৫৪ বছর বয়সে শরীরের ১০২ কেজি ওজন নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সশস্ত্র ডাকাতদের সঙ্গে করলেন গুলির লড়াই।

0
148

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- ৫৪ বছর বয়সে শরীরের ১০২ কেজি ওজন নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সশস্ত্র ডাকাতদের সঙ্গে করলেন গুলির লড়াই। নিজের জীবনকে বাজি রেখে ডাকাতদের গুলি করে মান বাঁচালেন পুলিশের। নদীয়ার রানাঘাটের সোনার দোকানের ডাকাতির ঘটনায় সুপার হিরো রানাঘাট থানার এসআই রতন কুমার রায়। গতকাল তার রিভলবারের গুলিতেই আহত হয় দুই ডাকাত। মুর্শিদাবাদের লালগোলার বাসিন্দা রতন কুমার ঘোষ। ২৭ বছর বয়সে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। প্রথমে রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে অংশগ্রহণ করেন। এরপর নিজের কর্মদক্ষতা এবং কর্তব্যে অবিচল রেখে প্রমোশনের মধ্য দিয়ে এস আই হন তিনি। তার ২৭ বছরের চাকরি জীবনে অনেক ঘটনা সাক্ষী থাকলেও এইভাবে ডাকাত দলের সঙ্গে গুলির লড়াই আগে কখনো করেননি তিনি। গতকাল সোনার দোকান থেকে তার কাছেই প্রথম ফোনটা আসে। এরপর কিছুতেই সময় নষ্ট করতে চাননি তিনি। তিনজন কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে নিজেই গাড়িতে করে সোনার দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ততক্ষণে ডাকাত দলের কাছে খবর আছে বাইরে পুলিশ চলে এসেছে। এরপর তড়িঘড়ি তারা গুলি চালাতে চালাতে রাস্তা দিয়ে পালাতে থাকে। তখন বন্দুক হাতে কার্যত একাই ছিলেন এসআই রতন কুমার ঘোষ। জীবনের কথা একবারও মনে পড়েনি, পড়িনি তার সংসারের কথা। আটজন সশস্ত্র ডাকাত যখন উল্টো দিক থেকে ক্রমাগত গুলি চালাচ্ছে, তখন তার কাছে থাকা সেই সরকারি জং ধরা রিভলবার নিয়ে ছুটে চলেছেন ডাকাতের পিছু পিছু। উল্টো দিক থেকে এক সঙ্গে একাধিক রিভলবারের গুলি ছুটে আসছে। ক্ষান্ত হর্নি তিনি। নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবং সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে তার রিভলবর্গের গুলিতেই নিশানা লাগিয়ে জখম করেন ২ ডাকাতকে। ততক্ষণে অবশ্য খবর পেয়ে আরো পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তার লড়াইয়ের সেই ছবি ভাইরাল হতেই প্রশংসায় করিয়েছেন ৫৪ বছর বয়সী মোটা শরীরের অধিকারী রতন কুমার ঘোষ। শোনা গেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তার এই সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন।

এ বিষয়ে এসআই রতন কুমার ঘোষ বলেন, যখন আমার কাছে খবরটা এসেছিল আমি তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলাম। নিজের জীবনের কথা তখন মনে ছিল না। একটাই কথাই মাথায় এসেছিল। পুলিশের কিছুতেই বদনাম হতে দেব না। পালানোর কোন প্রশ্নই ছিল না। পালাতে গেলে হয়তো একটা বুলেট আমার পিঠে এসে লাগতো। আমি দেখতেও পারতাম না কে আমাকে গুলি করলো। তাই লড়াই করে গেছিলাম।