ইন্ডি জোটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর থাকা নিয়ে তার সততার প্রশ্ন তুললেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

0
279

নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিন দিনাজপুরঃ- এবার ঝাড়খন্ডের কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদের ২০০ কোটি টাকা উদ্ধার নিয়ে ইন্ডি জোটে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর থাকা নিয়ে তার সততার প্রশ্ন তুললেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।পাশাপাশি সদ্য সংসদ থেকে বহিষ্কৃত কৃষননগরের সাংসদের পাশে মমতা ব্যানার্জীর কড়া সমালোচনা করেন সুকান্ত।আজ বালুরঘাটে নিজের বাস ভবনে ডাকা এক জরুরি সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার খাড়খন্ডের কংগ্রেস সাংসদ ধীরাজ সাহুর বাড়ির আলমারি থেকে থরে থরে টাকা উদ্ধার নিয়ে বলতে গিয়ে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তার সততা নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, এই মমতা ব্যানার্জী যখন বাংগারুলক্ষনের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছিল তিনি তখন এন ডি এ জোট ছেড়ে চলে এসেছিলেন। সুকান্ত বাবুর প্রশ্ন কংগ্রেস সাংসদের থেকে উদ্ধার হওয়া দুশো লক্ষ টাকা কি এক লক্ষ টাকার থেকে কম ? সে সময় যদি তিনি সততার প্রশ্ন তুলে চোরেদের সংগে থাকব না বলে এন ডিএর জোট ছেড়ে বেড়িয়ে আসলেন। তাহলে আজ কেন তিনি সেই কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, সোনীয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, যারা এই ব্যাপারটি থেকে মানুষের নজর ঘোড়ানোর জন্য মহুয়া মৈত্র নিয়ে চেচামেচি করছেন, ও অনান্য মোদী বিরোধী জোটের নেতাদের সাথে হাত মিলিয়ে গঠিত ইন্ডি জোট থেকে বেড়িয়ে এলেন না ? সে প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন সুকান্ত, তাহলে কি ধরে নেব এক্ষেত্রেও তিনি পার্থ চ্যাটার্জীর মত বলবেন ওই সাংসদ চুরি করেনি, নির্দোষ, তাকে ফাসানো হচ্ছে। পাশাপাশি ই ডি, সি বি আই এর বিরুদ্ধে তৃনমুল নেত্রীর তোলা একাধিকবার দোষীব্যাক্তিদের বাড়িতে গোপনে টাকা রেখে আসার কথাও উল্লেখ করে সুকান্তর অভিযোগ হয়তো তিনি তার ইন্ডি জোট ছেড়ে বেড়িয়ে না আসার ব্যাপারে এক্ষেত্রেও এই একই যুক্তি ও সাফাই দেবেন। এপ্রসংগেই সুকান্ত মজুমদার আজ চাছা ছোলা ভাষায় আই এন ডি আই ( ইন্ডি) জোটকে আক্রমন করে বলেন, এই জোট গড়ে রাহুল গান্ধী বলেছিল তারা নাকি মহব্বতের দোকান খুলেছিল, এরপর সুকান্ত এক এক করে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের আই এন ডি আই এর জোটের কংগ্রেস, আপ, তৃনমুলের ও অনান্য জোট শরিকের বিভিন্ন নেতাদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার হিসাব তুলে ধরে বলেন , এই সব নেতারা জোট গড়ে মহব্বতের নাম করে দেশের নানান সরকারি টাকা চুরি করেছে। সেই কারনে আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে প্রশ্ন করতে চাই তিনি কংগ্রেসের সাংসদ ধীরাজ সাহুর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া এত বিপুল পরিমান টাকা নিয়ে কি বলবেন ? তৃনমুল কি এর পাশে দাঁড়াবে ? না কি তাকে বংগরত্ন পুরষ্কারে ভূষিত করবেন।আমার মধ্যমে জবাব চাইছে সারা বাংলা। আপনাকে এর জবাব দিতেই হবে।রাজ্য বিজেপির সভাপতির আরো অভিযোগ তুলে বলেন, উত্তর না পেলে ধরে নিতে হবে, আপনাদের রাজনীতি করার অর্থ টাকা চুরি করা আর পরিবারের স্বার্থসিদ্ধি করা, তাদের বড়লোক করা ? তাই যদি হয় তবে দেশের মানুষ যেমন কংগ্রেস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তেমনি বাংলার মানুষও একদিন তৃনমুলকে প্রত্যেখ্যান করবে বলে হুংকার ছুড়ে দেন সুকান্ত মজুমদার।

বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে বলতে গিয়ে সুকান্ত বলেন, এমনিতেই এই নিয়ে বাংলার মুখ পুড়িয়েছেন উনি, সারা দেশের কাছে লজ্জায় ফেলেছেন বাংলাকে, তার উপর বড় বড় কথা বলছেন, বহুমুল্যের উপহার ও নানান উপঢৌকন নিয়ে দেশের সুরক্ষা ব্যাবস্থ্যা নিয়ে যিনি ছিনিবিনি খেলেছেন আজ তার মুখে এসব কথা মানায় না,। রাজ্য বিজেপির সভাপতি এরপরেই তৃনমুলনেত্রীকে আক্রমন করে বলেন, দেশের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে একজন মুখ্যমন্ত্রী সেই বহিষ্কৃত প্রাক্তন সাংসদের পাশে দাড়াচ্ছেন তা আর বড় বেশি বাংলার লজ্জা।তিনি আরো বলেন মহুয়া মৈত্রের যদি আদানী নিয়ে এতই অভিযোগ থেকে থাকে তবে তিনি মুর্শিদাবাদে গিয়ে লিচু চাষিদের পাশে দাঁড়িয়ে আদানীদের বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠানো বন্ধ করার আন্দোলনে নামুন না, তাহলেই মহুয়ার হিম্মত বুঝব। উনি তা করবেন না, কেননা উনি জানেন যে তৃনমুল নেত্রী আদানীর কাছ থেকে যা নেবার নিয়ে নিয়েছে।সেখানে কিছু করতে গেলে তাকেই উলটে দল থেকে চলে যেতে হবে।

পাশাপাশি সুকান্তর দাবি এবার কৃষননগর লোকসভা কেন্দ্রে তারা জোরদার লড়াই করে ওই আসনটি তৃনমুলের হাত থেকে ছিনিয়ে আনার জন্য ঝাপাবেন, বলে আজ বালুরঘাটের সাংবাদিক বৈঠকে জানান।পাশাপাশি কালিঘাটের কাকু সুজয় কৃষন ভদ্রের পি জি হাসপাতালের আই সি ইউ এর শিশুদের বেডে থাকা নিয়েও পি জি হাসপাতাল কর্তিপক্ষের সমালোচনা করে বলেন, তারা কার স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে, বাংলার মানুষ আজ তা জানতে চাইছে,, তিনি এও বলেন ইডির উচিত পুরো বিষয়টি নিয়ে আদালতের বিচারকের কাছে যাওয়া। সেখান থেকে নির্দেশ পেয়ে এইমস বা অন্য কোন ভাল হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে তাকে পরীক্ষা করানো উচিত বলে মন্তব্য করেন।এরপাশাপাশি মুর্শিদাবাদে ১০ টি শিশুর মৃত্যু নিয়েও রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থ্যার সমালোচনা করে বলেন রাজ্যে এমনিতেই ডাক্তারের সংখ্যা কম তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোর বিয়েতে পাহাড়ে ১২৮ জন ডাক্তার নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেখানে কি ভাবে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে পাঠানো হয়, যেখানে মুর্শিদাবাদে এত গুলো শিশুর প্রান চলে গেল বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভাবে।

দিল্লি থেকে আজ একদিনের সফরে বালুরঘাটের বাড়িতে আসেন সুকান্ত মজুমদার। তারমধ্যেই দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক সেরে জেলার দুটি বিধানসভার দলীয় কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক সেরে রাতেই মালদা হয়ে কলকাতা ফিরে যাবেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।