নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- এই মুহূর্তে দেশে সবচেয়ে চর্চিত এবং কাঙ্খিত বিষয় রাম মন্দির উদ্বোধন। আগামী ২২শে জানুয়ারি রাম মন্দিরের উদ্বোধন হওয়ার কথা অযোধ্যায়। পরিষদ যাকে মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা বলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই উদ্বোধনে অংশ নেবেন বলেই জানা গেছে যদিও ইতিমধ্যেই তিনি সরজমিনে খতিয়ে দেখে এসেছেন গোটা বিষয়টি।
সর্বসাধারণের আমন্ত্রণের জন্য বহু প্রাচীন সনাতনী রীতি এবং বর্তমান উত্তরপ্রদেশের নিয়ম অনুযায়ী হলুদ মাখানো চাল অর্থাৎ অক্ষত কিংবা প্রসাদী চাল ভারতের প্রতিটা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার তৎপরতা চলছে, বিজেপি কর্মী সমর্থক সহ আরএসএস এবং অন্যান্য বিভিন্ন সনাতনী ধর্মীয় সংগঠন গুলির পক্ষ থেকে। আমন্ত্রণের প্রধান ভূমিকায় রয়েছেন শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থ ট্রাস্ট কমিটি।
ইতিমধ্যেই অযোধ্যা থেকে তিন কলসি ভর্তি হলুদ চাল ‘অক্ষত’ চলে এসেছে বাংলায়। অযোধ্যায় বিশেষ পুজোর পরে সব রাজ্যে এই চাল পাঠায় রামমন্দির নির্মাণকারী সংগঠন ‘শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্র’। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাংগঠনিক হিসাবে দেশে মোট ৪৫টি রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য এই পরিমান অনেকটাই বেশি। তিনটি আলাদা রাজ্যের ভাগ রয়েছে। উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণবঙ্গের জন্য। উত্তরবঙ্গের জন্য হলুদ চালের কলস সরাসরি শিলিগুড়ি পৌঁছে গিয়েছে। বাকি দুই বঙ্গের জন্য দু’টি কলস জম্মুতাওয়াই এক্সপ্রেসে করে অযোধ্যা থেকে কলকাতায় এসেছিল গত মাসে।
সেখান থেকেই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছেছে । এবার সেই প্রসাদী চাল, শ্রী রামচন্দ্রের ছবি এবং রাম মন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রণ পত্র সাথে নিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছাতে চলেছেন আরএসএস সহ বিজেপির বিভিন্ন কর্মী সমর্থকরা। আজ নদীয়ার ফুলিয়ায় ভারতীয় জনতা দলের সদস্যরা পৌঁছান বাড়িতে বাড়িতে, সাথে ছিলেন বিধায়ক তথা নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক বিজেপি জেলা সভাপতি পার্থসারথি চ্যাটার্জী শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি এবং ওই মন্ডলের সভাপতি চঞ্চল চক্রবর্তী।
তারা জানাচ্ছেন ধর্ম শাস্ত্র অনুযায়ী হিন্দু ধর্মের প্রতিটি পুজোর অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী চাল বা অক্ষত কিংবা প্রসাদী চাল।
পুজোয় অখণ্ড চালের ব্যবহারকে অত্যন্ত কার্যকরী মনে করা হয়। যে কোনও শুভ অনুষ্ঠানে চাল ব্যবহার করা হয়েই থাকে। অনেক সময় লাল, হলুদ, সবুজে রাঙানো চাল ব্যবহার করা হয়। এগুলির মধ্যে হলুদ রঙের সাহায্যে আর্থিক সমস্যা দূর করার নানান উপায়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। দেব-দেবীদের আমন্ত্রণ জানানোর জন্য এই চাল মাঙ্গলিক। এমনকি গৃহে শুভ অনুষ্ঠানের জন্যও এই চাল দিয়েই আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই চালকেই বলা হয় অক্ষত ।
অযোধ্যায় ১০০ কুইন্টাল চাল এনে প্রায় একমাস আগে হয় অক্ষত পূজা। সঙ্গে এক কুইন্টাল কাঁচা হলুদ ও এক কুইন্টাল দেশি ঘি দিয়ে ‘অক্ষত’ তৈরি হয় বলে পরিষদ জানিয়েছে। এর পরে তা পিতলের কলসে ভরে রামলালার সামনে রেখে পুজোও শেষ হয়েছে। শেষে তা দেশের বিভিন্ন রাজ্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীরা তাই পৌঁছে দিচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।
আর এখন সেই সমস্ত এলাকা থেকে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি কিংবা দলীয় নেতৃত্ব সহ বিজেপি আরএসএস কর্মী সমর্থকরা পৌঁছাচ্ছেন বাড়িতে বাড়িতে। ধর্মপ্রাণ নদীয়ার মন্দির নগরী শান্তিপুর ফুলিয়া বিশেষত কবি কৃত্তিবাস ওঝার জন্মস্থান হিসেবে সাধারণ মানুষের মধ্যেও রাম মন্দির উদ্বোধন নিয়ে বাড়তি আবেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে এই প্রসাদী চাল বিতরণ করতে গিয়ে। তবে প্রত্যেকেই তাদের দেবতার সিংহাসনে রাখছেন এই চাল শ্রী রামচন্দ্রের ছবি এবং আমন্ত্রণপত্র।