অসহায় প্রবীণ মহিলা হোটেল ব্যবসায়ীর ২ শতক জমিতে নজর দুই প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর।

0
245

মালদা, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ — যেন রবি ঠাকুরের দুই বিঘা জমি কবিতার বাস্তব চিত্র, অসহায় প্রবীণ মহিলা হোটেল ব্যবসায়ীর ২ শতক জমিতে নজর দুই প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে উচ্ছেদ করার হুমকি, তৃণমূলের মদত রয়েছে অভিযোগ বিরোধীদের, পাল্টা সাফাই তৃণমূলের, ভূমি দপ্তর এবং থানার দারস্থ ওই মহিলা।যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে একজন মহিলা। যিনি বারংবার রাজ্যের মহিলাদের স্বনির্ভর হওয়ার উৎসাহ দেন। সেই রাজ্যেই এক অসহায় প্রবীণ মহিলা হোটেল ব্যবসায়ীকে তার হোটেলের জমি থেকে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে উচ্ছেদ করার চেষ্টার অভিযোগ দুই প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ওই জমিতে একটি ছোট হোটেল চালিয়ে সংসার চালান ওই মহিলা এবং তার বোন। বাবা মারা গেছেন। বাড়িতে রয়েছে এক দাদা তিনি অসুস্থ।হোটেলের উপর নির্ভর করেই চলে সংসার। এই হোটেলের পাশে একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হল কিনেছেন দুই প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। তারপরেই তাদের নজর পড়েছে হোটেলের সেই দুই শতক জমির উপর। “এ যেন ঠিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা দুই বিঘা জমি কবিতার মত”।যেখানে জমিদারের নজর পড়েছিল দরিদ্র কৃষকের জমির উপর। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর কলমপাড়া এলাকার এই ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।তৃণমূলের মদতে অনৈতিক ভাবে উচ্ছেদ করার চেষ্টা অভিযোগ বিরোধীদের। দলের কোনো যোগ নেই সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখা হবে পাল্টা দাবি তৃণমূলের।ভূমি দপ্তর এবং পুলিশের দ্বারস্থ ওই মহিলা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে হরিশ্চন্দ্রপুরের স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বলা দাস এবং তার বোনেরা দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে দুর্গা টকিজ সিনেমা হলের পাশে একটি ভাতের হোটেল চালান। দুই শতক জমির উপরে রয়েছে ওই হোটেল। সরকারের কাছ থেকে যে জমির পাট্টা পেয়ে ছিলেন উজ্জ্বলা দাসের বাবা অম্ভুনাথ দাস।ভূমি দপ্তরের কাছে উনার নামের রেকর্ড রয়েছে সেই জমি। এমনকি হাইকোর্ট থেকে অনুমতি রয়েছে সেই জমি ব্যবহারের। উজ্জ্বলা দাসেরা ছয় বোনের মধ্যে চার বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।মৃত্যু হয়েছে বাবার।তাই বয়স হলেও উজ্জ্বলা দাস এবং তার আরেক অবিবাহিতা বোন এই হোটেল চালান সংসার চালানোর জন্য।বাড়িতে দাদা এবং তার পরিবার থাকলেও দাদা অসুস্থ।এদিকে এই হোটেলের পাশে দুর্গা টকিজ সিনেমা হল বহুদিন ধরে বন্ধ। সেই সিনেমা হলের জমি কিনে নিয়েছেন বারদুয়ারির আশিশ ভগত এবং টিঙ্কু ভগত নামে দুই ব্যবসায়ী।অভিযোগ এখন হোটেলের জমি দখল করার চেষ্টা করছেন তারা।তার জন্য প্রভাব খাটিয়ে হোটেলের নির্মাণকার্য বন্ধ রেখেছেন। শাসক দল তৃণমূলের মদতে জমি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ।সেই জমি বিক্রি করার চাপ দিচ্ছেন তাদের কাছে।রাজি না হলে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।এদিকে প্রভাবশালীদের হুমকির জেরে দিশাহারা উজ্জ্বলা দাস এবং তার পরিবার। কারণ হোটেল না চালালে চলবে না তাদের সংসার। ভূমি দপ্তরের কাছে গিয়ে জানতে পেরেছেন জমির সব কাগজপত্র সঠিক ভাবেই রয়েছে। তারপরেও কি ভাবে এই হুমকি উঠেছে প্রশ্ন।হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় এই নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন উজ্জ্বলা দেবী। পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগের ভিত্তিতে সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে। অপরদিকে ব্যবসায়ী টিংকু ও আশীষ ভগতকে ফোন করা হলে তারা এই নিয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। অন্যদিকে ভূমি দপ্তরের আধিকারিক জানিয়েছেন সেই জমি রেকর্ড রয়েছে উজ্জ্বলা দাসের বাবার নামেই।হাইকোর্টের অনুমতিও রয়েছে।অন্যদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ নরেন্দ্রনাথ সাহার অভিযোগ ওই ব্যবসায়ীরা তৃণমূলের নেতাদের মদতে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছেন।যদিও তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খান জানিয়েছেন ওই মহিলার অবস্থা দেখে তারও খারাপ লাগছে।স মস্ত ঘটনা তিনি খতিয়ে দেখবেন। এই মুহূর্তে উজ্জ্বলা দাস তাকিয়ে পুলিশ প্রশাসনের দিকে। আদেও তিনি সুবিচার পাবেন কি না। সেটাই এখন বড় প্রশ্ন?