জামাই তৃণমূলের নেতা, তাই রাস্তার পাশে সরকারি জায়গাতেই হবে কুয়ো শশুরের হুমকিতে থমকে পুলিশ প্রশাসন, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ।

0
95

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- জামাই তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, তাই সরকারি জায়গায় শ্বশুর বাড়ির কুয়া কাটাচ্ছেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে, পুলিশ প্রশাসনকে ফোন করেও মিলছে না ফল। এমনই অভিযোগ নিয়ে আজ নদিয়ার শান্তিপুর হরিপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নৃসিংহ পুর হালদার পাড়ায় বিক্ষোভ দেখায় বেশ কিছু এলাকাবাসী। তাদের দাবি ওই এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই বর্ষাকালে জলবন্দী হয়ে পড়ে, মানুষজনের চলাচল মুশকিল হয়ে পড়ে কিন্তু ওই এলাকার বাসিন্দা ধীরেন হালদার নিজের জায়গা না হওয়া সত্ত্বেও রাস্তার পাশে থাকা সরকারি জায়গা ব্যবহার করে খুঁড়ছেন কুয়ো, তাও আবার মল ট্যাংকের সাথে সংযোগ রেখে জল পড়ার জন্য। আর এতেই আপত্তি এলাকার সকল মানুষজনের । এলাকাবাসী ভরত বিশ্বাস জানাচ্ছেন, পাড়ার মধ্যে একটা রাস্তা করতে কেটে যায় দীর্ঘদিন সেই রাস্তার পাশে নিকাশি ব্যবস্থাও হতে চলেছে কিন্তু এই কুয়ো আগামী দিন সেই উন্নয়নে বাধাপ্রাপ্ত হবে অপরদিকে এলাকার মানুষজন এই দুর্গন্ধ এবং বর্ষাকালে নিচু এলাকা হওয়ার কারণে জমা জলের সাথে কুয়াতে থাকা জল মিলেমিশে একাকার হবে তাই তাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে কাজ বন্ধ রাখার জন্য। এলাকার সকলে সই সংগ্রহ করে জমা দেয়া হয়েছে পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে সরকারি আধিকারিক এসে বারণ করে গেছে আপাতত কাজ স্থগিত রাখার জন্য কিন্তু তাতেও কর্ণপাত করছেন না তারা শুধুমাত্র জামাই মিঠুন হালদার তৃণমূলের নেতৃত্ব হওয়ার কারণে। তিনি বলেছেন পুলিশ প্রশাসন পঞ্চায়েত সমস্ত কিছু তিনি বুঝে নেবেন তাই দাঁড়িয়ে থাকে কাজ করাচ্ছেন অবৈধ এই নির্মাণ।
এলাকার মালতি হালদার বলেন এভাবে সরকারি জায়গা ক্রমশ সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য হয়ে উঠছে, ফলে রাস্তা নিকাশি ব্যবস্থা আলো এ ধরনের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটছে। তবে সকলের আপত্তি থাকলেও শুধুমাত্র শাসকদল হওয়ার কারণে এই অত্যাচার সাধারণ মানুষের উপর।
অন্যদিকে অভিযুক্ত মিঠুন হালদার স্বীকার করেন তিনি তৃণমূলের নেতৃত্ব, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তার স্ত্রী সোমা হালদার তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী। তবে পুলিশ প্রশাসন এবং পঞ্চায়েত তার অঙ্গুলিহেলনে চলে সে কথা স্বীকার না করলেও তিনি সাফাই গান তার শশুরের পক্ষে তিনি বলেন, আগামী দিনে কোন সরকারি কাজ হলে তখন ভেঙে দেওয়া হবে।
তার শশুর ধীরেন হালদার বলেন পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে তাদের কখনোই বারণ করা হয়নি। যদিও স্থানীয় মানুষজন বারংবার বলছেন আজ সকালেই পঞ্চায়েতের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক এসে বারণ করে গেছেন।
দুপক্ষের মধ্যে যথেষ্ট বাকবিতন্ডা হৈচৈ এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হলেও আসেনি পুলিশ প্রশাসন। স্থানীয় বিজেপির মেম্বার বন্যা বিশ্বাস বলেন তার জামাই মিঠুন হালদারের হুংকার হিসেবেই পুলিশ আসছে না। কিন্তু এলাকার সকলেই বিজেপি করে না , এখানে কোন রাজনৈতিক বিষয় নয়, পরাগতভাবে সকলেই চাইছে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। স্বভাবসিদ্ধ ভাবে প্রতিবাদ করলেই বিজেপি বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেখানে একই দলের প্রধাণ বারণ করা সত্ত্বেও অবৈধ নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে সাধারণ এলাকাবাসীরা হতবাক। তবে এইরকম অত্যাচারের কারণেই আমাকে স্থানীয় মানুষজন জিতিয়েছে। তবে প্রধান অত্যন্ত ভালো মানুষ তিনি এ বিষয়ে আরো বড়সড় পদক্ষেপ নেবে বলেই আমার বিশ্বাস।

যদিও হরিপুর পঞ্চায়েত প্রধান বীরেন মাহাতো বলেন, আপাতত কাজ স্থগিত রাখার কথা বলা হয়েছে। তৃণমূল বিজেপি বড় কথা নয়, মানুষের সমস্যা হলে তা অবশ্যই খতিয়ে দেখবে পঞ্চায়েত। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে এসেছি।
তবে শান্তিপুর থানা সূত্রে জানা গেছে এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে ওই এলাকা থেকে কেউ ফোন করেননি, যদি কেউ করতেন অথবা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানাতেন তাহলে নিশ্চয়ই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছাত।