নিজস্ব সংবাদদাতা,বাঁকুড়া: – চাকরী ছেড়ে, একবছর বছর ড্রপ দিয়ে এবং বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ার ধাক্কা সামলে CAT 2023 এ ভারত সেরা রেজাল্ট করেছেন বাঁকুড়ার ছেলে সায়নদ্বীপ চৌধুরী। ৯৯.৯৯ পার্সেন্টাইল অর্থাৎ সেরার সেরা দের মধ্যে ০.০১ শতাংশের মধ্যে রয়েছেন বাঁকুড়ার এই তনয়। দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা গুলির মধ্যে অন্যতম CAT অর্থাৎ কমন অ্যাডমিশন টেস্ট। এই পরীক্ষায় ভাল ফল করলে তবেই সুযোগ মেলে দেশের সেরা আই আই এম কলেজ গুলিতে। ইউ পি এস সি এবং আই আই টির মতই আই আই এম কলেজে MBA করার স্বপ্ন কোটি কোটি যুবক যুবতীর। ২০২২ সালে CAT পরীক্ষায় ৯৯.৪৯ পার্সেন্টাইল থাকার পরও দেশের সেরা কলেজে সুযোগ না পাওয়ায় এক বছর ড্রপ দেওয়ার মত দুঃসাহসিক কাজ করেন সায়নদ্বীপ। শুধু তাই নয় চেন্নাইয়ে ভাল চাকরি ছেড়ে দিয়ে আরও বড় লক্ষ্যকে অর্থাৎ ২০২৩ সালের CAT পরীক্ষাকে নির্দ্বিধায় বেছে নেন তিনি। “বিগার দা রিস্ক, বিগার দি রিওয়ার্ড” বলে ইংরেজিতে একটা কথা আছে যার অর্থ হল যত বড় ঝুঁকি তত বড়ই পুরস্কার। বাঁকুড়ার সায়নদ্বীপের সফলতা যেন এই কথার জ্বলন্ত উদাহরণ।
বাঁকুড়া জেলার DAV স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পাশ করবার পর আই আই টি পল্লেকাড থেকে B.Tech করার সুযোগ পান সায়নদ্বীপ। B.Tech চলাকালীন চতুর্থ এবং ফাইনাল ইয়ারেই শুরু করে দেন CAT এর প্রস্তুতি। প্রস্তুতি এবং দুর্দান্ত ফল করার মধ্যে রয়েছে একটি সংগ্রামের গল্প। এক বছর ড্রপ দিয়ে, হাতে পাওয়া ভাল চাকরী ছেড়ে আবারও পড়াশোনা করার বুকের পাটা থাকেনা অনেকেরই। তবে এই দুঃসাহসিক কাজ করেছেন সায়নদ্বীপ। সায়নদ্বীপ জানান, এই সিদ্ধান্তে সবথেকে বেশি সাপোর্ট করেছেন তার বাবা ডঃ সন্দীপ চৌধুরী। সেপ্টেম্বর মাসে ক্যানসার ধরা পড়ে সায়নদ্বীপের বাবার। চিকিৎসার প্রাথমিক ধাক্কা সামলে আবারও পড়ায় মনোনিবেশ করেন তিনি। তার এই সফলতা বাবাকেই সমর্পন করছেন সায়নদ্বীপ চৌধুরী।
পড়াশোনা ছাড়াও দাবা খেলতে বিশেষ ভালোবাসেন সায়নদ্বীপ চৌধুরী। এছাড়াও ক্রিকেট এবং ফুটবল খেলা দেখতে পছন্দ করেন তিনি। তবে পড়াশোনার কারণে সময় হয়ে ওঠেনা খুব একটা। বাঁকুড়ার ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে সায়নদ্বীপ জানান, ঘড়ি ধরে অনুশীলন করলে যেকোনও কঠিন পরীক্ষাতেই সফল হওয়া সম্ভব। কঠিন পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই।