়সের মহিলা চায়ের দোকানদারকে  আশা করেনি ।  অতো সকালে চায়ের দোকানে একজন অল্প বয়সের মেয়েকে দেখবে সেটাও তার চিন্তার বাইরে । যদিও কুহেলির সবটাই অনুমান । 
       কুহেলিকে দেখে অবাক বিস্ময়ে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইলো । কুহেলির দিক থেকে চোখ ফেরাতে চাইছে না । ভাবনার জগতে নিমজ্জিত । তা ছাড়া এমন একটা ভাব, যেনো কুহেলির মধ্যে সে কিছু একটা খুঁজছে !   
     এরপর আর চুপ থাকতে পারলো না কুহেলি । যুবক ছেলেটির খুব কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলো, “আপনি কিছু বলবেন, নাকি চা খাবেন ?” 
     আচমকা কুহেলির প্রশ্নে ছেলেটি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো । তারপর  সম্বিৎ ফিরে পেয়ে এক গাল হাসি দিয়ে কুহেলিকে বলল, “এক কাপ চা পাওয়া যাবে ? আমি পরের বাসটা ধরবো ।“
     “নিশ্চয়ই । আপনি বসুন । আমি  চা বানিয়ে আনছি ।“ পুনরায় ছেলেটির দিকে তাকিয়ে কুহেলি বলল, “চায়ে কী চিনি দেবো ।“
       “চিনি দেবেন, কিন্তু খুব কম ।“  উত্তর দিয়েই আবার কুহেলির দিকে কৌতুহল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো । 
       ইতিমধ্যে উনুন ধরে গেছে । উনুনে চা বসালো । সেই সময় গুণধর দাদু পুনরায় দোকানে ঢুকে, “নাতনি, আমার চা কী হলো ?”  
     দাদুর প্রশ্নের উত্তরে কুহেলি বলল, “উনুনে চা বসিয়েছি, আর দু-মিনিট ।“ 
      চা বানিয়ে এবার মাটির ভাঁড়ে ঢাললো । ছেলেটির দিকে চায়ের ভাঁড় এগিয়ে ধরে কুহেলি বলল, “আপনার চা ।“ 
     চায়ের ভাঁড় ধরতে যাবে এমন সময় বাসের হুইসেল  । 
     বাস ঢুকছে দেখতে পেয়ে চায়ের ভাঁড় নিলো না যুবক ছেলেটি । উল্টে হাত জোড় করে কুহেলির দিকে তাকিয়ে বলল, “বাস এসে গেছে । এই বাসটা মিস করলে চাকরির পরীক্ষা কেন্দ্রে ঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারবো না । আমাকে মাফ করবেন । অন্য সময় এসে আপনার দোকানে বসে চা খেয়ে যাবো । কথা দিলাম ।“ কুহেলির উত্তর শোনার ধৈর্য নেই । ছুটে বাসে উঠে পড়লো । জানালার পাশের সীটে বসে এক দৃষ্টিতে কুহেলির দিকে তাকিয়ে রইলো । কুহেলির হাতে চায়ের ট্রেতে তখনও চায়ের ভাঁড়ে গরম ধোঁয়া উড়ছে । কুহেলিও  এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে  মনে মনে ভাবলো, যুবক ছেলেটি তার অনেকদিনের চেনা ! 
                                                         ( চলবে )