আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ পুজোর আগেই খুশির খবর বাঁকুড়া জেলায়। বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লক এর কৃষিভিত্তিক সামাজিক সংগঠন “দলপুর শ্রীশ্রী জ্ঞানানন্দ সরস্বতী আশ্রম” পেল রাষ্ট্রপতি সম্মান। ভারতের রাষ্ট্রপতি মাননীয় দ্রৌপদী মুর্মুর হাতে সম্মান গ্রহণ করেন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী মাধবানন্দ সরস্বতী। ২০২২ সালের জুন মাসে বাংলার সুগন্ধি ধান প্রকল্পের মুখ্য বিজ্ঞানী অধ্যাপক মৃত্যুঞ্জয় ঘোষের পরামর্শে ও সহায়তায় শ্রী শ্রী জ্ঞানানন্দ সরস্বতী আশ্রম ‘উদ্ভিদ প্রজাতি সুরক্ষা গোষ্ঠী পুরস্কারের’ জন্য আবেদন করেন। ২০২৩ সালে দিল্লির পুসাতে অবস্থিত ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান সংস্থার কনভোকেশন সেন্টারে উদ্ভিদ প্রজাতির সুরক্ষা গোষ্ঠী পুরস্কার গ্রহণ করে দলপুর শ্রীশ্রী জ্ঞানানন্দ সরস্বতী আশ্রম।
দলপুর শ্রীশ্রী জ্ঞানানন্দ সরস্বতী আশ্রম গত ৮ থেকে ৯ বছর ধরে নিজস্ব উদ্যোগে এবং বিধানচন্দ্র কৃষি বিদ্যালয়ের বাংলার সুগন্ধি ধান প্রকল্পের প্রযুক্তির সহায়তায় প্রায় ৬০ টি দেশী ধানের জাত, ৪২ টি ঔষধি গাছ, চল্লিশটি দেশী সবজি, বিভিন্ন প্রকারের মিলেট ও গোখাদ্য ফসল সংরক্ষণ এবং গো পালন ও গোবর গ্যাস তৈরি করেছেন এবং করে আসছেন। আশ্রম প্রাঙ্গণের আট থেকে দশ বিঘা সংলগ্ন ৪২ থেকে ৪৫ বিঘা জায়গার মধ্যেই সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে চলছে বিভিন্ন চাষাবাদ। রয়েছে ঢেঁকিতে ধান ভাঙ্গাও। দলপুর শ্রী শ্রী জ্ঞানানন্দ সরস্বতী আশ্রম বর্তমানে একটি স্বয়ংক্রিয় কৃষিভিত্তিক সামাজিক সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আশ্রমের সম্পাদক স্বামী মাধবানন্দ সরস্বতী জানান যে, এই সম্মানের সঙ্গে বেড়েছে আশ্রমের দায়িত্ব এবং প্রত্যাশা।
দলপুর আশ্রমের এই সফলতায় খুশি আপামর জেলাবাসি। পুজোর আগেই বাঁকুড়া তথা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জন্য এ যেন এক উপহার। পূজার আগে রাঢ় বাংলায় ঘুরতে আসেন মানুষ। রাঢ় বাংলার রানী বাঁকুড়ায় যদি শুশুনিয়া পাহাড় ঘুরতে আসেন, তাহলে একটু কষ্ট করে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে চলে আসুন দলপুর শ্রী শ্রী জ্ঞানানন্দ সরস্বতী আশ্রমে। আসলেই দেখতে পাবেন কিভাবে জৈব পদ্ধতিতে বাঁকুড়ার লাল মাটিতে সোনা ফলাচ্ছে এই আশ্রম।