ভোরবেলা ঘরে ঘরে টহল দিতে দেখা গেল একদল মানুষকে।

0
97

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ – ভোরবেলা ঘরে ঘরে টহল দিতে দেখা গেল একদল মানুষকে। ঘরে ঘরে গিয়ে কি করছে তারা? শুনে ভয় লাগছে? ভয় লাগারই কথা। কিন্তু এই টহল ভয় পাওয়ার টহল নয়। এটা টহল সম্প্রীতির টহল, ঐতিহ্যের টহল এবং উৎসবের টহল।
যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে এই রীতি। বাঁকুড়া জেলাতে দেখা গেল সেই চিত্রই। কি এই রহস্যময় রীতি? যার জন্য সন্ধাবেলায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টহল দিতে হয়? মূলত বাঁকুড়া জেলায় পৌষ মাসে বাড়িতে বাড়িতে টহল দেওয়ার প্রচলন আজও দেখা যায়। বারো মাসের শুধুমাত্র পৌষ মাসে টহল দেওয়া হয়।সন্ধ্যা হতেই দূর থেকে আওয়াজ ভেসে আসে সুন্দর কন্ঠ।সুন্দর সুন্দর কথা। ওই কন্ঠ কানে আসতেই যে যার বাড়ি থেকে পরিবারের সদস্যরা বেরিয়ে পড়ে টহল শোনার জন্য। এই চিত্র দেখা গেল বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের সিমুলিয়া গ্ৰামে।
এই টহল গান মুসলিম সম্প্রদায়ের শা ‌(ফকির) পরিবারের সদস্যরা করেন। বিভিন্ন গ্ৰামের বাড়িতে বাড়িতে এই টহল গান গেয়ে থাকেন সারা পৌষ মাস ধরে। লোকবিশ্বাস এই গান বাড়িতে বাড়িতে হবে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং সেই সেই বাড়ি সৌভাগ্যশালী হয়ে উঠবে।যুগ পরিবর্তন হলেও বাংলা সংস্কৃতির অঙ্গ থেকে এখনো বিলুপ্ত হয়নি এই গান অনেকেই স্থানীয় ভাষায় একে টহল বলে।
কি বুঝতে পারলেন? কেন বলেছিলাম সম্প্রীতির টহল? বাঁকুড়া জেলা রানাছে কানাচে লুকিয়ে আছে এরকম বহু লোকসংস্কৃতিক রীতি নীতি। শা ‌(ফকির) পরিবারের রোগ এবং অকল্যাণ থেকে মুক্তির টহল তারই এক উদাহরণ।