নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- একের পর এক চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা পিছু ছাড়ছে না শান্তিপুরে। তবে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছিল শহর কেন্দ্রিক এবার শহর পেরিয়ে গ্রামেও সেই ভয়াবহ কালো মেঘ। শান্তিপুর হরিপুর পঞ্চায়েত সংলগ্ন নৃসিংহপুর পুরনো হালদারপাড়ায় ভোররাতে কারোর বাড়িতে না থাকার সুবাদে কারোর বা বাড়িতে থেকেও শেষ রক্ষা হলো না। পরপর চুরি গেল সাত বাড়িতে , চিন্তিত এলাকার মেম্বারসহ প্রধান গোটা পঞ্চায়েত। তবে ইতিমধ্যেই মানুষের দুশ্চিন্তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে শান্তিপুর থানার পুলিশ। বিভিন্ন সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখে রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করছে তারা।
এলাকার এই গণচুরির মধ্যে মৃত নারায়ণ হালদারের বাড়িতে সকলে নিমন্ত্রণে যাওয়ার কারণে আলমারি ভেঙে বেশ কিছু অলংকার এবং নগদ অর্থ চুরি গেলেও তার পরিমাণ বলতে পারছেন না প্রতিবেশীরা, অপর এক প্রতিবেশী গোপাল হালদার জানাচ্ছেন তার বাড়িতে কুড়ি হাজার টাকা এবং একটি সোনার আংটি নিয়ে গেছে, দুষ্কৃতীরা, শিলা হালদার নামে এক বৃদ্ধা জানাচ্ছেন তার বাড়িতেও ২০০০ টাকা এবং সামান্য কিছু অলংকার ছিল ট্রাংকের মধ্যে যা নিয়ে ট্রাঙ্ক টি ফেলে গেছে জঙ্গলে, বিশ্বজিৎ হালদার জানাচ্ছেন তার দুই ভাইয়ের বাড়িতে চুরি হয়েছে সে ক্ষেত্রেও সামান্য কিছু অর্থের সাথে বেশ কিছু সোনা- রুপোর অলংকার ছিলো, তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সুরজিৎ হালদার তিনি জানাচ্ছেন ভোর তিনটে নাগাদ তিনি কাজে বের হন, তখন ওর সব ঠিকঠাক এরপর ঘন্টা দুয়েক অর্থাৎ ভোর পাঁচটা নাগাদ বাড়ির ফোনে জানতে পারেন স্ত্রী মহিলা স্বনির্ভর প্রকল্পের দায়িত্বে থাকার কারণে বাড়িতে থাকা নগদ আশি হাজার টাকা এবং তাদের পারিবারিক সোনা রুপোর অলংকার মিলিয়ে প্রায় চার লক্ষ টাকা গহনা খোয়া গেছে, এমনকি তার মানিব্যাগে রাখা তিন চার হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা, আজ সকালে বাজার করার মতন পরিস্থিতি নেই তার কাছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য বন্যা বিশ্বাস জানাচ্ছেন, বিগত প্রায় ৩০ বছর আগে এ ধরনের চুরির খবর শোনা গেলেও, ইদানিং শান্তিতেই ছিলেন তারা। তবে এর সাথে নিশ্চয়ই এলাকার কেউ যুক্ত আছে তদন্ত আশা পুলিশ কর্মীদের কাছে বিভিন্ন সিসি ক্যামেরা খতিয়ে দেখে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।
এলাকার বাসিন্দা নদীয়া জেলা বিজেপি মহিলা মোর্চার সম্পাদিকা শিলা হালদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন অত্যন্ত দরিদ্র এই এলাকায় সবাই দিন আনেন দিন খান এভাবে সর্বস্ব চুরি হয়ে যাওয়ায় পরিবার গুলি পথে বসেছে । বিগত দিনেও শান্তিপুরে থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোন সূরাহা মেলেনি, তবে পুলিশ প্রশাসন চেষ্টা করলে এ রহস্যের নিশ্চয়ই কিনারা করতে পারবে।
হরিপুর পঞ্চায়েত প্রধান প্রধান বীরেন মাহাতোও বিষয়টিতে শোকার্ত, তিনি বলেন প্রতিদিন হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে তিল তিল করে জমানো অর্থ কিংবা অলংকার এভাবে দুঃসাহসিক চুরিতে সর্বশআন্ত হয়েছে ওই পরিবার গুলি। আমি প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি, যেভাবেই হোক দুষ্কৃতীদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুক পুলিশ প্রশাসন।