নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- দুর্গাপূজা ভারতবর্ষ এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব । হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা খুবই নিষ্ঠা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দুর্গাপূজা পালন করেন । দুর্গাপুজোতে বেশকিছু ধরনের উপকরনের ব্যবহার করা হয়। এই সমস্ত উপকরণগুলি একমাত্র দশকর্মা ভান্ডারেই সাধারণত পাওয়া যায়। উপকরণ গুলির মধ্যে রয়েছে তিলের তেল, মহাস্নানের তেল, মহাস্নানের জল, অগরু, বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি তেল, মধু ইত্যাদি। এই উপকরণ ছাড়া কখনোই দুর্গাপূজো সম্পূর্ণ হয় না। পৌরাণিক নিয়ম নীতি অনুযায়ী এই উপকরণ গুলি ছাড়া দূর্গাপূজো অসম্পন্ন। আর এই সমস্ত উপকরণ গুলিই নদিয়ার মাজদিয়ার বাসিন্দা সুনীল দাস নিজের হাতে তার বাড়িতে তৈরি করেন। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। তার বাবার কাছ থেকেই তিনি এই ধরনের উপকরণগুলি তৈরির পদ্ধতি শিখেছেন বলে জানান।
ব্যবসায়ী সুনীল দাসের মতে এই উপকরণগুলি তৈরি করতে হয় নিষ্ঠার সঙ্গে। যেহেতু এই উপকরণ গুলি পুজোতে ব্যবহৃত হয় তাই উপকরণগুলো তৈরি করতে কিছু নিয়ম মানতে হয় । স্নান করে, কখনও উপোস করে বা নিরামিষ খেয়ে উপকরণগুলি তৈরি করতে বসতে হয়। কখনোই অনিয়ম মেনে এই উপকরণ গুলি তৈরি করার নিয়ম নেই বলে তিনি দাবি করেন। ২৫ বছর ধরে তিনি এই লাইনের সঙ্গে যুক্ত। আলতা সিঁদুর, কোটা সিদুর, পাতা সিঁদুর, অগরু, তিন রকমের তেল, মহাস্নানের জল, গোলাপ জল ,আতর বিভিন্ন সুগন্ধি সমস্ত কিছুই একা নিজের হাতে তৈরি করতে পারেন তিনি।
ব্যবসায়ী সুনীল দাসের মতে বর্তমানে এই উপকরণ গুলি চাহিদা খুব। তিনি সময়মতো উপকরণগুলি তৈরি করে ফেলেন এবং সঠিক সময়ে উপকরণ গুলি রপ্তানি দিয়ে থাকেন। এছাড়াও বর্তমানে একাধিক পুজো হওয়ার ফলে তার উপকরণ গুলি চাহিদা ও দিন দিন বেড়েই চলেছে। তার তৈরি উপকরণ গুলি তিনি দিয়ে থাকেন রানাঘাট, কল্যাণী, চাকদা, কাঁচরাপাড়া, কৃষ্ণনগর ইত্যাদি এলাকায়। তবে তিনি সরকারের কাছে দাবি করেছেন কিছু আর্থিক সাহায্যের, যা দিয়ে তিনি একাধিক কর্মচারী নিয়োগ করে উপকরণ গুলি আরও যাতে তাড়াতাড়ি ও নিষ্ঠা ভাবে তৈরি করতে পারেন। যদি তা সম্ভব হয়, তাহলে তিনি আরও বেশ কয়েক জনের সংসারের ভার একাই নিয়ে নিতে পারবে বলে তিনি দাবি তার।