হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে এক পুত্র সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে।

0
210

বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর:- হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে এক পুত্র সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে। হাসপাতালে চিকিৎসা না মেলায় পরবর্তীতে পুরসভার নার্সিংহোমে ভর্তি হয়ে জমজ শিশুর মধ্যে কন্যা সন্তানকে বাঁচানো গেলেও পুত্র সন্তান মৃত প্রসব হয়। পুত্র সন্তান হারিয়ে প্রসূতির পরিবারের লোকেরা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা শাসক ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।

ঘটনাটি মাস দেড়েক আগের হলেও, বালুরঘাট হাসপাতালে সুপারের কাছে, আবেদন জানিয়ে নথিপত্র পাওয়ার পর, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও জেলা শাসক এর কাছে অভিযোগ জানানো হয় পরিবারের পক্ষ থেকে।

জানা গিয়েছে, বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গিসপুর গ্রামের বাসিন্দা, যুথিকা শীল গত জুলাই মাসের ৪ (চার) তারিখে সন্তান সম্ভবা অবস্থায় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি হন। জরুরী বিভাগ থেকে, হাসপাতাল চত্বরেই অবস্থিত, বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালেই আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পর, ভর্তির 6 ঘন্টা পর, তাকে ছুটি দেয়া হয়। এরপর‌ও প্রস্তুতির পেটে ব্যথা না কমায়, পরিবারের লোকেরা, ১০ জুলাই প্রাইভেটে চিকিৎসক দেখান। সেখানে ও আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পর জানা যায় তার জমজ শিশুর মধ্যে একটি শিশু পেটের মধ্যেই মারা গিয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে সেদিনই বালুরঘাট পুরসভার নার্সিংহোমে সিজার করে কন্যা সন্তান জীবিত অবস্থায় এবং পুত্র সন্তান মৃত অবস্থায় হয়।
এরপর এই প্রশ্ন ওঠে, দুই সন্তানের মধ্যে এক সন্তান মৃত ছিল কিনা তা বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাফি করার পরও কেন জানানো হয়নি এবং ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।

এই বিষয়ে হাসপাতালের যাবতীয় নথি পেতে পরিবারের লোকেরা হাসপাতাল সুপার এর কাছে আবেদন করেন। মাস দেরেক পর হাসপাতালের নথি হাতে পেলে জানতে পারেন, হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাফিতেও যমজ বাচ্চার উল্লেখ রয়েছে। অথচ হাসপাতালে ডিসচার্জ লেটারে শুধুমাত্র একটি শিশুর উল্লেখ ছিল বলে পরিবারের অভিযোগ। এবং সেই অবস্থাতেই ভর্তির মাত্র ৬ ঘন্টা পর হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।।

প্রসূতির মামা বিরাজ বিশ্বাস জানান, হাসপাতলে আবেদনের পর যে নথি পেয়েছি তার সাথে ডিসচার্জ লেটার এর অসংগতি রয়েছে। যাবতীয় নথি পাওয়ার পর প্রশাসন এবং মুখ্যমন্ত্রীর দারস্থ্য হয়েছি।

প্রস্তুতির বাবা গৌতম শীল জানান, হাসপাতালের গাফিলতির কারণেই একটি শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে সময় মতো চিকিৎসা হলে দুটি শিশুই বেঁচে থাকত।

প্রসূতি যুথিকা শীল জানান, হাসপাতালের চিকিৎসায় গাফিলতির কারণেই তার জমজ শিশুর মধ্যে পুত্র সন্তানকে হারাতে হয়েছে। এই ঘটনায় তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসকের শাস্তির দাবি তুলেছেন।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাস জানান, অভিযোগ দেখলাম। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। আমাদের তদন্ত কমিটি রয়েছে। আমাদের তদন্তের নিয়মে অভিযোগ প্রমাণিত হলে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।