রেগিংয়ের জেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় বাড়ির বাথরুমে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী পিএইচডি পাঠরত ছাত্র।

0
210

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা- নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিতে পড়তে গিয়ে রেগিংয়ের শিকার হলো মালদার আদিবাসী এক ছাত্র, এমনই অভিযোগ পরিবারের। আর সেই রেগিংয়ের জেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ায় বাড়ির বাথরুমে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় পিএইচডি পাঠরত ওই ছাত্র। সোমবার সকালে মালদার গাজোল থানার শীসাডাঙ্গা এলাকায় বাড়ির বাথরুম থেকে ওই ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মৃতদেহটি ময়না তদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করে তদন্তকারী পুলিশ কর্তারা। ওই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে গাজলের আদিবাসী পরিবার। তাঁরা পুরো বিষয়টি নিয়ে নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ জানানোর কথা জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম উত্তম মারডি (২২)। তার বাড়ি গাজলের শীসাডাঙ্গা এলাকায়। পরিবারে বাবা কমলা মারডি, মা মিনতি হাঁসদা রয়েছেন। ওই ছাত্রের এক দিদি শিলিগুড়িতে বিয়ে হয়েছে। গত ৩ অক্টোবর নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিতে ইতিহাসে পিএইচডি নিয়েই ভর্তি হয় উত্তম । ইনভারসিটির হোস্টেলেই আপাতত থাকছিল ওই ছাত্র। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর থেকেই নাকি ওই ছাত্রের সঙ্গে অশালীন আচরণ শুরু করে সিনিয়র কয়েকজন , এমনই অভিযোগ করেছেন মৃত ছাত্রের পরিবার। এরপরই দুদিন আগে ওই ছাত্র মালদার গাজোলের গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে। সে কিছুতেই আর নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যেতে চাইছিল না। এরপরই এদিন বাড়ির বাথরুম থেকে মৃত ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত ছাত্রের এক জেঠু জোনাস মারডি পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছেন, ভালো মার্কস নিয়ে তার ভাইপো উত্তম মারডি মালদার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু তার আগে নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটিতে ইতিহাসের পিএইচডি করার সুযোগ পেয়ে যাওয়ায় , সেখানে হোস্টেলে থেকেই পড়াশোনার শুরু করে । কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যে ভাইপো হঠাৎ করে হোস্টেল ছেড়ে শিলিগুড়িতে তার দিদির বাড়িতে থাকতে শুরু করে। কোনোভাবেই সে আর হোস্টেলে যেতে চাইছিল না। কিন্তু মাঝেমধ্যে হোস্টেলের কিছু সিনিয়রেরা ভাইপো উত্তমকে ফোন করে ডেকে পাঠাতো। এরপরই দুদিন আগে উত্তম মালদার গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। সে বলেছিল হোস্টেলের সিনিয়র কিছু ছেলেরা তার উপর অমানবিক আচরণ করছে। সেটা সে আর সহ্য করতে পারছে না। আমরা ভাইপোর কথা অতটা বুঝতে পারে নি। ওকে বলেছিলাম ইনভার্সিটিতে ফিরে যাও। ভালো করে পড়াশোনা করো। কিন্তু তারপরেই এই অঘটনটা ঘটিয়ে ফেললো। এই ঘটনায় আমরা সংশ্লিষ্ট ইউনিভার্সিটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে নালিশ জানাবো এবং পুরো ঘটনার ব্যাপারেও নর্থ বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের কাছেও একটি লিখিত নালিশ জানানো হবে।
গাজোল থানার পুলিশ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।