নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা: —হরিশ্চন্দ্রপুরে শিয়ালের হুক্কা হুয়া। গ্রামবাংলায় এখনো এই আওয়াজ পরিচিত।বিভিন্ন গ্রাম্য এলাকায় রাতের বেলা শিয়ালের ডাক শুনতে পাওয়াটাই স্বাভাবিক।কিন্তু মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় শিয়ালের ডাক যেন এখন আতঙ্ক।শিয়ালের ডাক শুনলেই ঘুম উড়ছে এলাকাবাসীর।কিন্তু কেন এই আতঙ্ক? দুই বছর আগে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার হরদমনগর গ্রামে শিয়ালের হানায় ৪০ জন গ্রামবাসী জখম হয়। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে এলাকায় শিয়াল নিয়ে আতঙ্ক।কিন্তু যত দিন যাচ্ছে লোকালয়ে বাড়ছে শিয়ালের উৎপাত।শুধু রাত নয় দিনের বেলাতেও গ্রামের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে শিয়ালের দল।হাঁস, মুরগি, গরু-ছাগলের উপর আক্রমণ করছে।ভয়ে বাচ্চাদের সব সময় নজরে রাখতে হচ্ছে অভিভাবকদের। রাত হলে এলাকায় এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শিয়ালের দল।কিন্তু কেন এই ভাবে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে শিয়ালের দল। কেন দিনের পর দিন বাড়ছে শিয়ালের উৎপাত। এর পেছনে উঠে এসেছে বিস্ফোরক অভিযোগ। যে অভিযোগের জেরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বন দপ্তরের ভূমিকা। অভিযোগ উঠছে অবৈধ ভাবে হরিশ্চন্দ্রপুরের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। সাফ হয়ে যাচ্ছে বন জঙ্গল। যার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। ক্ষতি-গ্রস্ত হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র। স্বাভাবিক ভাবেই তাই শিয়ালারা ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। কারণ তাদের যে থাকার জায়গা বন জঙ্গল সেই বন জঙ্গল দিনের পর দিন সাফ হয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির অভিযোগ এলাকায় অবৈধ ভাবে গাছ কাটা হচ্ছে। যার পেছনে মদত রয়েছে তৃণমূলের। তৃণমূল পারলে সুন্দরবনটাও বেঁচে দেবে এই ভাষাতেই কটাক্ষের সুর চড়িয়েছে বিজেপি। পাল্টা তৃণমূলের দাবী এরপর বিজেপি নেতাদের জ্বর হলেও সেখানে তৃণমূলের দোষ দেখবে এরা। যদিও বিভিন্ন জায়গায় গাছ কাটা হচ্ছে এই অভিযোগ তুলেছে এলাকার মানুষেরাও। শুধু হরদমনগর নয় হরিশ্চন্দ্রপুর সদর সহ তুলসীহাটা, চন্ডিপুর আরো অন্যান্য এলাকায় একই ভাবে বাড়ছে শিয়ালের উৎপাত। এলাকাবাসীর দাবি বনদপ্তর এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিক। যাতে শিয়াল গুলোকে সঠিক জায়গায় ছেড়ে আসা হয়। অন্যদিকে গাছ কাটার প্রসঙ্গে ভালুকা ফরেস্ট রেঞ্জের আধিকারিক সুদর্শন সরকার জানিয়েছেন, প্রত্যেকদিন নিয়মিত পেট্রোলিং চলে।গাছ কাটা রুখতে সব সময় নজরদারি চলে। অভিযোগ এলেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।