নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাটঃ- তিন মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ সামগ্রী কেনার টাকা। মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য বরাদ্দ ডিম বন্ধ করল বালুরঘাটের কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র। দ্রুত ডিম ও সব্জির টাকা না পেলে, আগামী ১২ জানুয়ারির পর খাবার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বালুরঘাট সহ জেলার অনান্য অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রের। বিষয়টিকে পুরোপুরি সমর্থন জানিয়েছে সারাবাংলা অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী ও সহায়িকা সমিতি।
তবে, বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানান জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা। তিনি বলেন, এখন নতুন সিস্টেমে পেমেন্ট করা হচ্ছে। আগের সিস্টেম অন্যরকম ছিল। সেখানে বরাদ্দ না হলেও আমরা আগে পেমেন্ট করতে পারতাম। কিন্ত এখন কেন্দ্র সরকার নয়া সিস্টেম চালু করেছে। এই সিস্টেমে আমরা আগেই কাউকে টাকা ছাড়তে পারব না যতক্ষণ বরাদ্দ না আসবে। সেকারণে এই জটিলতা হচ্ছে কয়েকমাস ধরে। এনিয়ে রাজ্যস্তর থেকে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আমরা বিষয়ট গুরুত্ব সহকারে দেখছি। দ্রুত সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় অনুমোদিত অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রের সংখ্যা ৩২৭৯ টি। এরমধ্যে চালু রয়েছে ৩২৩১ টি। বালুরঘাট শহরে ২৭১ এবং গ্রামীন এলাকায় রয়েছে ৪৪৪ টি অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র। বাকিগুলি জেলার অন্য সাতটি ব্লকে রয়েছে। এই কেন্দ্রগুলি থেকে স্থানীয় গর্ভবতী মা ও শিশুদের ডিম সহ খাবার দেওয়া হয় প্রতিদিন। মা ও শিশুর শারিরীক সুস্থতা ও পুষ্টির দিকে নজর রেখেই সরকারি এই প্রকল্প। কিন্ত সঠিক সময়ে ওই খাতে অর্থ না মেলায় সরকারি উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ব্যাঘাত ঘটছে বলেই অভিযোগ।
নাম জানাতে অনিচ্ছুক অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীরা বলেন, সব্জি এবং ডিম তাদের বাইরে দোকান থেকে কিনতে হয়। এক্ষেত্রে তিনমাসের বেশি সময় ধরে কোনো টাকা পাননি তারা। একেকটি সেন্টারের দোকান বাকি হয়ে গিয়েছে ১৫-২০ হাজার টাকা। আর বাকিতে জিনিসপত্র দিতে চাইছে না দোকানদার। এমনি তাদের মাইনেও সামান্য। ফলে নিজেরাও এই বাকি মেটাতে অপারক। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ তাদের সেন্টারে ডিম ও সব্জি দেওয়া বন্ধ রেখেছে। আগামী ১২ তারিখ অর্থাৎ এসপ্তাহে তাদের টাকা প্রদান না হলে প্রতিটি কেন্দ্র একই পথে হাটবে।
সারাবাংলা অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী ও সহায়িকা সমিতির রাজ্য নেত্রী সুচেতা বিশ্বাস বলেন, কয়েকটি কেন্দ্রে ডিম বন্ধ হয়েছে। আমরা মনে করি সঠিক কাজ করেছেন সেন্টারের কর্মী ও সহায়িকারা। আমরা এনিয়ে মঙ্গলবার ডিপিও এবং ডিএমের সঙ্গে কথা বলব। টাকা না দিতে পারলে, ওই বরাদ্দ বন্ধের ঘোষণা করা হোক সরকারিভাবে। নইলে মানুষজন ভাবছেন সেন্টারের দিদিমণিরাই ইচ্ছে করেই খাবার দিচ্ছেন না। এতে অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রের কর্মী সহায়িকাদের হেনস্তার মুখে পরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে। পুরো বিষয়টির জন্য কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য দায়ী বলে জানান ওই নেত্রী।