নদীয়া-শান্তিপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- পেটের ডান দিকে রয়েছে আংশিক ডিম্বহ নালী, আর সেখানেই তৈরি হয় ভ্রুণ। ব্লাড গ্রুপ এ নেগেটিভ হওয়ার কারণে অস্ত্র পাচারে যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ, অবশেষে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সফল অস্ত্রোপচার করে প্রাণ ফিরে পেল ৩০ বছর বয়সী এক গৃহবধূ। জানা যায় নদীয়ার শান্তিপুর রাজ পুতপড়ার গৃহবধূ সরস্বতী সরকার গত এক সপ্তাহ আগে শান্তিপুর হাসপাতালে আসে চিকিৎসার জন্য। তার মুখের কথায় চিকিৎসকদের সন্দেহ হওয়ায় তাকে ইউ এস জি করানোর কথা বলে। স্বামী পেশায় দিনমজুর, কোনরকমে সংসার চলে। তাদের এমত অবস্থায় সরকারি হাসপাতাল ছাড়া আর কোন উপায় নেই সরস্বতী সরকারের। অবশেষে ইউএসজি রিপোর্টে ধরা পড়ে তার এই জটিল রোগ, এরপরে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডক্টর পবিত্র বেপারীর তত্ত্বাবধানে চলে সরস্বতী সরকারের চিকিৎসা। গতকাল রাতে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। এই জটিল অস্ত্রোপচারের পরে চিকিৎসক পবিত্র বেপারী জানিয়েছেন, স্বপ্না দেবীর এর আগে একটি সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তান হয়েছিল। তারপরে তার পেটে বাচ্চা না হয়ে তার জরায়ুর ডিম্বনালীতে ভ্রুন বড় হয়েছে, সাধারণত জানি বাচ্চা জরায়ুতে হলে সেটাই বড় হয়ে পরবর্তীতে প্রসব হয়, কিন্তু ড্রিমহনালীতে যদি বাচ্চা আসে যেকোনো সময়ে প্রচুর রক্তপাত হতে পারে অথবা মায়ের প্রাণহানি হতে পারে, তার জন্যই অপারেশন খুবই জটিল হয়ে দাঁড়ায়। পাশাপাশি সরস্বতী সরকারের ব্লাড গ্রুপ এ নেগেটিভ, সচরাচর এই ব্লাড গ্রুপের রক্ত পাওয়া যায় না। যেহেতু অপারেশনের জন্য রক্ত যখন তখন প্রয়োজন হয় সেই কারণে একটু হলেও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই অস্ত্র প্রচার। চিকিৎসক পবিত্র বেপারী এও জানিয়েছেন, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এখনো সেই ধরনের পরিকাটামো নেই, নেই ব্লাড ব্যাংক, নেই অপারেশনের ক্ষেত্রে সঠিক পরিকাঠামো, তাই একটু হলেও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় এই ধরনের অপারেশন গুলিতে। যদিও ওই গৃহবধূর সফল অস্ত্রোপচারের পরে এখন স্বাভাবিকভাবে সুস্থ রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক পবিত্র বেপারী। বেডে শুয়ে গৃহবধূ সরস্বতী সরকার বলেন, প্রথমে তিনি পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন কিন্তু এই ধরনের জটিল রোগ যে তার হয়েছে তিনি জানতেন না। তবে চিকিৎসকেরাও তার সাথে খোলামেলা আলোচনা করেননি যদি তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সেই কারণে। অন্যদিকে এর আগেও শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে একের পর এক জটিল অস্ত্রপচার করে সফল হয়েছিল স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পবিত্র বেপারী, যা বাড়তি অক্সিজেন যুগিয়ে ছিল শান্তিপুর হাসপাতালকে। আবারো একটি জটিল অস্ত্র প্রচার করে গোটা শান্তিপুর বাসির কাছে আরো এক নজির গড়লেন তিনি।