পুরুলিয়া, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- সাধারণত জন্মদিন মানেই বাড়িতে আলোর ঝকমকানি, চারিদিকে বেলুনের সাজ, সাথে দামি কেক কাটা। তারপরই দারুণ বিশাল আয়োজন করে খাওয়া দাওয়া। কিংবা দেখা যায় কোনো হোটেল বা রেস্টুরেন্টে গিয়ে টেবিল বুক করে কেক কাটা আর দামী দামী প্লেট অর্ডার করা। কিন্তু এইসব গতানুগতিক পথে পা না বাড়িয়ে বিগত কয়েকবছর ধরে তিনি জেলা পুরুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ছোট ছোট বাচ্চাদের সাথে এই দিনটির আনন্দ ভাগ করে নেন। হ্যা, আমরা কথা বলছি একালের পুরুলিয়ার অন্যতম বিশিষ্ট শিক্ষক, তথা কবি-সাহিত্যিক ও সমাজসেবী ড. ব্রতীন দেওঘরিয়া মহাশয়ের। ২৩ শে সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিন। এই দিনটি তিনি নিজের মতো করে বাচ্চাদের সাথে কাটাতে ভালো বাসেন। এবার তাই তিনি পৌছে যান পুরুলিয়ার আমডিহায় অবস্থিত “মানভূম মুক- বধির বিদ্যাপীঠে” র ছেলে-মেয়েদের কাছে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর সহধর্মিণী শিক্ষিকা অনামিকা দেওঘরিয়া ও কন্যা ঋষিকা দেওঘরিয়া। তাঁরা বেশকিছু উপহারের ডালি নিয়ে উপস্থিত হন সেখানে।
এই স্কুলের বাচ্চাদের সাথে একটি কক্ষে বসে তাদের মনের সাথে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা যেমন করেন, তেমনই জীবনে পড়ার গুরুত্ব ও মানুষ হয়ে ওঠার বার্তা দেন। তারপর প্রত্যেকের হাতে তুলে দেন উপহার স্বরূপ ড্রইং খাতা, নোটবুক, রঙ, পেনসিল, রাবার, কল, কেক সহ নানান উপাদান। এছাড়াও এখানকার ছেলে-মেয়েদের সাহিত্যে উৎসাহিত করার জন্য তিনি তাঁর ‘ছড়ার হ য ব র ল’ ও ‘বিরহের বিরল গাথা’ বই তুলেদেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে। ব্রতীন বাবু জানান,’ মানভূম মুক-বধির বিদ্যাপীঠের হোস্টেল সুপার প্রদীপ দত্ত সহ সকল কর্তৃপক্ষ এমন সুন্দর ভাবে দিনটি পালন করবে ভাবতে পারি নি। দিনটি আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ তিনি এই বিদ্যাপীঠের দায়িত্ব প্রাপ্ত আধিকারিক সুমন চট্টোপাধ্যায় মহাশয়কেও ধন্যবাদ জানান এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। অন্যদিকে বোবা স্কুলের হোস্টেল সুপার প্রদীপ দত্ত জানান, ‘ আমরা অঅত্যন্ত আনন্দিত যে ব্রতীন বাবুর মতো একজন মানুষ আমাদের বিদ্যাঙ্গনে বাচ্চাদের সাথে জন্মদিন পালন করলেন। এই দিনটি উনি এভাবে পালন করবেন ভাবতেই পারিনি। ওনাকে জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা জানাই। উনি এভাবেই যেন মানুষের সাথে থাকেন ও জীবনে সফলতা অর্জন করেন।’ গতানুগতিক পাঠদানের পাশাপাশি এরকম একটি অনুষ্ঠান ও সাথে বেশকিছু উপহারে খুশির হাওয়া মানভূম মুক-বধির বিদ্যাপীঠের কচি কাচাদের মধ্যে।