১৫ ই আগস্ট গোটা ভারত স্বাধীনতা লাভ করলেও বঞ্চিত ছিল নদীয়া জেলা, ১৮ ই আগস্ট পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা পায় নদীয়া জেলা।

0
118

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- নদীয়া জেলা পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্তির কথা শুনে জেলার বেশিরভাগ ঘরে কান্নার রোল পড়ে গিয়েছিল। সে সময় নদীয়ার রানী ছিলেন জ্যোতির্ময়ী দেবী তিনি যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এর পিছনেও আছে রাজনৈতিক কারণ- ১৯৪৬ সাল থেকেই নদীয়ার সাম্প্রদায়িক বিরোধ চাপা পড়া আগুনের মতো ধিক ধিক করে জ্বলছিল। মুসলিমদের পাকিস্তান জোর করে রাজবাড়ি দখল করে নেবে, কৃষ্ণনগরের রাস্তায় রাস্তায় এ ধরনের আওয়াজও তোলেন তারা সেসময় কৃষ্ণনগর মানে আমিন বাজার থেকে রাজবাড়ী চকেরপাড়া হয়ে আনন্দময়ী তলা পুরসভা থেকে গোবিন্দ সড়ক হয়ে জলঙ্গী নদীর ধার অর্থাৎ গোয়ারি পর্যন্ত মুসলিম লীগের নেতারাই পতাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা করেন। মুসলিম লীগের পতাকায় হয় পাকিস্তানের পতাকা । কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলিত হয়।
জানা যায় নদীয়া জেলা পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয় ।পোস্ট অফিস মোড় গোবিন্দ সড়ক বর্তমান হাই স্ট্রীট আনন্দমিতলা আমিনবাজার চকেরপাড়া কো হিন্দুরাও জমি বাড়ি বিক্রির চিন্তাভাবনা করছিলেন। এই সময় রানী জ্যোতির্ময় দেবী নেতৃত্বে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়,কাবুলাহিড়ী, প্রমথনাথ, শুকুল সাবিত্রী দাস, অশ্বিনী কুমার দত্ত প্রমুখ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আন্দোলন সংঘটিত করতে থাকেন। এই খবর বিদ্যুৎ গতিতে ব্রিটিশ সরকারের কাছে পৌঁছে যায়। ব্রিটিশ সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং চিন্তা করেন যদি এই অজুহাতে আবার দ্বিখণ্ডিত ভারত এক হয়ে যায় তবে ব্রিটিশদের কাছে তা হবে অতি ভয়ংকর দিন। এ সময় আন্দোলনকারী দলের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে ব্রিটিশ সরকার কথা শুরু করেন । লর্ড মাউন্টব্যাটেন আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলে ম্যাপ নির্দেশক স্যার সিড়িল র‍্যাড ক্লিককে ডেকে পাঠান এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন । স্যার সিরিল র‍্যাড ক্লিক ম্যাপ খুলে দেখে বলেন , ভুল তারই হয়েছে। এই ম্যাপ অনুযায়ী নদীয়ার রানাঘাট ও কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা ভারতে থাকার কথা ৷ চুয়াডাঙ্গা কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর মহকুমাকে নদীয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করে পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয় ৷ কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট মহাকুমা নিয়ে গঠিত নদীয়ার নতুন সীমানা নির্ধারিত হয় শিকারপুর থেকে পলাশী ৷ ১৭ ই আগস্ট রেডিওতে ঘোষণা করা হয়, কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট মহাকুমা নিয়ে নবগঠিত ভারত ভূখণ্ডেই থাকছে। সেই মোতাবেক ১৮ তারিখ সকাল দশটায় পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করে ভারতে যুক্ত হয় রানাঘাট নদিয়া মহকুমা । প্রবীণ সাহিত্যিক সুধীর চক্রবর্তী বলেন, সে সময় আমি সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ১৮ই আগস্ট খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়েছি হঠাৎ মাঝরাতে চিৎকার চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে যায় হেঁটে লোকজন আনন্দে রাস্তায় নেমে পড়েছেন