আমি ও মৃত্যুর অপেক্ষায় বেঁচে আছি : লাজু চৌধুরী।

0
71

এবার ছেড়ে দাও আমাকে —
পৃথিবী আমাকে দাও বিদায়, চোখের জল মুছতে মায়ের আচঁল নেই আমার ।
শীতকালে যখন আবহাওয়া ঠাণ্ডা তখন বাবার হাত ধরে বলতাম এবার নতুন নীল সুয়েটার চাই।
বাবা মা ছেলে মেয়েদের চোখের ভাষা বুঝে খুব সহজে
আবদার গুলো বুঝে নিতো।
আজ আমার অভিমান করার জায়গা নেই, সব খানে শুন্যতা।

না ফেরার দেশে চলে গেছে বাবা মা। ১৯ বছর চলছে মা কে হারিয়েছি আর বাবা প্রায় এক যুগ। বুকের বাম পাশে
বিশাল শুন্যতা,এটা আমার দূর্বলতা ———-
সব দূরত্ব বাড়িয়ে দিলো আমার ছোট্ট বোন। 2020 সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিটি হাসপাতালে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্ট ছিলো।
সারা পৃথিবী জুড়ে মৃত্যুর মিছিল। আমার রাত দিন তখন সমান হয়ে গিয়েছিল ।
আইসিইউর দরজা ধরে দাঁড়িয়ে থাকতাম ভিখারির মত
কখন ভিতরে ঢুকবো। আর আল্লাহ্ কাছে প্রার্থনা করেছি
আমার ছোট্ট বোনটাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও ও
আমার পৃথিবী ওর হাত আমি ছাড়বো না।

কিন্তু মৃত্যু নিশ্চিত শুধু সময়টা অনিশ্চিত ।
মৃত্যুর এলার্ম ঘড়ি বেঁজে ওঠলো শুধু কানের পাশে সিষ্টার বললো আপনার বোনের বি পি ফেল আল্লাহ্ আপনার বোনকে অনুগ্রহ করেছে এখন বিদয়ের পথের ষাত্রী।
আমি মনের অজান্তেই বলে ওঠলাম ইন্নালিল্লাহ ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন।
তখন রাত প্রায় 8.22 মিনিট 24 শে অক্টোবর শনিবার 24-10- 2020

চোখের সামনে দেখতে পেলাম মৃত্যুর মিছিলে সামিল হলো আমার ছোট্ট বোন। মূহুর্ত্তের মাঝে সব শেষ হয়ে গেলো।

ডাক্তার বললো ভেঙ্গে পড়ার কিছু নেই কারন চিরদিন কেউ পাশে থাকেনা। আমরাও এই পথের যাত্রী।
আমার ছোট্ট বোনটা আমার অনুমতি ছাড়াই পৃথিবী থেকে
বিদায় নিলো । আমাকে শুন্য থেকে শুন্যে নামিয়ে দিলো।
এমন তো কথা ছিলোনা। আমরা এক জোড়া পাখি ছিলাম।
একটা পাখি উড়ে গেছে।
সময় তার নিজস্ব গতিতে চলেছে। একটা বিষন্ন সময়ে ডুবে আছি আমি। মনের গহীনে নিস্তব্ধতার আর নির্জনতায় যা চোখে দেখা যায় না।

এখন আমি মৃত্যুর অপেক্ষায় বেঁচে আছি। মৃত্যুর মত এতো স্নিগ্ধতা এতো গভীরতা আমার বোনের পবিত্র মুখুটা দেখে বুঝলাম মৃত্যু অনিবার্য ।

আমি অপেক্ষায় আছি এ পৃথিবী আমাকে ছাড়বে কবে।
কবে এলার্ম ঘড়ি বেঁজে ওঠবে আল্লাহ্ কখন আমাকে অনুগ্রহ করবে। কবে মৃত্যুর বাত্রা আসবে। আমি ফিরে যেতে চাই যেখানে আমার বাবা মা আর আমার ছোট্ট বোন আছে না ফেরার দেশে।

অবশেষে এইটুকুই বলবো আমার ভালো থাকা আমার বেঁছে থাকার অক্সিজেন আমার ছোট্ট বোন ছিলো। আমার কাছে সময় গুলো কবরের লাশের মত ।
এই তো 24 শে অক্টোবর ছোট্ট বোনের মৃত্যু বার্ষিক এক বছর হবে।

আপনারা যারা আমার প্রিয়োজন সবাই আমার বাবা মা
আর আমার ছোট্ট বোন ওদের জন্য দোয়া করবেন না ফেরার দেশে ভালো থাকে।