এবার পূজোয় কোলাঘাটে এক অভিনব এবং মানবিক ভাবনা।

0
383

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:– পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট নতুন বাজার সংকেত এবং ছাত্র সংঘে ঢাক বাজিয়ে পূজোর উদ্বোধন করেন বিভিন্ন মন্ডপের প্রায় পঞ্চাশ জন ঢাকি, পূজোর মুখে তাঁদের গোলাপ উত্তরীয় দিয়ে বরন করে হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন পোশাখ, অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী। বারোমাসে তেরো পার্বণের অন্যতম বাঙালির শারদোৎসব আজ বিশ্ব ঐতিহ্য শিরোপায় গৌরবান্বিত।
যেখানেই আয়োজন সেখানেই নানা ভাবনা বিবিধ কর্মসূচি এবং শিল্পকলার উৎকর্ষতায় যেন জোয়ার বয়ে যায়।
কোলাঘাটে বিরামহীন বয়ে চলা রূপনারায়ণ নদীর পাড়ে নতুন বাজার সংকেত এবং ছাত্র সংঘের শারদোৎসব এই বছর একান্ন তম বর্ষে পদার্পণ করলো। এলাকার প্রায় ৩২ টি পুজো মন্ডপের প্রায় ৫০ জন ঢাক বাদ্যকারদের সংবর্ধনা দেওয়ার পাশাপাশি ফুল মালা চন্দনের ফোটা উত্তরীয়র পরিয়ে বরণ করে নেওয়ার পর ঢাকিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন বস্ত্র, উৎসবের বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী এবং সাধ্যমত নগদ অর্থ।
এরপর এই ঢাকিরাই তাঁদের ঢাকে পূজোর বোল বাজিয়ে এবং মঙ্গলদ্বীপ প্রজ্জ্বলন করে এই মন্ডপের উদ্বোধন করেন। “আমরা যখন আনন্দে মেতে উঠি
তখন ঘর সংসার ফেলে মন্ডপে মন্ডপে মলিন পোশাকে ঢাক বাজায় ঢাকি”
উৎসবে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েও ঢাক বাদ্যকররা রয়ে যান অন্তরালেই।
পুজোর কটাদিন প্যান্ডেলে এক পোশাকেই দিনরাত কেটে যায় পুজো উৎসবে ঢাকে বোল বাজিয়ে। তাঁদের জীবনে এটাই পূজো বা উৎসব। কেবল জীবন জীবিকার অন্বেষণেই। এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রায় দুশোজন দুঃস্থ বয়স্ক মানুষের চোখে পাওয়ার ম্যাচিং চশমা পরিয়ে দেওয়া হয়।
দেবীপক্ষের এই বিশেষ মুহূর্তে পঁচিশ জন মানুষ মরনোত্তর চক্ষুদান এ অঙ্গিকার বদ্ধ হন। পাশাপাশি দুঃস্থদের হাতে নতুন পোষাক এবং প্রতিবন্ধীদের প্রদান করা হবে ক্র্যাচ, হুইলচেয়ার, ট্রাই সাইকেল ইত্যাদি সামগ্রী। এই পূজোয় প্রায় বিশ ফুট উচ্চতার জমজমাট ডাকের সাজে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী ঘরানায় প্রতিমা নির্মাণ করেছেন চন্দনগরের বিখ্যাত মৃৎশিল্পী। এবছর মন্ডপ স্বজ্জায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে ডেঙ্গি প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ এবং পণপ্রথা রোধ, ভয়ঙ্কর ডি জে সাউন্ড বয়কট, পরিবেশ দূষণ রোধে, পথ নিরাপত্তা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ছবি পোস্টার এবং মডেলে।