পাঁশকুড়া-পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- শীত গ্রীষ্ম সব বর্ষা বাঙালির তেলেভাজা ছাড়া চলে না! বর্তমান হেলথ কনসাস যুগেও চপ ভালোবাসে না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল! বর্ষা কিংবা শীতের দিনে চপ সহযোগে সান্ধ্যকালীন টিফিন বাঙালির নস্টালজিয়া। কিন্তু চপ এর ক্ষেত্রে যদি হয় পাঁশকুড়ার চপ! তাহলে তো আর কথাই নেই। সুস্বাদুর জন্য বিখ্যাত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ার চপ। রাজ্যের জেলায় জেলায় দেখা যায় পাঁশকুড়ার চপ নামে চপ দোকান। শুধু রাজ্যে নয়, ভিন রাজ্যেও পাঁশকুড়া চপের কদর রয়েছে। কিন্তু জানেন কি পাঁশকুড়ার একটি দোকানের চপ রায়টার্স থেকে নবান্ন, সব জায়গায় সমাদৃত। নতুন প্রজন্ম কাটলেটে মজে থাকলেও চপ নামক বাংলার এই খাদ্যবস্তুটি কাটলেটকে ভুলিয়ে দেওয়ারও ক্ষমতা রাখে সে বিষয়ে সবাই একমত। আর ভারতে সর্ব প্রথম চপের আবিষ্কার ঘটে মেদিনীপুরের মাটিতেই। অবিভক্ত মেদিনীপুরের পাঁশকুড়াতেই প্রথম তৈরী হয় এই জন প্রিয় পথ খাদ্যটি। সারা বাংলা জুড়ে এই চপ দোকানে সংখ্যা নেহাতই কম নয়। পাঁশকুড়া তেই রয়েছে বহু চাপের দোকান। পাঁশকুড়া পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের গুমাই কালীমন্দির সামনে চপের দোকান বিখ্যাত হয়েছে। পাঁশকুড়া পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জগন্নাথ দণ্ডপাট পাঁশকুড়া হলদিয়া রাজ্য সড়কের পাশেই প্রতিদিন সন্ধে পাঁচটার পর থেকেই চপের দোকান দেন। পায় ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে তিনি এই চপের দোকান চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যা পাঁচটা থেকে রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত চলে দোকান। প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ পিস চপ ভাজা হয় দোকানে। সারা পাঁশকুড়ায় জগন্নাথের চপ নামে বিখ্যাত। তার চপের স্বাদ গ্রহণ করেছেন নেতা মন্ত্রীসহ উচ্চ পর্যায়ের সরকারি আধিকারিকেরা। এমনকি তার চপের যাতায়াত রায়টার্স থেকে নবান্ন পর্যন্ত। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বছর ধরে চপ বিক্রি করা জগন্নাথ দণ্ডপাট জানান, ‘বাড়ির পাশে এক ব্যক্তি রায়টার্সের চাকরি করত, তিনি একবার অফিসে চপ নিয়ে যান। তারপর থেকেই প্রায় প্রতিদিনই চপ যেত রায়টার্সে। বর্তমানে সেই ব্যক্তি নবান্নের কর্মরত সেখানেও মাঝেমাঝে চপ নিয়ে যায়। পাঁশকুড়ার বহু চপ বিক্রেতা তার কাছে আসেন চপ তৈরির উপায় জানার জন্য। চপ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র সহ পাঁশকুড়ার চেয়ারপারসন নন্দকুমার মিশ্রের পাশাপাশি এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী খেয়েছেন। দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির কারণে দাম কিছুটা বাড়াতে হয়েছে। কিন্তু চপের স্বাদের সঙ্গে কোন দিন আপস করেন না।’ বাস রাস্তার পাশে ত্রিপলের ছাউনির নিচে কাঠের আগুনে গরম গরম ভাজা চপ খেতে প্রতিদিন সন্ধ্যে বেলা বহু মানুষ ভিড় করে।