বিশেষ প্রতিবেদন, কলকাতাঃ সম্প্রতি কলকাতায় অনুষ্ঠিত হলো “অরুণালোক সাহিত্য পরিবার” ও “দিলীপ রায় ফ্যান্স ক্লাব”এর যৌথ উদ্যোগে –“আন্তর্জাতিক সাহিত্য সমাবেশ, ২০২৩” । যৌথ উদ্যোগের মধ্যমনি আমাদের দেশের কথা সাহিত্যিক দিলীপ রায় (৯৪৩৩৪৬২৮৫৪) । অনুষ্ঠানে সাহিত্য বিষয়ের উপর আলোচনা ছাড়া “অরুণালোক” পত্রিকার মোড়ক উন্মোচন (২৭০ জন কবি/ সাহিত্যিকের লেখায় সমৃদ্ধ), ৯টি গ্রন্থের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ (তার মধ্যে দিলীপ রায়ের নিজের দুটি গ্রন্থ – উপন্যাস “কঙ্কাবতীর দুঃসাহস” ও প্রবন্ধ “শিক্ষা ও সমাজ” ), ৪৬টি সাহিত্য সংগঠনকে সম্বর্ধনা ও গুণিজন সম্বর্ধনা । এছাড়া কবির কন্ঠে কবিতা পাঠ, বাচিক শিল্পীর কন্ঠে আবৃত্তি, সঙ্গীত (সঙ্গীত পরিবেশন করলেন আন্তর্জাতিক খ্যাত বাউল শিল্পী গনেশ চন্দ্র রায়, কাটোয়ার আদ্যনাথ ব্যানার্জী ও অসমের করিমগঞ্জের শতরূপা ভট্টাচার্য্য) ও শ্রুতি নাটক (পরিবেশনায় – ত্রয়ঈ, কলকাতা) ।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক তপন বন্দোপাধ্যায় এবং প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক নজরুল ইসলাম । মুখ্য আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ওপার বাংলার মীর আব্দুল আলীম (মহাসচিব, কলামিস্ট ফোরাম অফ বাংলাদেশ) । তা ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ থেকে আগত সার্ক জার্ণালিস্ট ফোরামের মহাসচিব মোঃ আবদুর রহমান, বর্ষীয়ান কবি কমল দে শিকদার প্রমুখ । ভারত ও বাংলাদেশ থেকে প্রায় তিন শত কবি সাহিত্যিক অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন । ইদানীংকালে এত সংখ্যায় কবি সাহিত্যিকদের উপস্থিতি বিরল । ব্যাপক সংখ্যায় হাজিরার নিরিখে একজন বরিষ্ঠ কবি (শ্রীমন্ত দাস) কী বলেছেন—শুনুন—“অনুষ্ঠানের মধ্যমণি কথা সাহিত্যিক দিলীপ কুমার রায় যেন সাহিত্যের এক অসম্ভব শক্তিশালী চুম্বক যার দুর্ণিবার আকর্ষণে দেশের বিভিন্ন রাজ্য,জেলা সহ দেশ বিদেশের প্রথিতযশা সাহিত্যিক, সাংবাদিক,নাট্যকার, সঙ্গীতকার আকর্ষিত হয়েছেন।যেন চাঁদের হাট।
আটকাতে পারে নি কাঁটা তারের ব্যবধান, আটকাতে পারে নি ধর্ম বর্ণ, আটকাতে পারেনি ধনী গরীব, শ্রেণী বৈষম্য। সবাই আমরা সাহিত্যের লহরে ভেসে গেছি সাহিত্যের অকূল দরিয়ায়। ভীষণ আনন্দ পেয়েছি আমিও এই যুগ সন্ধিক্ষণের সাক্ষী হতে পেরে। দীলিপ দাদাভাই কে আমার পক্ষ থেকে এবং আমাদের সাহিত্য পত্রিকা “খেজুরী সৈকতে”এর পক্ষ থেকে অকৃত্রিম অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি ।” (তাঁর ফেসবুকের মন্তব্য থেকে নেওয়া) ।
এতেই সহজে অনুমেয়, শ্রদ্ধেয় দিলীপ রায়কে মানুষ পাগলের মতো ভালবাসেন । তাঁর টানে অসমের করিমগঞ্জ, উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, মালদহ, খেজুরীর সমুদ্র সৈকত, সুন্দরবন, বাকুঁড়ার সিমলাপাল-ওন্দা-সোনামুখী-খাতরা, দুবরাজপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, কাটোয়া, দুই মেদিনীপুর, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া, ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর, দুই ২৪ পরগণা, কলকাতা, ছাড়াও বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ঢাকা থেকে কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকেরা এসেছিলেন । অন্যান্যদের সাথে অনুষ্ঠানে মহিলা নাট্য ব্যক্তিত্ব সুমনা চক্রবর্তীকে (কর্ণধার, সেঁজুতি গ্রুপ) ও প্রকাশক নিগমানন্দ মণ্ডলকে (কর্ণধার, আনন্দ প্রকাশন) সম্বর্ধনা দেওয়া হলো । খবর নিয়ে জানা যায়, দুপুরে ভারী খাবারের ব্যবস্থাপনায় সকলেই খুব খুশী । আরও জানা যায়, পুরো অনুষ্ঠানের খরচ শ্রদ্ধেয় দিলীপ রায় নিজে বহন করেছেন । এজন্য সব খবরের পক্ষ থেকে আমরা সাহিত্যিক দিলীপ রায়কে কুর্নিশ জানাই ।
কথা প্রসঙ্গে শ্রদ্ধেয় দিলীপ রায় জানালেন, “মানুষের ভালবাসাকে তিনি অপরিসীম মর্যাদা দেন । মানুষের ভালবাসা তাঁর পথ চলার ক্ষেত্রে আশীর্বাদ । তাঁর সাহিত্য মানুষকে নিয়ে, সমাজকে নিয়ে । সমাজের উন্নয়ন মানে দেশের উন্নয়ন । তাই তাঁর লেখায় দেশের উন্নয়নের কথা সর্বাগ্রে ।“ অনুষ্ঠানে সর্বক্ষণ পাশে উপস্থিত ছিলেন তাঁর অর্ধাঙ্গিনী বুলু রায় । সমগ্র অনুষ্ঠানটি দিলীপ রায়ের সাথে সঞ্চালনা করলেন বাচিক শিল্পী প্রদীপ কুমার দে । জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে অনুষ্ঠানটির পরিসমাপ্তি ঘটে ।