অযোধ্যার রাম মন্দিরের মূল প্রবেশদ্বার ধরম পথেই থাকছে, নদীয়ার কৃষ্ণনগরের এক শিল্পীর অসাধারণ টেরাকোটার কাজ।

0
77

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  আগামী ২২শে জানুয়ারি বহু প্রতীক্ষিত এবং চর্চিত উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন করা হবে। অযোধ্যায় নির্মিত এই রাম মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে ঐ দিন। ইতিমধ্যেই রামনগরীতে জোরদার চলছে তার প্রস্তুতি। চার বেদের সকল শাখার নিয়মিত পাঠ ও যোগ্য মন্দির প্রাঙ্গনে চলছে অবিরাম জানা যায় এই যোগ্য চলবে মন্দির পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই মন্দির নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের পথে। আর এবার অযোধ্যার রাম মন্দিরের বেশ কিছু টেরাকোটার কাজ যাচ্ছে নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে।

জানা যায় নদীয়ার কৃষ্ণনগরে বাগদী পাড়ার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মজুমদার পেশায় টেরাকোটা শিল্পী। তিনি তিনবার পেয়েছেন রাজ্য সরকার থেকে পুরস্কার। শুধু রাজ্যেই নয় রাজ্যের বাইরেও একাধিক শিল্পকর্মের জন্য পেয়েছেন তিনি বিশেষ সম্মান। হরিয়ানা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও তার শিল্প কর্মের জন্য দিয়েছেন তাকে যথাযোগ্য সম্মান। আর তিনি তার কাজের যোগ্যতার বসেই এবার অযোধ্যার রাম মন্দিরের বেশ কিছু টেরাকোটার কাজের বরাত পেলেন।

সূত্রের খবর অযোধ্যার মন্দিরে যেই প্রবেশপথ রয়েছে তার নাম দেওয়া হয়েছে ধরমপথ। সেই ধর্ম পথেই থাকবে ১০০ টি স্তম্ভ যার মধ্যে ২০০ টি রামায়ণের মুরাল বসানো হবে। টেরাকোটার দেওয়ালে যেই কাজ করা হয় সেটিকেই সাধারণত মুড়াল বলা হয়। ২০০ টি মুরালের মধ্যে ১০০ টির বরাত পেয়েছেন কৃষ্ণনগরের এই শিল্পী। মূলত অযোধ্যার রাম মন্দিরের কর্মকর্তারা দেশের বিখ্যাত শিল্পীদের খোঁজ নিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এরপর টেন্ডারের মাধ্যমেই তিনি এই বরাত পান।

তিনি জানান ২০০ খানা মুরাল লাগানো হবে অযোধ্যার রাম মন্দিরের প্রবেশপথে এক একটি পরিমাপ ২০ ফুট লম্বা এবং চওড়ায় ১০ ফুট। সমগ্র রাজ্যের মধ্যে কৃষ্ণনগরের বিশ্বজিৎ মজুমদারই একমাত্র এই বরাত পান। সেপ্টেম্বর মাসে বরাত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মূলত কাজ শুরু হয়ে যায় এই মুরাল বানানোর। কৃষ্ণনগরে বেলডাঙ্গা মতি সুন্দরী তে রয়েছে তার ষ্টুডিও। সেখানেই ১৭ জন কর্মচারী এবং অযোধ্যার রাম মন্দিরে ১৪ জন কর্মচারী আপাতত দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন এই টেরাকোটার মুরালের। কাজ প্রায় শেষের দিকে ইতিমধ্যে দুই চালানে সড়কপথে ট্রাকে করে অযোধ্যার রাম্বুদিরে পাঠানো হয়েছে এই টেরাকোটার কাজ। খুব শীঘ্রই তৃতীয় চালান পাঠানো হবে।

কৃষ্ণনগরের স্বনামধন্য টেরাকোটা শিল্পী বিশ্বজিৎ মজুমদার। মুম্বাই দিল্লি এবং বিভিন্ন রাজ্যে তিনি তার কাজের নিদর্শনের ছাপ ফেলেছেন। গত ২৫ বছর ধরে তিনি এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। পড়াশোনা সম্পন্ন করেই মূলত শখের বসেই এই কাজে আসা যেটি এখন তার পেশায় পরিণত হয়েছে। পরিবারে তেমন কেউ এই পেশার সঙ্গে যুক্ত নয় বলেই জানান শিল্পী।

বহু প্রতীক্ষিত এবং চর্চিত অযোধ্যার রাম মন্দিরে যে কৃষ্ণনগরের ছোঁয়া লাগতে চলেছে আপাতত তাতেই গর্বিত সকল নদীয়াবাসী।